উত্তর ২৪ পরগনা: বুথে ঢুকে ইভিএম ‘ভাঙচুর’! ভাঙচুর করলেন খোদ বিজেপি প্রার্থী। বুথে ঢুকে আছড়ে মেরে ইভিএম ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠল বিজেপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে। বসিরহাট ও ভাটপাড়ার ঘটনা। বসিরহাটের ঘটনায় গ্রেফতার বিজেপি প্রার্থী।
ঘটনা ১. বসরিহাট
বসিরহাটের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২৪১ নম্বর বুথের ঘটনা। এই ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সুজয় চন্দ্র। অভিযোগ, ২৪১ নম্বর বুথে আচমকাই লোকজন নিয়ে ঢুকে পড়েন বিজেপি প্রার্থী সুজয় চন্দ্র। নির্বাচনী কর্মীরা তখন বুথের মধ্যেই ছিলেন। প্রিসাইডিং অফিসারের সামনেই বুথে ঢুকে ইভিএম তুলে আছাড় মারেন বিজেপি প্রার্থী। ভেঙে গুড়িয়ে যায় ইভিএম। ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, ছাপ্পা ভোট চলছিল অবাধে। আর সেই কারণেই তিনি ইভিএম ভেঙেছেন। ঘটনার পর বেপরোয়াভাবে বললেন বিজেপি প্রার্থী। পরে পুলিশ বিজেপি প্রার্থী সুজয় চন্দ্রকে তাঁর বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করে।
ঘটনা ২. ভাটপাড়া
ভাটপাড়ার ওয়ার্ড নম্বর ৯, ৪৩ নম্বর বুথেও ঘটে একই ঘটনা। অভিযোগ, ভোট চলাকালীন আচমকাই বিজেপির এজেন্ট ঢুকে গিয়ে ইভিএমে ভাঙচুর চালান। আছাড় মেরে ভেঙে ফেলা হয় ইভিএম। ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যান বুথের ভিতর থাকা অফিসাররাও। ভাঙচুরের পর বুথের অন্য দরজা দিয়েই পালিয়ে যান তিনি। ভোট দিতে আসা এক জন তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ঘটনায় প্রিসাইডিং অফিসার বলেন, “ভোটের ১ ঘণ্টা হয়ে গিয়েছিল। হঠাৎ করে বুথে একজন ঢোকেন। যাঁকে আমরা চিনি না। আমাদের থার্ড পোলিংয়ের কাছ থেকে কন্ট্রোল ইউনিট যেটা আছে, সেটা কেড়ে মাটিতে ফেলে ভেঙে দেন। তারপর দৌড়ে পালিয়ে চলে যান। তারপর থেকে ভোট বন্ধ রয়েছে। আমরা ভোট শুরু করার চেষ্টা করছি।”
প্রত্যক্ষদর্শী এক ভোটার বলেন, “কোনও ঝামেলাই এখানে হচ্ছিল না। সবাই দাঁড়িয়ে শান্তিতেই ভোট দিচ্ছিলেন। হঠাৎ করে একজন এখানে ঢুকলেন, এখানে মেশিন ছিল, সেটা ভেঙে দিয়ে চলে গেলেন।” তবে উল্লেখ্য, সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন এক উর্দিধারী। কিন্তু তাঁর সামনেই কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই ২১ ফেব্রুয়ারি পুরভোটের প্রচারে বেরিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুরের অর্জুন সিং। ভোটে কারচুপি হলে ইভিএম ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। গত রবিবার গারুলিয়ায় প্রচারে বেরিয়েছিলেন অর্জুন সিং। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সামনেই তিনি এই হুমকি দিয়েছিলেন।
অর্জুন সিংয়ের মন্তব্যের পাল্টা ফিরহাদ হাকিম বলেন, “কোনওরকমের গুন্ডামি বরদাস্ত করা চলবে না। ইভিএম ভাঙলে জেলে যাবে। এখানে মানুষ ভোট দেবে, মানুষ যাকে ভোট দেবে, সবাইকে মাথা পেতে নিতে হবে।” বাস্তবেই সেই চিত্র ফুটে উঠল বসিরহাট ও ভাটপাড়ায়।
আরও পড়ুন: সিপিএমের ওপর ‘হামলা’র ছবি করছিলেন, TV9 বাংলার সাংবাদিককে মাটিতে ফেলে পেটালেন ২০-২৫ জন ‘তৃণমূলী’