
এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব চতুর্দিকে। অনেকক্ষেত্রেই চারটি লোকের কাজ অনেক সহজে এবং কম সময়ে নির্ভুলভাবে করে দিতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। AI-এর প্রভাব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাকরি হারিয়েছেন বহু মানুষ। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন ২০৩০ সালের মধ্যে অটোমেশন লক্ষ লক্ষ হোয়াইট-কলার চাকরিকে বিলুপ্ত করতে পারে।
এবার সেই ধারণাকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চাইছে ChatGPT-র মতো এআই চ্যাটবট প্রস্তুতকারী সংস্থা OpenAI। চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রেও মানুষকে এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর করে তুলতে চাইছে সংস্থা। OpenAI জানিয়েছে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই একটি নতুন AI-পরিচালিত পেশাদারী প্ল্যাটফর্ম চালু করতে চলেছে তারা। আসন্ন প্ল্যাটফর্ম সরাসরি LinkedIn-কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে জানিয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আরও নিখুঁত ভাবে চাকরি খুঁজতে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে তাদের প্রয়োজন মতো কর্মী পেতে সাহায্য করে।
OpenAI-এর অ্যাপ্লিকেশনস সিইও ফিজি সিমো (Fidji Simo) একটি ব্লগ পোস্টে জানিয়েছেন এই কথা। তিনি জানিয়েছেন, “কোম্পানির যা প্রয়োজন এবং কর্মীরা যা দিতে পারেন তার মধ্যে নিখুঁত মিল খুঁজে বের করতে AI ব্যবহার করা।”
এই প্ল্যাটফর্ম শুধু বড় বড় সংস্থার জন্য নয়, বরং ছোট ব্যবসা ও সরকারি সংস্থাগুলির জন্যও তৈরি করা হবে, যারা এআই-সংক্রান্ত প্রতিভা নিয়োগ করতে চান।
এই পদক্ষেপ সরাসরি OpenAI-কে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পেশাদার নেটওয়ার্কিং সাইট LinkedIn-এর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামিয়ে দিচ্ছে। এদিকে মজার বিষয় হল LinkedIn-মাইক্রোসফট পরিচালিত পেশাদার নেটওয়ার্কিং সাইট। আবার OpenAI-এর সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারীও সেই মাইক্রোসফট।
প্রসঙ্গত, OpenAI ধীরে ধীরে ChatGPT-এর বাইরে নিজেদের কার্যক্রম বাড়াচ্ছে। কোম্পানির সিইও স্যাম অল্টম্যান নিশ্চিত করেছেন যে সিমো একাধিক নতুন অ্যাপ্লিকেশন তদারকি করছেন, যার মধ্যে চাকরির এই প্ল্যাটফর্মও রয়েছে। এছাড়া জানা গেছে, সংস্থাটি একটি ওয়েব ব্রাউজার এবং এমনকি একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপ নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, যা তাদের ভোক্তা এবং পেশাদার উভয় ক্ষেত্রেই বিস্তৃত হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছে।
শুধু চাকরির প্ল্যাটফর্মই নয়, OpenAI শ্রমিকদের এআই-নির্ভর অর্থনীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করারও পরিকল্পনা করছে। OpenAI Academy-র মাধ্যমে তারা AI দক্ষতার সার্টিফিকেশন দেবে, যাতে কর্মীরা তাদের এআই-জ্ঞান সম্ভাব্য নিয়োগদাতাদের সামনে তুলে ধরতে পারেন। ২০২৫ সালের শেষের দিকে Walmart-এর সঙ্গে যৌথভাবে একটি পাইলট প্রোগ্রাম চালু হবে। লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে অন্তত ১ কোটি আমেরিকানকে এআই সার্টিফিকেশন প্রদান করা।