কলকাতা : ঝড় বয়ে গিয়েছে আজ কলকাতার উপর দিয়ে। না, আলিপুর আবহাওয়া দফতর থেকে কোনও পূর্বাভাস ছিল না। তবে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট থেকে বহুদিন আগে থেকেই এই সবুজ ঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া ছিল। ফল ঘোষণার দিন হলও তাই। শুরু থেকেই ঝোড়ো ব্যাটিং তৃণমূলের। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূল ফের একবার কলকাতা পুরনিগমের বোর্ড গড়তে চলেছে। এরই মধ্যে রাজ্যের শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের একগুচ্ছ অভিযোগ তুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
অধীর চৌধুরী বলেন, “আজ কলকাতা পুরনিগম নির্বাচনের ফল প্রকাশ হল। তৃণমূল ক্ষমতায় এল। সবাই জানতাম আমরা যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসবে। কারণ, কয়েক মাসেই আগেই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূল বিধানসভা ভোটে জিতে এসেছে। তৃণমূল কলকাতায় ক্ষমতায় আসবে, এটা নিশ্চয়ই তৃণমূলও জানত, আমরাও জানতাম। কিন্তু আমরা ভরসা রাখতে চেয়েছিলাম পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এবং তৃণমূল দলের দেওয়া প্রতিশ্রুতির উপর। প্রতিশ্রুতি ছিল, বাংলায় নির্বাচনে সন্ত্রাস হবে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলেছিলেন। নির্বিবাদে, নিঃসঙ্কোচে মানুষ ভোট দেবেন। কিন্তু আমরা দেখলাম, সেই আশা প্রত্যাশাকে ভুলুণ্ঠিত করে, তৃণমূল নিজেদের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় কলকাতার প্রশাসনকে, কলকাতার নির্বাচন কমিশনারকে নিজেদের মতো করে পরিচালনা করে সেই সন্ত্রাস, সেই ছাপ্পা ভোট, সেই মারামারি, গ্রেফতার, রক্তারক্তি, বোমাবাজি, সবকিছু দেখলেন বাংলার মানুষ। এটার কি কোনও দরকার ছিল? সবাই জানত আপনি জিতবেন।”
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আরও বলেন, “আগেই বলেছি, আমরা লড়েছিলাম আমাদের অস্তিত্বকে রক্ষা করার জন্য। ১৪৪ টি আসনের মধ্যে ১২১ টি আসনে আমরা প্রার্থী দিতে পেরেছিলাম। তার মধ্যে আমরা ৫০-৬০ টা আসনে লড়াই করতে চেয়েছিলাম। আশা করেছিলাম, ১০-১২ টা আসনে আমরা জিতব। যদি বাংলায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হত, আজও দায়িত্ব নিয়ে বলছি, ১০-১২ টা আসনে জেতার প্রবল সম্ভাবনা আমাদের ছিল। আর সেই কারণেই আমরা ১৫ টি আসনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছি। এত সন্ত্রাসের মধ্যেও। ভোটের পরেও আমাদের উপর অত্যাচার হয়েছে। কংগ্রেসের প্রার্থীকে নগ্ন করে হামলা। বাংলার দিদি কিছু দেখছেন না আপনি? আমাদের দুর্ভাগ্য, ক্ষমতার দম্ভে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মা মাটি মানুষের সরকারের চরিত্রটাই ভুলে গিয়েছেন।” তাঁর বক্তব্য, আজকের ফলাফল থেকে এটা স্পষ্ট যে বিজেপি বাংলায় দ্রুত ক্ষয় হচ্ছে।