Calcutta Municipal Corporation: আর সিলিংয়ে গর্ত নয়, ভাঙতে হবে গোটা বিল্ডিং, বড় নির্দেশ কলকাতা পৌরনিগমের
Calcutta Municipal Corporation: কলকাতা পুরসভার আইনের (১৯৮০) ৪০০ ধারার ৮ উপধারায় বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ব্যাপারে বদল করা হয়েছে। সম্প্রতি, বেশ কয়েকটি ঘটনায় দেখা যাচ্ছিল, পুরসভার 'ডেমোলিশন স্কোয়াডের' কর্মীরা এ সিলিংয়ে গর্ত করে দিয়ে চলে আসছিলেন।

কলকাতা: বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ক্ষেত্রে ব্যাপক ত্রুটি। অভিযোগের বহরে বিরক্ত কলকাতা পুরসভা। গর্ত না করে ভেঙে ফেলতে হবে গোটা নির্মাণই। এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুরসভার তরফে।
কলকাতায় বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ক্ষেত্রে বড়সড় বদল নিয়ে এল কলকাতা পুরসভা।বেআইনি নির্মাণ এতদিন ভাঙার সময় দেখা যেত শুধুমাত্র সিলিংয়ের অংশটুকু বড় গর্ত করে দিয়ে চলে আসতেন পুরসভার ডেমোলিশন স্কোয়াডের কর্মীরা। যে ক’টি তল থাকত, সেগুলির প্রতিটি দলের সিলিং বড় বড় করে গর্ত করে দেওয়া হত। কিন্তু এবার থেকে শুধুমাত্র সিলিং গর্ত করলে চলবে না। বেআইনি নির্মাণ সম্পূর্ণ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে হবে। এই বিষয়ে এবার কলকাতা পুরসভার কমিশনার ধবল জৈন জারি করলেন বিজ্ঞপ্তি।
কলকাতা পুরসভার আইনের (১৯৮০) ৪০০ ধারার ৮ উপধারায় বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ব্যাপারে বদল করা হয়েছে। সম্প্রতি, বেশ কয়েকটি ঘটনায় দেখা যাচ্ছিল, পুরসভার ‘ডেমোলিশন স্কোয়াডের’ কর্মীরা এ সিলিংয়ে গর্ত করে দিয়ে চলে আসছিলেন। এরপর সেখানে জোড়াতাপ্পি দিয়ে নির্মাণ তৈরি হয়ে যাচ্ছিল। সূত্রের খবর, বিগত বেশ কয়েকদিনে এ ব্যাপারে ‘টক টু মেয়রে’ অভিযোগ আসে। এরপরই মেয়র বুঝতে পারেন, গোটা প্রক্রিয়ায় ব্যাপক গাফিলতি এবং ত্রুটি রয়ে যাচ্ছে। কমিশনারকে গোটা বিষয়টি দেখতে বলেন। এর পরই কমিশনার বিজ্ঞপ্তি জারি করেন বলে খবর।
বিজ্ঞপ্তিতে বেশ কয়েকটি বিষয় উল্লেখ রয়েছে…
১) কোনও গর্ত করে দায়সারাভাবে কাজ করা যাবে না। বেআইনি নির্মাণ সম্পূর্ণ ভাঙতে হবে।
২) যে স্তম্ভ গুলির উপরে ঢালাই করা হবে, সেগুলি সম্পূর্ণ ভেঙে নির্মাণ স্থল থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। নির্মাণস্থল থেকে যাবতীয় লোহা এবং অন্যান্য কাঠামোকে সম্পূর্ণ খুলে অন্যত্র নিয়ে যেতে হবে।
৩) ঢালাইহবা সিলিং বা ছাদ সম্পূর্ণ ভেঙে ধুলিস্যাৎ করে দিতে হবে।
৪) একজন শীর্ষ ইঞ্জিনিয়র পদমর্যাদার আধিকারিক গোটা প্রক্রিয়াটি নিজের নিয়ন্ত্রণ রেখে কাজ করাবেন। সেই কাজ শেষে রিপোর্ট তৈরি করে তা জমা দেবেন পুরসভায়।
৫) যদি দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়র বা ডেমোলিশন স্কোয়াডের কর্মী বা আধিকারিকরা বুঝতে পারেন, যে একদিন বা দুদিনের কাজ করা সম্ভব নয়, তাহলে সেটা পুরসভা শীর্ষ কর্তৃত্বকে জানিয়ে যতদিন খুশি কাজ করবেন। তবে সম্পূর্ণ কাজ শেষ করেই ফিরতে হবে।
৬) বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজে যাবতীয় নিরাপত্তা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যাতে কর্মরত কর্মী বা আশপাশের বাসিন্দাদের কোনও রকম সমস্যায় না পড়তে হয়। এগুলির মধ্যে রয়েছে —
ক) যেখানে বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হবে, তার আশপাশে লোহার ব্যারিকেড বা বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করতে হবে।
খ) যে কর্মীরা কাজ করবেন, তাঁদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
গ) যে আধিকারিকের নজরদারিতে বা দায়িত্বে গোটা কাজটি সম্পন্ন হবে, তাঁকে দক্ষ এবং বুদ্ধিসম্পন্ন হতে হবে।
ঘ) আশপাশের বাড়ি বা সম্পত্তির যাতে ক্ষতি না হয় তার নজরদারি রাখতে হবে।
ঙ) বিল্ডিং বিভাগকে যাবতীয় বিষয় নজর রাখতে হবে। কোনও ভাবেই নির্মাণের সামান্য অংশ যাতে থেকে না যায়, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে তারপর ওই অংশ ছাড়তে হবে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ভাঙা মানে পুরোপুরি ভাঙা। কোনও রকম গর্ত নয়। শুধু গর্ত করে পুরসভা থেকে টাকা নিয়ে নেবে এটা হবে না। আমাদের বোকা বানানো হচ্ছে। আমি চোখ-কান খোলা মেয়র।”

