কলকাতা: রত্ন চট্টোপাধ্যায়ের এলাকা, ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের পতাকা ছিঁড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ। ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা। অভিযোগের তির বামপন্থীদের দিকেই।
বৃহস্পতিবার সকালে বেহালা ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে পল্লিশ্রী পল্লিতে উত্তেজনা ছড়ায়। সকালে তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের দলীয় পতাকা রাস্তায় ছেড়া অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। অভিযোগ, তার মধ্যে বেশ কিছু পতাকা পুড়িয়েও দেওয়া হয়। কলকাতা কর্পোরেশনের বেহালা ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের পল্লিশ্রী পল্লিতে এই নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের হোর্ডিং ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে।
রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা একটা শান্তিপূর্ণ ভোট করছি। এখানে বিজেপি, সিপিএম কিংবা তৃণমূল যাই-ই বলুন, কেউ আমরা কোনও প্রার্থীই কারোর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছি না। একে অপরের দলের স্ট্যান্ড পয়েন্ট তুলে ধরছি। দলের সংস্কৃতিতে এটা আসা উচিত নয়। মানুষ ভোট দেবেন। দলের পতাকা পুড়িয়ে তো আর ভোট পাওয়া যাবে না। আমাদের এখানে ক্ষমতা বেশি, সারা বাংলায় ক্ষমতায় বেশি, কিন্তু আমরা তো এখানে এমনটা করছি না। বামপন্থীরা এই কাজটা করেছেন। আমি অনুরোধ করব বামপন্থী প্রার্থীকে, তাঁর দলের কর্মীরা যেন এই কাজ না করেন। আমি কমিশনে এখনও জানাইনি। তবে থানায় একটা ডায়েরি করব।”
কলকাতা পুরভোটকে সামনে রেখে দিনরাত এক করে খাটছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। ৭ মাস আগেই বিধানসভা ভোটে জিতে বিধায়ক হয়েছেন তিনি। এবার এই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী। ২০১৫-র পুরভোটে এই ওয়ার্ড থেকে জিতেছিলেন রত্নার ‘প্রাক্তন’ স্বামী ও প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।
তবে এলাকায় এখন নিজের ‘ক্যারিশ্মা’ দেখাচ্ছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। প্রচারে একেবারে মধ্যগগনে তিনি। তাঁর প্রত্যয়ী বাক্য, “শোভনবাবু চলে যাওয়ার পর এখন সব দায়িত্ব আমার কাঁধেই।” বলাই বাহুল্য, গত বছর ছয়েক ওয়ার্ডের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন রত্না নিজেই।
১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী রঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, “আমি সকালেই অভিযোগটা শুনেছি। আমি এলাকায় গিয়েছিলাম। আমার কর্মীদের সঙ্গে কথাও বলেছি। আমাদের দলের কোনও কর্মীই এই কাজ করেননি। আমরা এই ধরনের সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী নই। তবে কী হয়েছে, আরও বিশদে খোঁজ নেব।”
এই ওয়ার্ডটিকে তৃণমূলের গড় বলা যেতে পারে। ২০০৫ সাল থেকেই এই দখলটি তৃণমূলের দখলে। তত্কালীন সময়ে কাউন্সিলর ছিলেন শোভা ঘোষ। ২০১০ সালে কাউন্সিলর হন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তারপর ২০১৫ সালেও দ্বিতীয় বারের কাউন্সিলর তিনি। টানা এই ওয়ার্ডে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখেছে ঘাসফুল শিবির। শোভন চট্টোপাধ্যায় বেহালা বাড়ি ছাড়ার পর থেকে ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড দেখছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভা ভোটে শোভনের বেহালা পূর্বে রত্নাকে প্রার্থী করে তৃণমূল। জয়ী হন। এরপর কলকাতা পুরসভা নির্বাচনেও এই ওয়ার্ডে তাঁকে প্রার্থী করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।