Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Rupee Beer: শর্মা ভাইদের ‘রুপি’র হাত ধরে আমেরিকায় ফিরল ভারতীয় বিয়ার

Rupee Beer: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রাফ্ট বিয়ার সেগমেন্টের ৪৬ শতাংশই দখল করে আছে আইপিএ। তবে, তা সাধারণত বেশ কড়া স্বাদের হয়। কিন্তু, শর্মা ভাইদের তৈরি আইপিএ-র স্বাদ ততটা কড়া নয়। তাদের ফ্ল্যাগশিপ বিয়ারের স্বাদ অনেক হালকা,অনেকটাই লেগারের মতো। আসলে, ভারতীয়রাও বিয়ার খেতে গেলে আইপিএ-র থেকে লেগারই বেশি পছন্দ করেন।

Rupee Beer: শর্মা ভাইদের 'রুপি'র হাত ধরে আমেরিকায় ফিরল ভারতীয় বিয়ার
ব্রিউয়ারিতে ভ্যান ও সুমিত শর্মাImage Credit source: Instagram
Follow Us:
| Updated on: Jan 30, 2024 | 9:13 AM

ওয়াশিংটন: আমেরিকা কাঁপাচ্ছে দুই ভারতীয় ভাইয়ের তৈরি তৈরি রুপি বিয়ার। ২০২০-র মার্চে এই সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন যখন ভ্যান এবং সুমিত শর্মা। তাঁরা নিজেরা কখনও ভারতে না এলেও, সংস্থার নাম রেখেছিলেন বাবা-মায়ের দেশ, ভারতের মুদ্রার নাম অনুসারে। বোতলে ছিল ভারতীয় নকশার মোড়ক, হিন্দি লিপিতে লেখা লেবেল। মূলত, পোর্টল্যান্ড এবং মেইন-এলাকার ভারতীয় রেস্তোরাঁগুলির কথা ভেবে তাঁরা তাঁদের বিয়ার তৈরি করেছিলেন। কিন্তু, মার্কিন জনতার মধ্যে রুপি ব্র্যান্ডের ইন্ডিয়া পেল অ্যাল বা আইপিএ-র ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। প্রায়শই মার্কিনিরা তাঁদের ব্রিউয়ারিতে এসে আইপিএ খেতে চান।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রাফ্ট বিয়ার সেগমেন্টের ৪৬ শতাংশই দখল করে আছে আইপিএ। তবে, তা সাধারণত বেশ কড়া স্বাদের হয়। কিন্তু, শর্মা ভাইদের তৈরি আইপিএ-র স্বাদ ততটা কড়া নয়। তাদের ফ্ল্যাগশিপ বিয়ারের স্বাদ অনেক হালকা,অনেকটাই লেগারের মতো। আসলে, ভারতীয়রাও বিয়ার খেতে গেলে আইপিএ-র থেকে লেগারই বেশি পছন্দ করেন। কিংফিশার, বাডওয়াইজার, হাইনিকেন – দেশের সমস্ত জনপ্রিয় বিয়ার ব্র্যান্ডগুলিই ইউরোপীয়-শৈলীর লেগার বিয়ার তৈরি করে থাকে। তাই শর্মা ভাইরা ইচ্ছে করেই, আইপিএ তৈরির সময় যবের পরিবর্তে বাসমতি চাল ব্যবহার করেছেন। যার ফলে তাদের তৈরি আইপিএ-র স্বাদ তেতো নয়, বরং মিষ্টি হয়।

আসলে, নামে ইন্ডিয়া পেল অ্যাল হলেও, এর সঙ্গে ভারতীয় সংস্কৃতি বা স্বাদের কোনও মিল নেই। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকরা, দক্ষিণ এশীয় এলাকায় নিযুক্ত তাদের সেনাদের জন্য এই বিয়ার রফতানি করত। দূর উপনিবেশগুলিতে বিয়ার পাঠানোর ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছিল ইংরেজরা। কয়েক মাসের সমুদ্রযাত্রা এবং এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় নষ্ট হয়ে যেত বিয়ার। অ্যালকোহলের মাত্রা বাড়িয়ে তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা হয়। তাতেও পুরোপুরি কাজ হয়নি। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিয়ারের প্রস্তুতির প্রণালি আরো হালকা এবং উষ্ণ পরিবেশের জন্য উপযোগী করে তোলা হয়। সেই সময় বম্বে বা কলকাতায় পাওয়া যেত এই বিয়ার। আমেরিকাতেও এই বয়ার বানানোর পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়েছিল।

বিজ্ঞাপনেও ভারতীয় ছোঁয়া

ঔপনিবেশিক এই ইতিহাসকেই বিয়ারের ক্যানে ধরতে চেয়েছেন ভ্যান ও সুমিত শর্মা। বিয়ার পানের পাশাপাশি, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের লুঠের ইতিহাসও তাঁরা বিয়ারের মধ্য দিয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন মার্কিন দুনিয়ায়। শর্মা ভাইরা, তাদের রুপি আইপিএ তৈরির ভার দিয়েছিলেন, ‘পাগসলি ব্রিউয়িং প্রজেক্টস ইন্টারন্যশনালে’র অ্যালান পাগসলিকে। তিনি গত শতাব্দীর আটের দশকে দক্ষিণ ইংল্যান্ডের হ্যাম্পশায়ারের কাউন্টির বিখ্যাত রিংউড ব্রিউয়ারিতে কাজ করতেন। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান তিনি রুপি বিয়ার বানানোর ক্ষেত্রে। ইংলিশ আইপিএ বিয়ার তৈরির পদ্ধতি আমেরিকা থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। সেই পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়েই, ৫.৬ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত, মিষ্টি স্বাদের এবং সুগন্ধি বিয়ার তৈরি করেন তিনি।

আমেরিকার পূর্ব উপকূল বরাবর ১৪টি প্রদেশের মদের দোকানগুলিতে এবং ভারতীয় রেস্তোরাঁগুলিতে এখন শর্মা ভাইদের তৈরি বিয়ার ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে, ছয়টি মদের দোকান রয়েছে ‘আনকর্কড ওয়াইন অ্যান্ড স্পিরিটসে’র মালিক অঙ্কিত দেশাইয়ের। তিনি বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়রা এই বিয়ারের সঙ্গে নিজেদের আত্মিক যোগ খুণজে পাচ্ছেন। তাই, তাঁদের দোকানে এসে তারা রুপি ব্র্যান্ডের আইপিএ বিয়ার খুঁজছেন। আইপিএ বাজারে আনার এক মাসের মধ্যেই তাদের সমস্ত প্রি-অর্ডার বিক্রি হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সুমিত শর্মা। সবচেয়ে বেশি চাহিদা দেখা যাচ্ছে ভারতীয় রেস্তোরাঁগুলিতে। তাদের হাত ধরেই আমেরিকায় ফিরল ভারতীয় বিয়ার।