নয়া দিল্লি: গুরুতর আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠল অ্যাপভিত্তিক খাদ্য বিতরণকারী সংস্থা, জোম্যাটো (Zomato) এবং সুইগি (Swiggy)। কম্পিটিশন কমিশন অব ইন্ডিয়া বা সিসিআই-এর তদন্তে জানা গিয়েছে, দুটি সংস্থাই ভারতের প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘন করেছে। তাদের প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত রেস্তোঁরাগুলিকে বাড়তি সুবিধা দিত এই দুই সংস্থা বলে অভিযোগ সিসিআই-এর। তাদের নথি অনুযায়ী, তাদের ‘এক্সক্লুসিভিটি চুক্তি’তে স্বাক্ষর করেছে যে রেস্তোরাঁগুলি, তাদের থেকে কম কমিশন নিয়েছে জোম্যাটো। অন্যদিকে, তাদের প্ল্যাটফর্মে একচেটিয়াভাবে তালিকাভুক্ত হওয়া রেস্তোরাঁগুলি, ব্যবসা বৃদ্ধির নিশ্চয়তা দিয়েছে সুইগি। এর ফলে, বাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির পথে বাধা তৈরি হয়েছে।
২০২২ সালে ‘ন্যাশনাল রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র খাদ্য প্রতিষ্ঠানে সুইগি-জোম্য়াটোর মতো প্ল্যাটফর্মগুলির কুপ্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। তারপরই এই তদন্ত শুরু করেছিল সিসিআই। চলতি বছরের মার্চে তদন্তের ফলাফল তারা জানিয়েছিল সুইগি, জোম্যাটো এবং অভিযোগকারী রেস্তোরাঁ সংস্থাকে। তবে, সিসিআই-এর গোপনীয়তার নিয়ম অনুসারে, এতদিন এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়নি। শুক্রবার (৮ নভেম্বর), সিসিআই-এর তদন্ত শাখার এই রিপোর্ট পর্যালোচনা করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। রয়টার্সের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল সুইগি ও জোম্যাটোর সঙ্গে। কিন্তু, দুই সংস্থাই কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। সিসিআই-ও এই বিষয়ে কোনও প্রশ্নের জবাব দেয়নি।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারতীয়দের খাবার অর্ডার করার সংজ্ঞাই বদলে দিয়েছে এই দুই ফুড ডেলিভারি জায়ান্ট। তবে, সিসিআই-এর তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, দুই সংস্থাই রেস্তোঁরাগুলিকে দামের সমতা বজায় রাখার জন্য চাপ দিয়ে গিয়েছে। এর ফলে, বাজারে প্রতিযোগিতা কমেছে। এর কুপ্রভাব পড়েছে রেস্তোঁরাগুলির উপর। অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তারা কম দামে খাবার দিতে পারেনি।
তবে, সিসিআই এখনও সুইগি এবং জোমাটোর বিরুদ্ধে কোনও শাস্তির আদেশ দেয়নি। বা তাদের এই অনুশীলন বদলানোর নির্দেশ দেয়নি। জানা গিয়েছে, সংস্থাটি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তদন্তের ফলাফল পর্যালোচনা করছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে, তার আগে সুইগি-জোম্যাতোরও সুযোগ থাকছে আত্মপক্ষ সমর্থনের।
এই খবর জানাজানি হওয়ার পরই, জোম্যাটোর স্টকের দর ৩ শতাংশ পড়েছে। সুইগি-র আইপিও ডকুমেন্টেশনে, সংস্থাটি সিসিআই-এর তদন্তকে ‘অভ্যন্তরীণ ঝুঁকি’ হিসেবে স্বীকার করেছে। তারা বলেছে, “প্রতিযোগিতা আইনের কোনও বিধান লঙ্ঘন করলে, তার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে আর্থিক জরিমানা দিতে হতে পারে।”