কলকাতা: পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিজেপির মিছিল। সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেনে। কলকাতা পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সোমবার পথে নামে বিজেপি। দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করতেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার অভিযোগ ওঠে। পাল্টা একের পর এক বিজেপি কর্মীকে চ্যাংদোলা করে পুলিশের তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠছে। পুলিশের বক্তব্য, এই মিছিলের কোনওরকম অনুমোদন ছিল না। তাই একের পর এক বিজেপি নেতাকে আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। প্রিজন ভ্যানের সংখ্যাও বাড়ানো হয়। পাশাপাশি আটকে দেওয়া হয় মিছিল।
এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “রবিবার কলকাতা পুরভোটে আমরা যা দেখেছি তা তো হিমশৈলের চূড়া মাত্র। এরপরও আরও অনেক কিছু হয়েছে। যা বুঝিয়ে দিয়েছে এ রাজ্যে গণতন্ত্র নেই। না হলে এভাবে মিছিল কেউ রুদ্ধ করে! ফ্যাসিস্ট শাসকের মনোবৃত্তিই এই ঘটনা প্রমাণ করছে। এই রাজ্যে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা করার দরকার সবটাই করব। তা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হতে পারে, আইনগত পদ্ধতিতে হতে পারে। আমরা চুপ করে বসে থাকব না।”
২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী শশী গণের অভিযোগ, “আমাদের অনুমতি ছিল কিছুটা দূর অবধি মিছিল করার। আমরা তাই বেরোই। এরপরই পুলিশ আক্রমণ করল আমাদের উপর। ধরপাকড়, মারামারি, ধাক্কাধাক্কি। আমাকে ধরে গাড়িতে ওঠানোর সময় আমাকে পুলিশ ঘুঁষি মারে মাথায়। চোখেও লেগেছে। একটাও মহিলা পুলিশ নেই। ছেলে পুলিশ মেরেছে। এই অবস্থা দিদির! পুলিশকে তৃণমূলে নিয়ে গিয়ে রাখুন। পুলিশ তো তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে।” যদিও পুলিশের তরফে দাবি, পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশ সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে রয়েছে।
রবিবারের ভোটে সন্ত্রাস ও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বিজেপির এদিনের প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল। এদিকে পুলিশের দাবি, তারা এই মিছিলের জন্য কোনওরকম অনুমতি দেয়নি। ফলে ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেন থেকে মিছিল বের হতেই তা আটকায় পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের সঙ্গে কয়েকজন বিজেপি নেতা কথা বলেন। কিন্তু পুলিশ জানিয়ে দেয়, এ মিছিল করতে দেওয়া হবে না। তারপরই বিজেপি কর্মী সমর্থকরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।
রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধানসভা ভোটে মানিকতলার প্রার্থী কল্যাণ চৌবে-সহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। কলকাতা পুরভোটে বিভিন্ন ওয়ার্ডে যাঁরা প্রার্থী হয়েছিলেন, তাঁরাও এদিনের কর্মসূচিতে ছিলেন। তাঁদেরও টেনে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় বিজেপির এক মহিলা কর্মী অসুস্থও হয়ে পড়েন। কিন্তু পুলিশও অনড় থাকে। প্রথমে একটি প্রিজন ভ্যান আনা হলেও পরে আরও বেশ কয়েকটি প্রিজন ভ্যান সেখানে আনা হয় বলে অভিযোগ।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা দেবাশিস কুমার বলেন, “জনগণ থেকে যারা বিচ্ছিন্ন তারা রাস্তায় নেমে এ ধরনের অসভ্যতামি করবেই। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মানুষের উপর বিশ্বাস রাখতে হয়। মানুষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। ওদের কোনও লোকজন নেই। ভোটের আগে এক মাস ধরে প্রস্তুতি চলেছে, কোথাও কেউ নেই। বিধানসভা ভোটে পয়সা ছড়িয়ে কিছু লোক পেয়েছিল, এবার তাও নেই। লোক নেই, তাই এইসব নাটক করছে।”
আরও পড়ুন: KMC Election 2021 LIVE Updates: রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