নয়া দিল্লি : কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে বুধবার দিল্লিতে বৈঠকে বসেন শিবসেনার সাংসদ সঞ্জয় রাউত। আর সেই বৈঠক শেষে উত্তর প্রদেশ এবং গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন সেনা বিধায়ক। সরাসরি কিছু না বললেও, হালকা আভাস দিয়ে রাখলেন। বললেন, ভোটমুখী ওই দুই রাজ্যে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে কংগ্রেস এবং শিবসেনা।
উল্লেখ্য, আজ প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সোনিয়া গান্ধীর বাসভবনে প্রিয়ঙ্কা ও রাউতের বৈঠক হয়। যদিও জোটের বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। মহারাষ্ট্রে ফিরে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে আলোচনার পরেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সঞ্জয় রাউত।
বৈঠক শেষে রাউত জানিয়েছেন, আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে। আমরা ভাবছি উত্তর প্রদেশ এবং গোয়ায় একসঙ্গে কাজ করব। জাতীয় রাজনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি উত্তর প্রদেশ এবং গোয়া নির্বাচন নিয়েও আমাদের কথা হয়েছে। যদি সম্ভব হয়, কংগ্রেস এবং শিবসেনা উত্তর প্রদেশ ও গোয়ায় একসঙ্গে নির্বাচনে লড়বে।”
উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তর প্রদেশে অখিলেশদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আবার গোয়াতেও নির্বাচনী লড়াইয়ে কংগ্রেসের পাশাপাশি ঝাপিয়ে পড়বে তৃণমূলও। এই পরিস্থিতিতে উত্তর প্রদেশ ও গোয়ার নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে লড়াইয়ে নেমে কি তৃণমূলকে আরও কড়া বার্তা দেওয়ার কথা ভাবছে শিবসেনা নেতৃত্ব?
কিছুদিন আগেই মুম্বই গিয়ে কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে বিরোধীদের এক সমান্তরাল বোঝাপড়ার ডাক দিয়ে এসেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইউপিএকেও অস্বীকার করেছেন তিনি। কিন্তু এই পথে মমতা কতজন বন্ধু পাবেন, তা নিয়ে একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন থেকে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
শিবসেনার তরফে আগেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছিল তাদের দলীয় মুখপত্র সামনায়। মঙ্গলবার রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক শেষে রাউত আরও একবার শিবসেনার অবস্থান স্পষ্ট করলেন। বলেন, “কংগ্রেস ছাড়া কোনও বিরোধী জোট সম্ভব না। বিরোধী জোট নিয়ে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে কথা হয়েছে। জোট তৈরির জন্য রাহুলকে নেতৃত্ব দিতে বলেছি। সামনাতে প্রকাশিত সম্পাদকীয়র অবস্থানে আমরা অনড়। দেশে তিন চারটে বিরোধী জোটের কোনও মানে হয় না।”
তাঁর বক্তব্য, “বিজেপির বিরুদ্ধে একটাই বিরোধী ফ্রন্ট থাকবে। আর কংগ্রেসকে ছাড়া সেই বিরোধী ফ্রন্ট সম্ভব নয়। দুই-তিন ফ্রন্টের কী লাভ? এতে বিজেপিই লাভবান হবে।”
সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, বর্তমানে মমতার সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্কে যে ফাটল তৈরি হয়েছে, তাতে কোনওরকম প্রলেপ লাগানোর চেষ্টা তিনি করছেন কিনা। জবাবে শিবসেনার রাজ্যসভার সাংসদ বলেন, “এ সবের জন্য শরদ পাওয়ার আছেন।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে প্রধান বিরোধী মুখ হিসাবে তুলে ধরার আকুল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর জন্য অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে নতুন করে সমীকরণ তৈরির চেষ্টা করছেন। তবে শিবসেনার মতো হেমন্ত সোরেনের ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাও খুব সম্ভবত পৃথকভাবে তাঁর পাশে থাকছে না। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় কংগ্রেসের পাশেই থাকবে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা।
আরও পড়ুন : Mukul Sangma: ‘সংবিধান মেনেই তৃণমূলে যোগ’, মেঘালয়ের অধ্যক্ষের শো-কজ়ের জবাব সাংমার