কলকাতা: নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) ভূমিকায় চূড়ান্ত অসন্তুষ্ট কলকাতা হাইকোর্ট। কোভিডে রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার নিয়ে কমিশনের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়, এমনটাই পর্যবেক্ষণ আদালতের। যে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ ১০ হাজার পার করে যাচ্ছে, সে রাজ্যে কী ভাবে রাজনৈতিক দলগুলি হাজার হাজার লোকজন জড়ো করে ভোট প্রচার করছে তা নিয়ে কার্যত হতবাক আদালত।
ভোট হোক, তবে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভোটপ্রচারে রাশ টানা হোক। এই আর্জি জানিয়েই সম্প্রতি হাইকোর্টে তিনজন জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তারই শুনানি চলাকালীন বুধবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কমিশনের উপর।
প্রধান বিচারপতি টিবি এন রাধাকৃষ্ণণের কথায়, করোনা রুখতে এই মুহূর্তে কমিশনের ভূমিকা অত্যন্ত কঠোর হওয়া উচিৎ ছিল। অথচ তারা সার্কুলার জারি করেই থেমে গিয়েছে। কোনও পদক্ষেপের চিন্তাভাবনাই নেই। প্রধান বিচারপতির কথায়, “সার্কুলার নয় পদক্ষেপ চাই।”
এ প্রসঙ্গে এদিন প্রধান বিচারপতি মনে করান টি এন শেষনকে। বলেন, ভোটের সময় এই মানুষটির ভূমিকা ছিল অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কমিশনের সঙ্গে সাধারণ মানুষের পরিচয়ই হয়েছিল তাঁর হাত ধরে। অতিমারিকালে কেন্দ্রীয় কমিশন টি এন শেষনের দশ ভাগের এক ভাগ করে দেখাক।
ভোট প্রচার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি বারবারই বলেছে, কমিশনের সিদ্ধান্তকে তারা মাথা পেতে নেবে। কিন্তু কমিশন সে অর্থে সত্যিই তেমন কোনও কড়া পদক্ষেপ করেনি। বরং ৪৮ ঘণ্টার বদলে ভোটের ৭২ ঘণ্টা আগে প্রচার বন্ধের নির্দেশ দিয়েই ক্ষান্ত থেকেছে। এই ভূমিকাই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের কাছে চরম অসন্তোষের। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কমিশনের হাতে চূড়ান্ত ক্ষমতা রয়েছে। অথচ তারা তার ব্যবহার করছে না।
এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, “একটা সার্কুলার দিয়ে জনগণের উপরেই সব ছেড়ে দিয়েছে কমিশন। আপনাদের সব আছে, পুলিশ থেকে অফিসার তাও কোনও কাজ করছেন না? ক্যুইক রেসপন্স টিম কেন ব্যবহার করছেন না? আপনাদের কাজে অসন্তুষ্ট। সার্কুলার নয় পদক্ষেপ চাইছি কমিশনের কাছে। আমরা অর্ডার দিতে পারছি না, কারণ রাজনৈতিক দলের কোনও প্রতিনিধি আদালতে নেই। প্রয়োজনে আমরা টি এন শেষনের কাজ করব।” শুক্রবার ফের এই মামলার শুনানি হবে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারনা, পরবর্তী শুনানির আগে কমিশন যদি কঠোর না হয়, তা হলে হাইকোর্টই হাল ধরতে ময়দানে নামতে পারে।