আমাকে কি খুব বদমাইশদের মতো দেখতে?: রুকমা রায়

দীর্ঘদিন নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয়ের অনুভূতি কেমন? শেয়ার করলেন অভিনেত্রী।

আমাকে কি খুব বদমাইশদের মতো দেখতে?: রুকমা রায়
রুকমা রায়।
Follow Us:
| Updated on: Jan 21, 2021 | 12:32 PM

রুকমা রায় (Rooqma Ray)। কলকাতায় বাড়ি। বাড়িতে রয়েছেন বাবা, মা, ঠাকুমা। পড়াশোনা কলকাতায়। ন্যাশানাল হাই স্কুল থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক পাশের পর বাসন্তী দেবী কলেজ থেকে কমিউনিকেটিভ ইংলিশ নিয়ে স্নাতক হয়েছেন। না! সিভিতে এই সব তথ্য থাকলে আপনি তাঁকে চিনবেন না। বরং ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকের ‘অনন্যা’ বললে একডাকে চিনতে পারবেন। রুকমা এই মুহূর্তে ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকেও কাজ করেছেন। কিন্তু সেই চরিত্রে আপাতত কোনও নেগেটিভ শেড নেই। দীর্ঘদিন নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয়ের অনুভূতি কেমন? শেয়ার করলেন অভিনেত্রী।

আট বছরের কেরিয়ারের বেশির ভাগ চরিত্রই নেগেটিভ, তাই তো?

প্রথম নেগেটিভ করেছিলাম ‘প্রতিদান’-এ। তার আগে পজিটিভ চরিত্র করেছি। ‘প্রতিদান’-এ সকলে যেভাবে গ্রহণ করেছিলেন, খুবই ভাল লেগেছিল। কারণ ওটা আমার কাছে নতুন ছিল। এক্সপেরিমেন্ট করছিলাম। নেগেটিভ করতে পারি কি না, দেখছিলাম। ‘মধুশ্রী’ মানে আমার চরিত্র তিন মাসের জন্য দেখেছিলেন দর্শক। তার মধ্যেই প্রচুর প্রশংসা পেয়েছিলাম। তারপর থেকে প্রচুর নেগেটিভের অফার পেয়েছি। অনেকে বলেন, আমাকে নাকি নেগেটিভেই বেশি ভাল লাগে দেখতে। কিন্তু কেন জানি না। আমাকে কি খুব বদমাইশদের মতো দেখতে (হাসি)?

আরও পড়ুন, মেয়ে বলেছে, মা তুমি কিন্তু ঝগড়া করবে না: অর্পিতা মুখোপাধ্যায়

সে তো দর্শক বলবেন, কিন্তু পর পর নেগেটিভ চরিত্র করতে-করতে কি ব্যক্তি জীবনে কোনও প্রভাব পড়ে?

অনেক চরিত্র করতে গিয়ে বেশি ইনভলভ হয়ে গেলে একটু প্রবলেম হয় হয়তো। কিন্তু এখন তো অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। সুইচ অফ, সুইচ অনটা সহজ হয়ে গিয়েছে। ব্যক্তি জীবনে আমি খুব হাসিখুশি। সেটেও খুব মজা করে কাজ করি। এই তো ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকে হই হুল্লোড় করে কাজ করছি। ওখানে আমার চরিত্র একেবারেই নেগেটিভ নয়।

কিন্তু ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকে আপনার চরিত্র গ্রে শেডের…

হ্যাঁ, ‘খড়কুটো’তে নেগেটিভ চরিত্র করছি। সেটা ব্যক্তি জীবনে কোনও প্রভাব ফেলছে না। এখানে একটা জিনিস বলব। ওই কস্টিউমটা পরে নেওয়ার পর, সাজটা হয়ে গেলে আমি খুব চুপচাপ হয়ে যাই। সেটা আমাকে সবাই বলে। কিন্তু আমি বুঝতে পারি না। হয়তো স্ক্রিপ্ট পাওয়ার পর, কস্টিউম পরার পর কোথাও মানসিকভাবে যুক্ত (সাইকোলজিক্যালি কানেক্ট) হয়ে যাই। সবাই বলে এত গম্ভীর কেন? কিন্তু ‘দেশের মাটি’তে এই কথাটা আমাকে কেউ বলে না। ওখানে গল্প, ইয়ার্কি করতে থাকি।

Rukma

ধারাবাহিকের দৃশ্যে অভিনেত্রী।

আপনি নিজে এই পরিবর্তনটা বুঝতে পারেন?

