অভিনেতা Biswanath Basu-র আপন মাসির ছেলে। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল বাংলা ছবিতে মিউজিক দেওয়ার। তবলা নিয়ে নাড়াঘাটার সূত্রে পরিচয় সুরের সঙ্গে। তবে মা-বাবার আপত্তি থাকায় নতুন কেনা গিটার বাড়িতে রাখতে পারেননি। রাখতে হয়েছিল বেস্ট ফ্রেন্ডের বাড়িতে। মা-বাবা জানতেন, চারজন প্রাইভেট টিউটরের কাছে পড়তে যায় ছেলে। কিন্তু না, চতুর্থ প্রাইভেট টিউটর ছিল না কখনওই। যিনি ছিলেন, তিনি গানের মাস্টারমশাই। মাস্টারমশাইয়ের সেই ছাত্র তথা অভিনেতা বিশ্বনাথ বসুর আপন মাসির ছেলের নাম রজত ঘোষ।
চতুর্থ প্রাইভেট টিউটরের সঙ্গে-সঙ্গে আরও একজন ছিলেন রজতের গুরু – এ আর রহমান (A.R. Rahman)। সুর-তাল-লয় তাঁর মিউজিক ভিডিও দেখে শিখেছিলেন। আর পছন্দের ‘গানওয়ালা’ ছিলেন হরিহরণ ‘স্যর’ (Hariharan)।
এ সবের মাঝেই মাত্র উনিশ বছর বয়সে পিতৃবিয়োগ ঘটল রজতের। মাকে নিয়ে পথে কার্যত পথে বসার জোগাড়। ২০১৫-র শুরুর দিকে, তীব্র অর্থাভাবের সময়ে কোনও মতে জোটে সামান্য এক চাকরি। কলকাতার কল-সেন্টারের চাকরি। মাইনে সাড়ে ছ’হাজার। কিছুতেই মন টিকছিল না সেই চাকরিতে। সারাদিন অফিস করে তখনও বাড়ি ফিরে তখনও চলেছে সঙ্গীতচর্চা। পরামর্শ দিতে এগিয়ে আসেন আপন মাসতুতো দাদা অভিনেতা বিশ্বনাথ বসু। সুরকার হতে চাওয়া ভাইয়ের মনের কথা বুঝে তিনিই প্রথম বলেছিলেন, “মন যা চায়, তাই-ই কর।”
আরও পড়ুন বাজারে বং গাই-এর নতুন মার্চেন্ডাইজ
‘তাই-ই’ করেছিলেন বসিরহাটের দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা রজত ঘোষ। এরপর মাসের পর মাস কলকাতায় একাধিক প্রোডাকশন সংস্থার দরজায় কড়া নাড়তে থাকেন রজত। কিন্তু সাড়া মেলেনি কিছুতেই। ২০১৫ সালে সব ছেড়েছুড়ে মুম্বই পাড়ি। মুম্বইয়ে পরিচিত বলতে এক ‘ফেসবুক ফ্রেন্ড’। মুম্বই পৌঁছে শুরু হল তাঁর বাড়িতে থাকা। কিছুদিন যেতে না-যেতেই রজত বুঝতে পারেন, বন্ধুর বাড়িতে তিনি বাড়তি বোঝা। আবার শুরু হল কাজের সন্ধান। ফের কল-সেন্টারের চাকরি। মাইনে ১২,০০০ টাকা। ‘ফেসবুকের ফ্রেন্ড’-এর বাড়ি ছাড়লেন রজত। সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে পাঁচটার শিফট শেষ করে, মুম্বইয়ের এক সস্তার হোটেলে রাতে ঘুমোতে যেতেন রজত। ছুটির দিনে, স্টুডিওগুলোয় খোঁজখবর। ডাক এল শেষমেশ ২০১৮-য়। তবে মুম্বই বা কলকাতা থেকে নয়, পদ্মাপার থেকে।
