আগরতলা: দরকার পড়লে ভোটের পর প্রাসাদ বিক্রি করে বিজেপি বিধায়ক কিনবেন। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি), ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলার মধ্য়েই চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করলেন তিপ্রা মোথা দলের প্রধান তথা ত্রিপুরা রাজবংশের বর্তমান প্রজন্ম প্রদ্যোৎ মানিক্য দেববর্মা। এদিন ভোট চলাকালীন আরও একবার তাঁর দলকেই ক্ষমতাসীন বিজেপির একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরেছেন। তাঁর দাবি, তিপ্রা মোথাই একমাত্র বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এরপরই তিনি স্পষ্ট জানান, ত্রিপুরা নির্বাচনে যদি তাঁর দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তিনি বিজেপি বিধায়কদের কেনার কথা ভাববেন। এই সম্ভাবনা যে তাঁর পরিকল্পনায় রয়েছে, অকপটে জানিয়েছেন ‘বুবাগ্রা’।
এবার ত্রিপুরায় বিজেপির জন্য ক্ষমতায় ফেরার লড়াইটা বেশ কঠিন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বাম-কংগ্রেস জোটের পাশপাশি তিপ্রা মোথাও ভাল লড়াই দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। কাজেই শেষ পর্যন্ত ফলাফল ত্রিশঙ্কু হতে পারে। সম্প্রতি একের পর এক রাজ্যে এই পরিস্থিতিতে বিধায়ক কেনা বেচা কিংবা নয়া জোটের সমীকরণ তৈরি হতে দেখা গিয়েছে। ত্রিপুরাতেও এইবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। এই বিষয়ে প্রশ্ন করায় প্রদ্যোৎ মানিক্য দেববর্মা বলেছেন, “যদি আমরা ৩০টিরও কম আসন পাই, তবে আমি আমার প্রাসাদের কিছু অংশ বিক্রি করে বিজেপি থেকে ২৫-৩০ জন বিধায়ক কেনার কথা ভাবছি।”
এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পরই অবশ্য কিছুটা রক্ষণাত্মক সুর শোনা গিয়েছে তিপ্রা মোথা প্রধানের মুখে। তিনি বলেন, “টাকার কোনও রঙ হয় না। কেন ধরে নিচ্ছেন যে শুধুমাত্র আমদের বিধায়কদেরই কেনাবেচা করা যাবে? কেন শুধু আমাদের সম্পর্কেই এই প্রশ্ন উঠছে? বিজেপিতে আছে যারা, তাদেরও কেনা যায়।” এই প্রথম ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে লড়ছে তিপ্রা মোথা দল। ৬০ আসনের বিধানসভায় ৪২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তারা। এর মধ্যে অন্তত ২৪টি আসনের ভাগ্য নির্ভর করছে তাদেরই হাতে, এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। দুই বছর আগের ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বায়ত্বশাসন জেলা পরিষদের নির্বাচনে ২৮ আসনের মধ্যে ১৬টি আসনে জিতেছিল তিপ্রা মোথা। বিধানসভা নির্বাচনে যে ৪২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তারা, তার মধ্যে ২০টি আসন উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। এই আসনগুলিতে তিপ্রার জয় আশা করা হচ্ছে।