মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উদ্যোগে আয়োজিত দুর্গাপুজো কার্নিভাল মানে প্রতি বছরই একটা হইহই ব্যাপার। বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ভিড় জমান স্টুডিয়োপাড়ার একঝাঁক অভিনেতা অভিনেত্রীরা। প্রতি বছরই সিরিয়াল পাড়ার একগুচ্ছ মুখকে দেখা যায় পুজো কার্নিভালের মঞ্চে। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছরের পুজোটা যেন একটু অন্য রকম। মায়ের আগমনের আগে সারা শহরে ঝড় বয়ে গিয়েছে।
৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটে, যার জেরে তোলপাড় হয়ে যায় গোটা শহর। উত্সব না নাকি আন্দোলন দুভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল শহর। সেই প্রভাবই যেন দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী আয়োজিত দুর্গপুজো কার্নিভালে। প্রতিবারের মতো সায়ন্তিকা বন্দোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর নৃত্যপরিবেশনা করেছেন। অভিনেতা তথা রাজনৈতিক দলের সদস্যদের অনেককেই দেখা গিয়েছে কার্নিভালের মঞ্চে। সেই তালিকায় ছিলেন নুসরত জাহান, সোহম চক্রবর্তী, শুভদ্রা মুখোপাধ্যায়, সৌমিতৃষা কুণ্ডু, রচনা বন্দোপাধ্যায়, জুন মালিয়া, রিয়া সেন, রাইমা সেন-সহ আরও অনেকে। কিন্তু ছোট পর্দার নায়ক নায়িকাদের পুজো কার্নিভালের মঞ্চে দেখা গেল কেন? অনেকের মনেই এই একটা প্রশ্ন।
আগের বছরেও এই মঞ্চে দেখা গিয়েছিল তৃণা সাহা, সৌরভ দাস থেকে বাংলা সিরিয়াল পাড়ার অনেক চেনা মুখকে। বিতর্ক এড়াতেই কি এ বার অনেককে দেখা গেল না দুর্গাপুজোর কার্নিভালে? যদিও সেই উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী তৃণা সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি জানিয়েছেন, আগের বছরও গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এই বছরে তাঁর শরীর ভাল নেই বলে যেতে পারেননি। অভিনেতা সৌরভ অবশ্য বউকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছেন। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভাল তৃণা তৃণমূলের সদস্য। আর সৌরভ কিছু দিন আগে পর্যন্ত তৃণমূল দলেরই সদস্যে ছিলেন।
সৌরভ বললেন, “বউকে তো সারা বছর সে ভাবে সময় দিতে পারি না। তাই কাশ্মীর ঘুরতে গিয়েছি।” প্রসঙ্গত দুর্গাপুজো কার্নিভাল প্রসঙ্গে নিজের চাঁচাছোলা বক্তব্য রাখেন নায়িকা। পুজো কার্নিভাল এবং বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি যাচ্ছি। ওখানে গিয়ে যদি বিতর্কের মুখে পড়তে হয়, তবে সবাই যা করবেন, আমিও তাই করব। আমি আন্দোলনের বিরোধী নই। তবে মণ্ডপে মণ্ডপে যে হারে ভিড় দেখলাম, তাতে তো বোঝা গিয়েছে যে উৎসব হয়েছে। এবার নতুন জামা পরে ঠাকুর দেখার পর কার্নিভাল এড়িয়ে যাওয়ার কোনও মানে হয় না। বছরকার দিন, মা চলে যাচ্ছে, সকলের মতো আমিও সেখানে উপস্থিত হব। প্রতিবাদ প্রতিবাদের মতোই হবে কার্নিভালে যাওয়া মনে প্রতিবাদের বিরোধিতা করছি এমনটা একেবারেই না। আর ট্রোল হওয়ার ভয়ে যদি কেউ ভাবেন যাবেন না, তবে আমি বলব, তাঁদের মেরুদণ্ড নেই।”