কলকাতা: কতটা ‘অবাধ ও শান্তিপূর্ণ’ হয়েছে ভোট? তা প্রমাণ করবে প্রত্যেক বুথের সিসিটিভি ফুটেজই! এবার ১৪৪ টি ওয়ার্ডের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার দাবি তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে বিজেপি। আগামী ২৩ তারিখ তাঁরা হাইকোর্টে যেতে পারেন, তেমনটাই ইঙ্গিত দিলেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার।
জয়প্রকাশ মজুমদার স্পষ্ট আদালতে যাওয়ারও আভাস দিয়ে রাখলেন। তিনি বলেন, “পুরভোটটাকেই বাতিলের দাবি করেছি। ২৩ তারিখে হাইকোর্টে আমরা গোটা বিষয়টি জানাব। হাইকোর্ট প্রত্যেকটি বুথে সিসিটিভি লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিল। আমরা ৬ হাজার বুথের সিসিটিভি ফুটেজের ফরেনসিক অডিট চাইব। তাহলেই দুধ কা দুধ, পানি কা পানি হয়ে যাবে। নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য আর টিকবে না।”
নির্বাচন কমিশনের তরফে দাবি করা হচ্ছে কোথাও ভোটে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। কোনও বুথে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়নি। বিরোধীদের দাবি নস্যাৎ করে জানায় কমিশন। পুনর্নির্বাচনের প্রয়োজন নেই, দাবি কমিশনের।
নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে বিরোধীদের দরবার সত্ত্বেও পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনা কম। বিজেপি ১৪৪টি ওয়ার্ডেই ফের ভোট চেয়েছে। বাম ও কংগ্রেসও পুনর্নির্বাচন চেয়েছে একগুচ্ছ ওয়ার্ডে। সেসব অভিযোগ খতিয়ে দেখছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে সূত্রের খবর, কোনও ওয়ার্ডেই সম্ভবত ফের ভোট নেওয়া হবে না। কমিশনের বক্তব্য, বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া পুরভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। ৪৫৩টি অভিযোগ জমা পড়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১৯৫ জনকে। বোমাবাজি হয়েছে দুই জায়গায়। সিসিটিভি নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কমিশন। তাদের বক্তব্য, কোথাও সিসিটিভি অচল ছিল না।
এ প্রসঙ্গে, বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, “পুনর্নির্বাচনের প্রথম থেকেই দরকার হবে না, সেই মতোই নির্ঘণ্ট তৈরি হয়েছিল। গতকাল নির্বাচন হয়েছে। আগামিকাল ফল ঘোষণা। রাত পর্যন্ত রিপোর্ট এসেছে। পুনর্নির্বাচন হবেটা কবে? নির্ঘণ্ট দেখেই বোঝা গিয়েছিল, নির্বাচন কমিশন রাজ্যের নির্দেশ মেনে পুনর্নির্বাচনের সময় রাখেনি। ইভিএম ভাঙা, মাটিতে পড়েছিল। সব বুথ ছে়ড়ে দিলেও, ওই বুথটাকেই যদি ধরি, তাহলে ওই বুথের গণনা কীভাবে হবে? সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য কী থাকবে?”
প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরভোটকে কেন্দ্র করে রবিবার দিনভর উত্তপ্ত থাকে শহর কলকাতা। শিয়ালদায় বোমাবাজিতে আহত হন তিন জন। পঁয়তাল্লিশ নম্বর ওয়ার্ডে, বুথের ভিতরেই, বেঁধে গেল, তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি-র হাতাহাতি। অশান্তির খণ্ডচিত্র দিনভর ধরা থাকে ক্যামেরায়। কিন্তু শাসকদলের কথায় ভোট হল ‘অবাধ শান্তিপূর্ণ’।
জাগো বাংলায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে রামধনু জোটে তত্ত্ব খাঁড়া করা হয়েছে। আর কলকাতায় ‘অবাধ ও শান্তিপূর্ণ’ ভোট করিয়ে ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ হয়েছে পুলিশ। জাগো বাংলায় উল্লেখ করা হয়েছে, সেই ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কথা। ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটে অনিয়মের অভিযোগে রবিবার প্রথমে রাস্তায় বসে পড়েন বাম ও কংগ্রেস কর্মীরা। কিছুক্ষণ পর বড়তলা থানার সামনে বিক্ষোভে যোগ দেয় বিজেপিও।
জাগো বাংলায় এই প্রতিবাদের প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে। বলা হয়েছে, “রামধনু জোটকেই রবিবার ক্যামেরায় সামনে প্রমাণ করল সিপিএম-বিজেপি-কংগ্রেস। রবিবার দুপুরে যখন বোঝাই যাচ্ছিল বিরোধীরা ১০-০ গোল খেয়ে গিয়েছে, তখন ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম-বিজেপি ও কংগ্রেস কর্মীরা ভোটের ময়দান ছেড়ে চলে আসেন বড়তলা থানা ঘেরাও করতে… অভূতপূর্ব দৃশ্য।”
আরও পড়ুন: Kolkata municipal corporation election 2021: শুভেন্দুর ‘গায়ে হাত’ পুলিশের! কড়া নিন্দা জেপি নাড্ডার