দ্বিতীয় দফা শেষ। তৃতীয় দফার আগে মাত্র কয়েক দিন বাকি। তার আগে ফের পরিবর্তনের ডাক দিতে ফের একবার রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুটি সভা থেকেই একাধিকবার দাবি করলেন মমতা হেরে গিয়েছেন। হার স্বীকার করা উচিৎ।
গতকাল শুক্রবার উত্তরবঙ্গে মমতা ও অমিত শাহকে একই দিনে প্রচার চালাতে দেখা গিয়েছে। এবার তারকেশ্বরে মোদী-মমতা দ্বৈরথ। শনিবারই হরিপালে সভা ছিল নরেন্দ্র মোদীর। অন্য দিকে এদিনই মমতারও সভা ছিল তারকেশ্বরে। বিকেলেই সোনারপুরের যান নরেন্দ্র মোদীর। এছাড়াও এ দিন রাজ্যে প্রচারে এসেছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় আসনে লড়াইয়ের জল্পনা উস্কে দিয়ে গিয়েছিলেন মোদীই। তারপরই তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুইটারে লেখেন, মমতা যদি দ্বিতীয় আসনে লড়েন তাহলে লড়বেন বারাণসী থেকে। এ দিন সেই প্রসঙ্গে জবাব দিয়ে মোদীর বক্তব্য, বাংলা থেকে হার স্বীকার করেছেন বলেই বারাণসীতে য়াওয়ার কথা ভাবছেন।
বাংলার সব কৃষকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দিতে চায় বিজেপি। এ কথা উল্লেখ করে দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মোদী বলেন, ‘এখন থেকেই কৃষকদের আধার কার্ডের তালিকা তৈরি করে ফেলুন। যাতে সরকার তৈরি হলেই দ্রুত কৃষকদের অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা যায়।’
মমতার আন্দোলনের ক্ষেত্র সিঙ্গুর নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধলেন মোদী। ‘মমতা শিল্প আটকেছেন। সিঙ্গুরের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, এটা আমার থেকে আপনারাই ভালো জানেন। আজ সিঙ্গুরে কোনও উদ্যোগ নেই, চাকরি নেই।’ দিদির সরকার পর্যাপ্ত কোল্ড স্টোরেজ বানায়নি বলে হুগলিতে উৎপন্ন হওয়া আলু নষ্ট হয়, এমনটাও উল্লেখ করেছেন মোদী। তাঁর আশ্বাস, বিজেপি সরকার এলে এখানে কোল্ড স্টোরেজ তৈরি করা হবে।
‘আপানারাই বলুন। আপনারা এত গরমে, এত ঘণ্টা বসে আছেন, এটা কী টাকার জন্য? বাংলার মানুষ টাকা নিয়ে সভায় যায় এ কথা বলে মমতা বিজেপির নয়, মানুষের অপমান করেছেন। এ ভাবে মানুষের অপমান করবেন না।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বার্তা দিলেন মোদী।
ক্রিকেটার যদি বারবার আম্পায়ারের দিকে আঙুল তোলে, তাহলে বুঝতে হবে, তার খেলায় কোনও গণ্ডগোল আছে। আর নির্বাচনে যদি বারবার ইভিএমকে গালি দেয়, নির্বাচন কমিশনের দিকে অভিযোগ তোলে, তাহলে তার অর্থ হল তাঁর খেলা শেষ। এই ভাষাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করলেন নরেন্দ্র মোদী।
‘বাংলার কী চাই? বাংলার মানুষের এই বিষয়ে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। নির্বাচনে সব সময় সঠিক মত ব্যক্ত করে এখানকার মানুষ। বাংলার মানুষের চিন্তা-ভাবনা সর্বদাই স্পষ্ট। বাংলার মানুষ চিরকাল পাশ করেছে। ফেল করেছে তারা, যারা বাংলার মানুষের জন্য কাজ করতে পারেনি। প্রথম দু দফাতেই বিজেপির পথ পরিস্কার করে দিয়েছে বাংলার মানুষ। ২ মে কী হবে, তার ঝলক আমরা দু দিন আগে নন্দীগ্রামে দেখেছি।’ বক্তব্যের শুরুতেই বললেন মোদী।
‘দিদি শুধু বিজেপি নয়, ভগবান রামেরও বিরোধিতা করে। যিনি রামের নয়, তিনি আমাদের কোনও কাজের নয়। যিনি রামের বিরোধিতা করেন, তাঁর জন্য বাংলায় কোনও জায়গা নেই।’ ফলতায় গিয়ে এমনটাই বললেন যোগী আদিত্যনাথ। আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, আপানার দেখেছেন বিজেপি যা বলে, তা করে দেখায়।