নয়া দিল্লি: কলকাতা পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। কিন্তু সোমবার সেই আবেদন ফিরিয়ে দিল সর্বোচ্চ আদালত। বরং সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হোক বিজেপি। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘হাইকোর্টের কাছে বিষয়টি আপনারা জানান।’
বিজেপির হয়ে এদিন সুপ্রিম কোর্টে হাজির হন কৌঁসুলি মনিন্দর সিং। তাঁকে বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও ও বিচারপতি বিআর গাভইয়ের বেঞ্চ জানায়, “আমরা সম্পূর্ণ সম্মানের সঙ্গেই জানাচ্ছি কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়ে আমরা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। হাইকোর্ট এই পরিস্থিতি বোঝার জন্য আরও বেশি ভাল জায়গা।”
পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেন। সেখানে বলা হয়, বিজেপির চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর থেকে নানা রকম হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সুকান্তের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন এই হুমকি দিচ্ছেন। এমনকী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার জন্যও ভয় দেখানো হয়েছে।
সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য ছিল, এই ধরনের পরিস্থিতিতে কোনওভাবেই নিরপেক্ষ স্বচ্ছ ভোটপ্রক্রিয়া সম্ভব নয়। তাই কেন্দ্রীয়বাহিনী মোতায়েন করে কলকাতা পুরভোট চেয়েছিল বিজেপি। সেই আর্জি নিয়েই সুপ্রিমকোর্টে যায়। কিন্তু সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, তারা চায় এই বিষয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানানো হোক।
এর আগে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার প্রসঙ্গ তুলে ধরে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর আর্জি জানান বিজেপি নেতারা। রাজ্যপাল বিজেপি প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় বার্তা দেবেন তিনি। এবার শীর্ষ আদালতেও একই আর্জি জানিয়েছিল বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।
এদিকে কমিশনকে ইতিমধ্যেই কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে, রাজ্য সরকারের শাখা হিসাবে কাজ করলে চলবে না, তাদের কথা মতো চললেও হবে না। এমনই কড়া ভাষায় সর্তক করে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল।
যদিও সম্প্রতি নজরুল মঞ্চে এক অনুষ্ঠানে কলকাতার নগরপাল সৌমেন মিত্র বলেন, ভোট করানোর জন্য কলকাতা পুলিশের হাতে পর্যাপ্ত বাহিনী রয়েছে। এই নির্বাচনে নিরাপত্তার যাতে কোনও ঘাটতি না হয়, সেই সমস্ত বিষয়ই দেখা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী বাহিনীও তৈরি করা হচ্ছে। নগরপাল সৌমেন মিত্র জানান, আসন্ন কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে নিরাপত্তার জন্য কলকাতা পুলিশের সঙ্গে থাকবে রাজ্য পুলিশও। তবে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে রাজ্য পুলিশ কতটা থাকবে সেই বিষয়টিও নির্বাচন কমিশনারের অনুমোদনের উপর নির্ভর করছে।
অন্যদিকে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে অনড়। বিজেপির রাজ্য নেতা বিশ্বপ্রিয় চৌধুরী, শিশির বাজোরিয়া গিয়েছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনে। গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। সূত্রের খবর, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে বিজেপি দাবি করেছে, ১৪৪টি ওয়ার্ডের জন্য ১০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক।