
বড় হয়ে অনেকেই বিমান চালানোর স্বপ্ন দেখেন। মেঘ আকাশের মধ্যে পাখির মতো উড়তে চান। সোজা কথায় বললে পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু পাইলট হতে গেলে কী নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়? সেটা জানা আছে? ভারতে পাইলট হওয়ার জন্য আনুমানিক খরচ কত পড়ে? রইল এই প্রতিবেদনে।
পাইলট হতে হলে নির্দিষ্ট কিছু শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ এবং লাইসেন্স প্রয়োজন।
ভারতে পাইলট হওয়ার জন্য কী শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন?
প্রথমত, পাইলট হতে হলে সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিকে (১০+২) পদার্থবিজ্ঞান, গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে পাশ করাটা বাধ্যতামূলক। অধিকাংশ বিমান প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ন্যূনতম ৫০% নম্বর চায় এই বিষয়গুলিতে।
প্রাথমিকভাবে শিক্ষানবিশ পাইলট লাইসেন্স (Student Pilot License – SPL) পাওয়ার জন্য কমপক্ষে ১৬ বছর বয়স হতে হবে। বাণিজ্যিক পাইলট লাইসেন্স (Commercial Pilot License – CPL) পাওয়ার জন্য বয়স হতে হবে অন্তত ১৮ বছর।
পাইলট হতে হলে Directorate General of Civil Aviation (DGCA)-এর নির্ধারিত ক্লাস-১ মেডিকেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা এবং দৃঢ় হওয়াটা অত্যন্ত আবশ্যক।
পাইলট হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধাপ রয়েছে –
স্টুডেন্ট পাইলট লাইসেন্স (SPL -Student Pilot License) – এটি প্রশিক্ষণের প্রাথমিক ধাপ।
প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স (PPL -Private Pilot License) – নির্দিষ্ট সময়ের ফ্লাইং আওয়ার্স পূর্ণ করে, তবেই এটি অর্জন করতে হয়।
কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (CPL -Commercial Pilot License) – পেশাগতভাবে পাইলট হিসেবে কাজ করতে হলে CPL প্রয়োজন। CPL-এর জন্য সাধারণত অন্তত ২০০ ঘণ্টা ফ্লাইং অভিজ্ঞতা থাকতেই হয়।
খরচ কেমন?
ভারতে পাইলট প্রশিক্ষণের খরচ তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। একটি প্রাইভেট ফ্লাইং স্কুল থেকে CPL প্রশিক্ষণ নিতে প্রায় ২৫ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। যা নির্ভর করে ইনস্টিটিউট, লোকেশন, ও ফ্লাইট আওয়ারের উপর। সরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অব অ্যারোনটিকস (IGRUA)-এ কিছুটা কম খরচে প্রশিক্ষণ পাওয়া যেতে পারে, তবে ভর্তি হওয়া কঠিন। অত্যন্ত কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়েই তবেই আসে এই সুযোগ।
পাইলট হতে হলে শক্তিশালী শিক্ষাগত ভিত্তি, ভাল শারীরিক সক্ষমতা ও উচ্চ মানসিক দৃঢ়তা প্রয়োজন। প্রশিক্ষণের খরচ বেশি হলেও একটি সফল ক্যারিয়ার তৈরি করা সম্ভব। মনে রাখবেন বিমান ওড়াতে হলে অঙ্ক এবং পদার্থবিদ্যা এই দুটি বিষয়ে তুখোড় হতেই হবে। এই দুটি বিষয়ে ভাল দখল না থাকলে পাইলট হওয়া যায় না। সঙ্গে প্রয়োজন মেডিক্যাল ফিটনেস। সঠিক পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ। এই সবের সমন্বয়ে কোনও ব্যক্তি একজন দক্ষ বাণিজ্যিক পাইলট হয়ে উঠতে পারেন।