পানাজি: ভোটের বাদ্যি বেজে গিয়েছে। ২০২২ সালের উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, রাজস্থানের সঙ্গে গোয়াতেও হবে বিধানসভা নির্বাচন। দেশের সব থেকে ছোট রাজ্য জয়ে ইতিমধ্যেই দলগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরীবাল, বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে একাধিকবার গোয়া সফর করেছেন। গোয়ার শ্যামা প্রসাদ মুখার্জ্জি স্টেডিয়ামে বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই অনুষ্ঠানেই “অপারেশন বিজয়”-এ অংশগ্রহণকারী মুক্তি যোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাদের সম্মান জানিয়ে তাদের হাতে স্মারক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। পাশপাশি উন্নয়নের বার্তা দিতে একাধিক প্রকল্প উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গোয়ার বিভিন্ন সরকারি দফতর ও আধিকারিকদের কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে পুরস্কৃত করেন প্রধানমন্ত্রী।
গোয়ার মুক্তি দিবস উপলক্ষে, আজ গোয়াতে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে নৌসেনা বাহিনীর প্যারেড ও বিশেষ সমুদ্র মহড়াতেও যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হলেও গোয়া তখন পর্তুগিজ শাসনের অধীনে ছিল। পর্তুগিজ বাহিনীর হাত থেকে গোয়াকে মুক্ত করতে ভারতীয় সেনা বাহিনী “অপারেশন বিজয়” নামে যে অভিযান চালিয়েছিল, তার সাফল্যকে মনে রাখতেই প্রতিবছর ১৯ ডিসেম্বর দিনটিকে মুক্তি দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই ‘ভারত মাতা কী জয়’ বলে মারাঠি ভাষায় বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “আজ শুধু গোয়ার ৭৫ তম মুক্তি দিবস নয়, লক্ষ লক্ষ গোয়াবাসীর পরিশ্রম ও একাগ্রতা এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটা ভেবে সব থেকে ভাল লাগছে, আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের সঙ্গেই গোয়ার মুক্তি দিবস একসঙ্গে পালিত হচ্ছে।…… গোয়ার স্বাধীনতার জন্য আমাদের অনেক দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে, যদি সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আরও কিছু দিন বেঁচে থাকতেন তবে আর আমাদের এতদিন অপেক্ষা করতে হত না।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেন, “গোয়াতে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে থাকেন, দেশের জন্য এর থেকে ভাল আর কী হতে পারে! ভারতের এই একতার প্রশংসা সারা বিশ্ব করে। কয়েকদিন আগে আমি যখন ইতালির ভ্যাটিকান সিটিতে গিয়ে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে দেশে আসতে বলেছিলাম, তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করে আমাকে দেশের একতার প্রশংসা করেছেন।”
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন বিগত কয়েক বছরে গোয়া সবকিছুতে এগিয়ে গিয়েছে, এমনকি গোয়ার প্রাপ্তবয়স্ক ১০০ শতাংশ নাগরিকের করোনা টিকা নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এরজন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত ও তাঁর নেতৃত্বে কাজ করা সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। বক্তব্য রাখার সময় গোয়ার স্বর্গীয় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিকরের কথাও শোনায় যায় নমোর মুখে। তিনি বলেন, “আজ আমার পরম বন্ধু ও সহকর্মী মনোহর পারিক্করের কথা মনে পড়ছে। ভাবতে ভাল লাগে, যে কাজ তিনি শুরু করেছিলেন, সেই কাজ এখনও সমান গতিতে চলছে।”