কাস্টিং কাউচ হয়নি, তবে ইন্ডাস্ট্রিতে গা বাঁচিয়েই চলতে হয়: মধুরিমা বসাক
মধুরিমা বসাক আর নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করতে চান না! কেন? শেয়ার করলেন TV9 বাংলার সঙ্গে।
‘মোহর’ ধারাবাহিকের ‘শ্রেষ্ঠা’। অথবা ‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকের ‘কেয়া’কে আপনি নিশ্চয়ই চেনেন। প্রতিদিন আপনার ড্রইংরুমে দেখেন তাঁকে। এই দুই চরিত্রই করছেন অভিনেত্রী মধুরিমা বসাক (Madhurima Basak)। কিন্তু আর নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করতে চান না তিনি! কেন? শেয়ার করলেন TV9 বাংলার সঙ্গে।
আপনার কেরিয়ারে এখনও পর্যন্ত কি সবক’টা চরিত্রই নেগেটিভ?
আমার কেরিয়ারের প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর হতে চলল। শুরুর চরিত্রটা পজিটিভ করেছিলাম। রবি ওঝা প্রোডাকশনের ‘রাঙা মাথায় চিরুণি’। তারপর যত জায়গাতেই গিয়েছি, নেগেটিভ রোল অফার করা হয়েছে। কারণ সকলেরই একটা অদ্ভুত যুক্তি ছিল, যাঁদের শার্প ফিচার, তাঁদের নাকি পজিটিভের তুলনায় নেগেটিভে বেশি মানায়।
অর্থাৎ আপনার চেহারার সঙ্গে নেগেটিভ চরিত্রের লুক মেলে বলে দাবি করেছিলেন ইন্ডাস্ট্রির একটা অংশ…
হ্যাঁ, অনেকেরই এরকম মনে হয়। নেগেটিভ হতে গেলে নাকি গ্ল্যামারাস হতে হয়, এমন একটা ট্যাবু রয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে। আর পজিটিভ হতে গেলে পাশের বাড়ির মেয়ে হতে হবে। আমাকে যেহেতু একটু অন্য রকম দেখতে, তাই নাকি সব সময় আমাকে নেগেটিভ রোলই অফার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন, এক কাকিমা একবার বলেছিলেন, আমি গেলে চটি ছুড়ে মারবেন: নন্দিনী চট্টোপাধ্যায়
দীর্ঘদিন নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয়ের ফলে বাস্তব জীবনে কি কোনও প্রভাব পড়েছে?
না। রিল লাইফ কখনও রিয়েল লাইফকে কোনও রকমভাবে এফেক্ট করে না। কিন্তু যখন কেউ জিজ্ঞেস করেন, কেন শুধু নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করছি, তার কোনও উত্তর আমার কাছে নেই। আর ব্যক্তিগতভাবে কোথাও বিষয়টা নিয়ে আমি বিরক্ত। নেগেটিভ করতে-করতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছি। সবাই বলে নেগেটিভ চ্যালেঞ্জিং, অনেক শেড রয়েছে। কিন্তু ঘুরেফিরে সেই এক জিনিস। নতুন করে কিছু করার নেই। আলাদা কিছু এক্সপ্লোর করতে পারছি না। হ্যাঁ, কোনও চরিত্রে আমি ইঞ্জিনিয়ার। কোনও চরিত্রে আমি প্রফেসর। আমার ম্যানারিজমের পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু তার থেকে বেশি কিছু নয়। আমি নিজেও কেরিয়ারের দিক থেকে অন্য কিছু এক্সপ্লোর করতে চাই। আমি তো করতে-করতেই শিখছি, তাই নেগেটিভ চরিত্র করতে-করতে আমার আর শেখার কিছু থাকছে না। বছরের পর বছর একই ধরনের চরিত্র করতে-করতে মোনোটোনাস হয়ে যাচ্ছে। আমারও তো অন্য কিছু করতে ভাল ইচ্ছে করে।
View this post on Instagram
অভিনয়েই পেশা হিসেবে বেছে নিলেন কেন?
দেখুন, আমার নবদ্বীপে বাড়ি। উচ্চ-মাধ্যমিকের পর পড়তে এসেছিলাম কলকাতায়। বাগবাজার উইমেন্স কলেজ থেকে ভুগোল নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করি। হঠাৎ করেই অভিনয়ে আসা। আমাকে বলা হত, হাইট ভাল। দেখতে একটু অন্যরকম। হস্টেলে যখন থাকতাম, সবাই বলত মডেলিং করছিস না কেন? একটা বিউটি পেজেন্ট ট্রাই করি। কিন্তু আমার তখন মনে হয়েছিল, মডেলিংটা আমার দ্বারা হবে না। বরং অভিনয়টাই ভাল লাগত। যখন এলাম প্রফেশনে কিছুই পারতাম না। পুরোটাই কাজ করতে-করতে শিখেছি। আগে থেকে কোনও প্রস্তুতি ছিল না।
আরও পড়ুন, মা আর বরের কাছে আমি পৃথিবীর সেরা ভিলেন: কাঞ্চনা মৈত্র
ইন্ডাস্ট্রির নেগেটিভ ঘটনাগুলো কীভাবে সামলান?
আমি মনে করি ভাল, খারাপটা আপেক্ষিক, পারিপার্শ্বিকের উপর নির্ভর করে। আমি বিশ্বাস করি, কোনও মানুষ খারাপ নয়। হয় ভাল, না হলে মিজারেবল (miserable)। আর খারাপ না থাকলে তো ভালর গুরুত্ব বা ভালটা যে স্পেশ্যাল, সেটা বুঝতে পারব না। ইন্ডাস্ট্রির কলিগদের সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনে আমার যোগাযোগ খুব কম। ফলে এফেক্ট ফেলার জায়গাও নেই।
View this post on Instagram
আপনার পারফরম্যান্স দেখে দর্শক কী বলেন?
আপনি কেন শয়তানি করছেন, এটার থেকেও কেন এই চরিত্রটা করছেন, সেটা বেশি শুনতে হয়।
আরও পড়ুন, আমাকে কি খুব বদমাইশদের মতো দেখতে?: রুকমা রায়
তথাকথিত কাস্টিং কাউচ সামলাতে হয়েছে কখনও?
কাস্টিং কাউচ ফেস করতে হয়নি। তবে সব রকম মানুষই তো রয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে। তাই একটু গা বাঁচিয়ে চলতে হয় বৈকি!
আরও পড়ুন, মেয়ে বলেছে, মা তুমি কিন্তু ঝগড়া করবে না: অর্পিতা মুখোপাধ্যায়