দক্ষিণ ২৪ পরগনা: এবার ভোট বয়কটের পথে হাঁটলেন রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজি পল্লির বাসিন্দারা। বেহাল রাস্তাঘাট, নিকাশি ব্যবস্থার দুরবস্থা, পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। সেই সব সমস্যা যতক্ষণ না পর্যন্ত ঠিক হচ্ছে, ততক্ষণ ভোট দিতে যাবেন না বলে জানালেন এলাকার বাসিন্দারা। নাগরিক পরিষেবা আদায়ের দাবিতে মঙ্গলবার রাতে নেতাজিপল্লি থেকে কামরাবাদ হাইস্কুল পর্যন্ত ধিক্কার মিছিল করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকার সমস্যার কথা জানান তাঁরা। পাশাপাশি তাঁদের এই দাবির কথা ব্যানার, ফ্লেক্স বানিয়ে রাস্তার মোড়ে মোড়ে টাঙিয়ে দেন।
হা মুখ রাস্তার শেষ কবে সংস্কার হয়েছিল, তা স্মৃতি হাতড়েও মনে করতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। ইট-খানাখন্দে ভরা রাস্তা। বর্ষাকালে অবস্থা হয় আরও বেহাল। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের একাধিকবার স্থানীয় বাসিন্দারা সে কথা জানিয়েছেন। বারবার তাঁরা প্রতিশ্রুতিও পেয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই। প্রতিবারই ভোট এলে প্রতিশ্রুতি বন্যা বয়ে যায়। রাস্তা সারিয়ে দেওয়া, নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি- সবই নাকি হয়ে যাবে। কিন্তু কাজের কাজ হয় না কিছুই।
এলাকার সাধারণ মানুষের অভিযোগ, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। ভোট এলে সকলেই ভোট চাইতে আসে কিন্তু তাঁদের কথা কেউ ভাবেন না। তাই এ বছর ভোট বয়কটের সিন্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
আগামী ২৭শে ফেব্রুয়ারি রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩৫ টি ওয়ার্ডের ভোট। ভোটের আগে নিজেদের দাবি নিয়ে সরব হয়েছেন ৯ নং ওয়ার্ডের নেতাজিপল্লির সাধারণ মানুষেরা। স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “প্রথমত রাস্তা, দ্বিতীয়ত জল, তারপর ড্রেন। বিগত কয়েক বছর ধরে আমরা এই দাবি জানিয়ে এসেছিলাম। আমাদের শ্বশুর শাশুড়ির আমল থেকেই এই সমস্যা। আমরা চাই এর ব্যবস্থা হোক। যদি না হয়, তাহলে ভোট বয়কট করব। ট্যাক্স দিচ্ছে, সব করছি, আমাদের নিয়ম আমরা পালন করছি। কিন্তু ওঁরা কিছুই করছেন না। ওঁরা বলছেন, ওঁদের নাকি ফান্ডে টাকা নেই।”
আরেক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, “আমরা যতদিন বাস করছি, সরকার বদলেছে, কিন্তু রাস্তার উন্নতি হয়নি। রাস্তার জল জমে, বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যাওয়া যায় না, বয়স্করা পড়ে যান। কতজনের এইভাবে পা ভেঙেছে। আমরা কি তাহলে ৯ নম্বরের বাসিন্দা? আমরা তো আমাদের কর্তব্যটা করছি, ওঁরা কি আদৌ করছেন? ভোট চান কোনমুখে?”
ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি বললেন, “হচ্ছে, হবে শুনতে শুনতে আমাদের চুল পেকে গেল। কিন্তু হচ্ছেটা কই? একটা পঞ্চায়েত এলাকার পরিস্থিতিও এর থেকে ভালো হয়। আমরা যেভাবে থাকি, ওঁরা দেখতে আসেন না। তাহলে ভোট দিয়ে নাগরিক কর্তব্য করে কি হবে?”
আরও পড়ুন : Sandhya Mukhopadhyay Death: ‘অপূরণীয় ক্ষতি, অগ্রজাকে হারালাম’, সন্ধ্যার প্রয়াণে শোকবিহ্বল মমতা