না। এই পরিবর্তনটা কিন্তু আমি নিজে বুঝতে পারি না। সবাই বলে তুই গম্ভীর হয়ে গিয়েছিস। এমনকি ভিডিও কলে যখন বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলি, গল্প করি, ওরাও অনেক সময় বলে, ‘বাবা রে, তিন্নি দিদি, কী রাগী! তোকে এরকম লাগছে কেন…’ হয়তো ওই গেট-আপ, ওই চশমা, বিনুনি করে ওই রকম লুক নেওয়ার পর হয়তো আমাকে গম্ভীর মনে হচ্ছে। কিন্তু আমি আসলে একেবারেই গম্ভীর নই। হয়তো আমি চরিত্রে ঢুকে যাওয়ার পর বদলটা আসে। আমি বুঝতে পারি না। তবে স্পিলট পার্সোনালিটি আমার নেই কিন্তু (হাসি)।

পর্দায় দুষ্টুমি করার পর বাস্তবে ফিডব্যাক কেমন পান?

ওরে বাবা! শ্রীতমা রায়চৌধুরি মানে অভিনেত্রী, ও টেলিকাস্ট ফলো করে। ও বলেছে, ‘তোকে ঠাস-ঠাস করে মারব। তোকে দেখে আমার যা রাগ হচ্ছে ভাবতে পারবি না।’ মল্লিকাদি বলে, ‘ভাল করছিস।’ কয়েকদিন আগে আমার বাড়িতে রাতে বাবা, মা, আমি বসে ‘দেশের মাটি’র টেলিকাস্ট দেখছিলাম। ওখানে একটু বদমায়েশি শুরু করেছি। কিন্তু ওখানে আমি নেগেটিভ নই। বারবার বলছি। পাশ থেকে দু’জন সমানে বলে যাচ্ছে, ‘কী দরকার এই কথাটা বলার, এই তো, আবার শুরু হয়ে গিয়েছে…।’ মানে, বলেই যাচ্ছে। আমি হাসছি, বললাম, আমি সামনে বসে আছি, আমাকেই দেখছ। আবার আমার সামনেই আমার নামে এত খারাপ খারাপ কথা বলছ তোমরা! কিছু তো করতে পারছি বলেই আমার উপর রাগ হচ্ছে। হোক রাগ সবার, আমি খুশি হব তাতে।

আরও পড়ুন, শুটিং না থাকলে আমি গদাধরের সঙ্গে ক্রিকেট খেলি: অয়ন্যা

আপনি বাস্তব জীবনে নেগেটিভিটিকে সামলান কীভাবে?

পজিটিভিটি দিয়ে নেগেটিভিটি ব্রেক করে দেওয়া যায়। আমি সেটাই করি। পজিটিভ ভাবনা সব সময় রাখা উচিত। মানুষের জীবনে ওঠা পড়া থাকেই। আমার জীবনেও আছে। কিন্তু তার মধ্যেও বাঁচতে হবে, তার মধ্যেও পজিটিভ থাকতে হবে। যত নেগেটিভ থাকব, তত নেগেটিভিটি আমাদের টেনে নেবে।

ইন্ডাস্ট্রিতেও তো এ সব সামলাতে হয়?

দেখুন, আমার মতো সকলে না-ও হতে পারে। নেগেটিভ লোকজন তো থাকবেই। তাদের মেনশন করতে চাই না। ইন্ডাস্ট্রিতে আমার বন্ধুই বেশি। আমার কারও সঙ্গে খুব একটা ঝামেলা হয় না।

Rukma-photoshoot

রুকমার ফটোশুট। ছবি: ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে।

নিজেকে নিয়ে শোনা কোনও গসিপ শেয়ার করতে চাইবেন, আসলে গসিপ তো নেগেটিভ বিষয়…

আমি যার সঙ্গেই কথা বলি, পরে জানতে পারি তার সঙ্গে নাকি প্রেম করছি। আমার সহকর্মী রিজওয়ানের (রব্বানি শেখ) অনুরাগীরা কী সব মেসেজ পাঠাত! আমরা হাসতাম। খুবই বোকা-বোকা বিষয়টা। যেটা নয়, সেটা তো নয়ই, তাই না।

আর রুকমার লভ লাইফের কী খবর?

(হাসি) এই রে, সেটা ডিসক্লোজ করতে চাইছি না।

আরও পড়ুন, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের ‘ফিরকি’তে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে: আর্যা

কোনও সম্পর্কে কমিটেড আপনি?

কোনও সম্পর্কে রয়েছি কি না, সেটাও বলব না (হাসি)।