নয়াদিল্লি: ১৪ ফেব্রুয়ারি গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন (Goa Assembly Election 2022)। বাকি আর মাত্র এক মাস। প্রতিটি দল নিজের নিজের মতো করে ঘুঁটি সাজাচ্ছে। তৈরি হচ্ছে সৈকত রাজ্যের ভোটের নীল নকশা। এবারের গোয়া নির্বাচন আরও বেশি করে নজর কেড়েছে, তার কারণ তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress), আম আদমি পার্টির (Aam Aadmi Party) মতো দলগুলি এবার সর্বশক্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছে নিজেদের সংগঠন সম্প্রসারণের লক্ষ্যে। জাতীয় রাজনীতিতে দলের অস্তিত্ব প্রমাণ নেমে কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু সব শেষ হয়েও যেন শেষ হয়নি। ভোটের এক মাস আগে ফের একবার কংগ্রেস তৃণমূল কাছাকাছি আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দিল্লিতে গোয়ার কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন রাহুল গান্ধী। আগামী মাসের বিধানসভা ভোটে সৈকত রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হতে পারে ওই বৈঠকে। সূত্র মারফত এমটাই জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, সোমবারই কংগ্রেসের দুই পোড় খাওয়া, দুঁদে রাজনীতিক কে সি বেণুগোপাল এবং পি চিদম্বরমের সঙ্গে দেখা করেছিলেন রাহুল গান্ধী। জানা গিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের রণ কৌশল তৈরি করতেই এই বৈঠক ছিল।
এদিকে গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনের দিন এগিয়ে আসতেই তৃণমূলের দিক থেকেও কংগ্রেসের জন্য সুর বেশ নরম। কয়েক দিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেস গোয়ার শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এক বৃহত্তর জোটের প্রস্তাব দিয়েছে। আর কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েই এই বৃহত্তর জোট গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে তারা। কংগ্রেস শিবিরকে কয়েকদিন আগে পর্যন্তও যে ঝাঁঝালো আক্রমণ করে আসছিল তৃণমূল, সেই সুরটা এখন অনেকটাই বদলেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তৃণমূলের তরফ থেকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, গোয়ার নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গে হাত মেলাতে তাঁরা আগ্রহী। তৃণমূল সাংসদ তথা দলের গোয়ার ইনচার্জ মহুয়া মৈত্র শুক্রবার টুইটারে লেখেন, “নিশ্চিত থাকুন, আমরা (তৃণমূল) গোয়াতে বিজেপিকে হারানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অতীতেও এটি করেছেন। গোয়াতেও তার পুনরাবৃত্তি করার জন্য পিছপা হবে না তৃণমূল।”
শুধু টুইটই করেননি মহুয়া, সেই সঙ্গে গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি, মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টিকে ট্যাগও করেছেন তৃণমূল সাংসদ। পোস্টটিকে ট্যাগ করেছেন কংগ্রেসকেও। উল্লেখ্য, কংগ্রেস ইতিমধ্যেই গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির জোট করেছে। সেই তুলনায় গোয়ার রাজনীতিতে তৃণমূল অনেকটাই নতুন। তৃণমূলও আসন্ন নির্বাচনের জন্য মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির সঙ্গে জোট করে এগোচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে গোয়ায় তৃণমূলের সঙ্গে জোট কংগ্রেসের জন্য মোটেও খারাপ হবে না। তবে গত কয়েক মাসে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য বিজেপি-বিরোধী জোটের নেতৃত্ব কে দেবে, তা নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক বেশ তিক্ত হয়েছে। মহারাষ্ট্রে গিয়ে কংগ্রেসের জোট সঙ্গী শরদ পাওয়ারকে পাশে নিয়ে মমতা বলেছিলেন, “কীসের ইউপিএ? এখন কোনও ইউপিএ নেই? ইউপিএ কী? আমরা একটি শক্তিশালী বিকল্প চাই।” .
বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরমও গত মাসে তৃণমূল কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টিকে আক্রমণ শানিয়ে বলেছিলেন, শুধুমাত্র কংগ্রেসই পারে বিজেপিকে হারাতে। তৃণমূল এবং আম আদমি পার্টি অ-বিজেপি ভোট ভাগাভাগি করছে। এটা বিজেপির উপকারে আসবে কি না, আমি বলতে পারব না।”
উল্লেখ্য, গোয়ার বেশ কয়েকজন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সম্প্রতি তৃণমূলে গিয়ে যোগ দিয়েছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরো। ২০১৭ সালের গোয়া নির্বাচনে ৪০ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেস ১৭ টি আসন জিতে বৃহত্তম দল হয়ে উঠেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অবশ্য সরকার গঠন করেছিল বিজেপি।
আরও পড়ুন : Goa Minister quits BJP: ভোটের আগে বিজেপি ছাড়লেন গোয়ার মন্ত্রী, কংগ্রেসের জার্সি পরার জোর জল্পনা