SIR in Bengal: মা-মেয়ের বয়সের ফারাক ৭ বছর, হেসে মহিলা বললেন…
Kakdwip: ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, এই ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হিয়ারিংয়ে ডাকা হবে। সঠিক নথি যাচাই করে নিয়মানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।

কাকদ্বীপ: একজনের বয়স ৪৯ বছর। অন্যজনের ৪২ বছর। তাঁরা কি দুই বোন? খসড়া ভোটার তালিকা দেখে প্রথমে এই প্রশ্নই মনে জাগবে। কিন্তু, হোঁচট খেতে হবে তাঁদের সম্পর্কের কথা জেনে। সম্পর্কে তাঁরা মা-মেয়ে। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হতেই এমনই অদ্ভুত তথ্য সামনে এল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে। শুধু মা-মেয়ে নয়, খসড়া ভোটার তালিকায় এমনও দেখা গিয়েছে, বাবা-ছেলের বয়সের ফারাক ১৭ বছর।
খসড়া ভোটার তালিকায় এমনই অসঙ্গতি নজরে আসায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কাকদ্বীপ ব্লকে। জমা পড়া এনুমারেশন ফর্ম খতিয়ে দেখতে গিয়ে ব্লক লেভেল অফিসাররা (বিএলও) একাধিক ক্ষেত্রে বয়সের আশ্চর্যরকম ফারাক দেখতে পান। কোথাও মা এবং মেয়ের বয়সের পার্থক্য মাত্র ৭ বছর। আবার কোথাও বাবা এবং ছেলের বয়সের ব্যবধান মাত্র ১৭ বছর। এই অসঙ্গতিগুলির জেরে খসড়া ভোটার তালিকায় বেশ কিছু নাম সন্দেহজনক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
সূর্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩০ নম্বর বুথের বাসিন্দা সুজাতারানি ঘোষের ক্ষেত্রে এমন একটি ঘটনা সামনে এসেছে। যেখানে তাঁর ও তাঁর মায়ের বয়সের ফারাক মাত্র ৭ বছর। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় সুজাতা দেবীর মা পরমা ঘোষের বয়স ছিল ২৬ বছর। ২০২৫ সালে তাঁর বয়স ৪৯ বছর। সেখানে সুজাতা দেবীর বর্তমান বয়স ৪২ বছর। যার ফলে খসড়া তালিকা থেকে সুজাতা দেবীর নাম বাদ পড়েছে। তিনি অবশ্য প্রয়োজনীয় নথি-সহ ফর্ম ৬ জমা দিয়ে তাঁর নাম পুনরায় অন্তর্ভুক্তির আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন।
মায়ের সঙ্গে তাঁর বয়সের ফারাকের কথা শুনে হেসে ফেলেন সুজাতা দেবী। বলেন, “এটা জেনে মাকে ফোন করেছিলাম। মা বলল, হতে পারে না। তবে মায়ের খুব ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। তখন তো খেলাবাটি নিয়ে খেলাধূলা করত। তবে এত কম বয়সে বিয়ে হয়েছিল কি না, সেটা মায়ের কাছে জানতে হবে।”
আবার স্বামী বিবেকানন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪৩ নম্বর বুথে সুজিত হালদার ও তাঁর ছেলে সুদীপ্ত হালদারের বয়সের ফারাক ১৭ বছর। সুজিতের বয়স ৩৯ বছর। এবং ছেলে সুদীপ্তর বয়স ২২ বছর। এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সুদীপ্তর কথাতেও অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। সুজিত ও সুদীপ্তর নাম খসড়া তালিকায় প্রকাশ হলেও দু’জনকেই সন্দেহজনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সুদীপ্ত বলেন, “২০০২ সালে বাবা-মার নাম ছিল কি না, আমি জানি না।”
ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, এই ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হিয়ারিংয়ে ডাকা হবে। সঠিক নথি যাচাই করে নিয়মানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের বিবেকানন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবকুমার দাস বলেন, “এত অল্প সময়ের মধ্যে এসআইআরের সব নথি খুঁজে পাওয়া যাবে কি না, জানা নেই। ভুয়ো ভোটারদের পাশে তৃণমূল নেই। কিন্তু, এইসব দেখিয়ে বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে আন্দোলন হবে।”
বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলা কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় দাস বলেন, “এবার হিয়ারিং হবে। নথি দেখালে ভোট থাকবে। না হলে বাদ যাবে। ভূতুড়ে ভোটার, রোহিঙ্গা ভোটার, অন্যের বাবাকে বাবা সাজিয়ে ভোটার, এইসব নাম বাদ দিতেই এসআইআর হচ্ছে।”
