কলকাতা: ৭২ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তৃণমূল তাতে রাজি হয়নি। এই ওয়ার্ডে প্রার্থী করে সুব্রত বক্সীর ভাই সন্দীপরঞ্জন বক্সীকে। অভিযোগ, সেই রাগ থেকেই নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটের ময়দানে লড়তে নামে সচ্চিদানন্দ। যদিও ভোটের ফলপ্রকাশের পর দেখা গেল হারতে হয়েছে তাঁকে। জয় হয়েছে সন্দীপ বক্সীর। তবে প্রচারের ময়দানে এক ছটাকও জমি ছাড়েননি সচ্চিদানন্দ। তাঁর অনুগামীরা বলছেন, দাদা লড়াই করেছিলেন। এটাই অনুপ্রেরণা।
এদিন ভোটে জয়ের পর সন্দীপ বক্সী বলেন, “ধন্যবাদ জানাব আমার ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের মা মাটি মানুষকে। যারা আমাকে এই জয় উপহার দিয়েছেন। এরপরই ধন্যবাদ জানাব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যাঁর নেতৃত্বে আমরা কাজ করি। প্রথম দিন থেকে ওনার আশীর্বাদ পেয়েছি, জানতাম জয়ী হবই। আমি ১৭৩৭ ভোটে জয়ী হয়েছি।”
এ কথার রেশ ধরেই উঠে আসে নির্দল-প্রতিপক্ষের প্রসঙ্গও। সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় কি ভোটে বেগ দিল তৃণমূলের রাজ্য সভাপতির ভাইকে? সন্দীপ বক্সীর প্রতিক্রিয়া, “আমার কোনও দিনই মনে হয়নি উনি পথের কাঁটা। কারণ, উনি ছিলেন ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে। ওখানে হেরে ৭২ নম্বরে এসেছিলেন। যেহেতু এখানে বাড়ি তাই লড়তে এসেছিলেন। কোনও মানুষ ওনাকে পছন্দ করত না। দ্বিতীয়ত আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী। আমাদের পথের কাঁটা বলে কেউ নেই। আমি জানি আগামী ৪০ বছর এখানে তৃণমূল কংগ্রেস রাজত্ব করবে। এই ভবানীপুর যাঁর নেতৃত্বে আমরা লড়ছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এই ভবানীপুর তৃণমূল কংগ্রেসেরই গড়। এখানে তৃণমূল কংগ্রেস ছিল, আছে, থাকবে।”
নির্দল প্রার্থী হিসাবে দেওয়া মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে দল থেকে বহিষ্কার করার বার্তা দিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরও দু’জন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেননি। একজন রাজ্যের প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়, অন্যজন সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই তাঁদের বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করে দল।
৭২ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সাল থেকে তিনি আর তৃণমূলের সদস্য নন। তাঁর সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করা হয়নি। সুতরাং বহিষ্কারের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরও পিছু পা হতে চাননি তিনি। নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে ফিরহাদ হাকিম, দেবাশিস কুমার-সহ তৃণমূলের অনেককেই জানিয়েছিলেন তিনি।
সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় এই বহিষ্কার প্রসঙ্গে দাবি করেছিলেন, তিনি যখন তৃণমূলেই নেই, তখন বহিষ্কার করার কোনও প্রশ্নও আসে না। তাঁর দাবি, নিজেকে তিনি কখনই তৃণমূলের নেতা হিসেবে উল্লেখ করেন না, সমর্থক হিসেবেই উল্লেখ করেন। তাই তাঁর কথায়, বহিষ্কার করার বিষয়টাই অবাস্তব। সেই নির্দল প্রার্থীকে এবার হারতে হল তৃণমূল প্রার্থীর কাছে।