কলকাতা: “বিজেপি নৈতিকভাবে বনধ সমর্থন করে না। কিন্তু পশ্চিমবাংলায় এ ছাড়া প্রতিবাদের আর কোনও উপায় নেই। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তো বনধের রাজনীতিকে জনপ্রিয় করেছেন বাংলায়। ” পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগে বিজেপির ১২ ঘণ্টা বাংলা বনধ প্রসঙ্গে বললেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণের সময়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই রবিবারের পুরভোট ও তার পরবর্তী পর্যায়ে বনধ ইস্যুভিত্তিক প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি। দিলীপ ঘোষ বলেন, ” বাংলায় গণতন্ত্রের কোনও অস্তিত্ব নেই। পুলিশ প্রশাসন এক তরফা কাজ করছে। কোর্টও ওদের ওপর নির্ভর করছে। মানুষ ন্যায়ের জন্য কোথায় যাবে? বিজেপি নৈতিকভাবে বনধের সমর্থন করে না। কিন্তু পশ্চিমবাংলায় এছাড়া কোনও রাস্তা থাকে না। তাই এই রাস্তায় আমাদেরকে হাঁটতেই হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সোমবার রাজ্য জুড়ে ১২ ঘণ্টার বনধ করছে বিজেপি। বনধ সফল করতে রাজ্যের সর্বত্র বিজেপি কর্মীরা পথে নেমেছেন। সকাল থেকে বালুরঘাট, তপন থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর সামনে আসছে। রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয়েছে তাঁর। রবিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরেও যায় বিজেপি-র প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিলেন রাজ্য নেতা শিশির বাজোরিয়া, বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। কমিশনে চিঠি দিয়ে ১০৮ পুরসভার ভোটই বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিজেপি।
পুরভোটে ভোট লুঠ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “অনেকের ধারণা ছিল, কোর্টে যাওয়া হয়েছে। কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশনকে পুলিশকে সঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য। তারা কথাও দিয়েছিল শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করাবে। দিন শেষ হতে হতে ভয়ঙ্কর রূপ নিল রাজ্য। বোমা-গুলি-টিয়ার গ্যাস চলেছে, রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে, পুলিশ মার খেয়েছে, সাংবাদিক মার খেয়েছে, বিরোধীরা তো মার খেয়েইছে। যত রকম হিংসা হতে পারে, তা হয়েছে। সার্বিকভাবে যে বিধানসভাগুলোতে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছিল, সেগুলোতে পৌর নির্বাচনে ব্যাপক হিংসা হয়েছে।”
তৃণমূলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ” তৃণমূল হিংসা ছাড়া নির্বাচন জিততে পারবে না, এটা নিশ্চিত। ওরা প্রথম থেকে ঠিক করে নেয় মারপিট করে ভোট লুট করবে।” প্রসঙ্গত, ১২ ঘণ্টার বনধে বাংলাকে সচল রাখতে কড়া পদক্ষেপ করেছে নবান্ন। জোর করে বনধ করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। জেলাশাসক ও মুখ্যসচিবদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ” সরকার তার কাজ করবে বটে। এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৭৫-৭৬ বার বনধ ডেকেছেন। বনধের রাজনীতিকে তিনি জনপ্রিয় করেছিলেন।” মমতার উদ্দেশেই তাঁর পাল্টা জবাব, “এই ধরনের ডিস্টার্বটিভ পলিটিক্স তো আপনিই শুরু করেছিলেন।”
আরও পড়ুন: বিজেপির বাংলা বনধের শুরুতেই অশান্তি বালুরঘাটে, রাজ্য সচল রাখতে কঠোর নবান্নও