গায়ক রাজ বর্মন রজতের বন্ধু। রাজের সঙ্গে বেশ কিছু কাজ করেছিলেন রজত। মূলত ইনডিপেনডেন্ট মিউজিক। ওপার বাংলায় বেশি জনপ্রিয় হয় সে সব গান। রাজ বর্মনের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ বাংলাদেশের কিছু প্রোডাকশন সংস্থার। তাঁর সূত্রেই অনুরোধ আসে বাংলাদেশ থেকে রাজের গানের সুরকারকে চাই তাদের এক নতুন ছবি ‘ভেলকিবাজ’-এ। ছবির জন্য বেশ কিছু গান রেকর্ড করে পাঠান রজত। তবে সে ছবি পিছিয়ে যায়। পাইপলাইনে এগিয়ে আসে আর এক ছবি ‘সোলমেট’। তারপর ‘রান রকি’ এবং অবশেষে ‘ভেলকিবাজ’।
‘সোলমেট’ ছবিতে মিউজিক দিয়েছেন বসিরহাটের রজত“চতুর্থ ছবি নিয়েও কথাবার্তা চলছে। তবে নাম এখনও ঠিক হয়নি,” লাজুক হাসিতে বললেন রজত। রাজ বর্মন (Raj Barman) ছাড়াও ‘সা রে গা মা পা’-খ্যাত স্নিগ্ধজিৎ ভৌমিক (Snigdhajit Bhowmik) গান গেয়েছেন রজতের সুরে। এমনকি এ সময়ের ট্রেন্ডিং গায়িকা নেহা কক্করকে (Neha Kakkar) নিয়েও কাজ করতে চলেছেন রজত।
আরও পড়ুন কেন ‘জাল্লিকাট্টু’ নিয়ে উচ্ছ্বসিত বাঙালি পরিচালকরা
কথায়-কথায় মুম্বইবাসী রজত বললেন, “অরিজিৎ সিংয়ের (Arijit Singh) শো শুনব বলে জলের বোতল বেচেছি, কারণ টিকিট কেনার পয়সা ছিল না,” কথাগুলো বলতে-বলতে গলা ভারি হয়ে আসছিল রজতের।
“ফেসবুক বন্ধুর বাড়িতে থাকার সময়, টাকাকড়ি কিচ্ছু ছিল না। মাসিক লোন শোধ করার সামর্থ্য ছিল না। হঠাৎ খবর পেলাম ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে হবে অরিজিতের লাইভ কনসার্ট। টিকিটের দাম, ৩০০০, ১৫,০০০এবং ২০,০০০ টাকা। আমার পকেটে তিনশোও নেই। বসিরহাটের এক ছেলের সঙ্গে আলাপ হল, মুম্বইতে মিস্ত্রির কাজ করে সে। ও বলল, ‘পাটিল স্টেডিয়ামে জল বিক্রি করতে পারবে?’ আমি বললাম, পারব। তারপর গলায় জলের ট্রে ঝুলিয়ে বলে বেড়িয়েছি, পানি লেনা হ্যাঁয়? বিশ রুপিয়া। সে দিন খুব কান্না পেয়েছিল। ভাবিনি এরকমও দিন আসবে,” চুপ করে যায় রজত।
অরিজিতের সঙ্গে দেখা হয়েছে? বলেছেন এ ঘটনার কথা?
আবার মুখ পাল্টে যায় রজতের। এবার আবার হাসিখুশি রজত।
‘‘না দেখা হয়নি। তবে মেসেজে জন্মদিনের উইশ করেছিলাম, রিভার্টে লেখেন থ্যাঙ্ক ইউ। আমি এতেই খুশি। কাজ তো করবই কখনও না কখনও, সে দিন বলব, অরিজিতদা তোমার কনসার্টে জল বেচে ২২৫ টাকা পেয়েছি।’’
‘জলবিক্রেতা’ রজত এখন বাংলাদেশের একাধিক ছবির সুরকার। “আকৃতি কক্কর (Akriti Kakkar), মিকা সিং (Mika Singh), এমনকি দালের মেহেন্দির (Daler Mehndi) সঙ্গে কাজ শুরু করছি। দালেরজি আমায় বলেছেন, ‘ধুন অওর গানা অচ্ছা হোগা তো পয়সে নেহি লেঙ্গে!’ এটা আমার কাছে বিরাট প্রাপ্তি!”
মুম্বইয়ে পাঁচ বছর হয়ে গেল। বলিউডি অভিষেক কবে হচ্ছে?
“সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে কথা হয়েছিল। কাজটা হয়েও যেত। কিন্তু এই কোভিড-এর জন্য হল না। তবে আমি জানি, নিশ্চয়ই কাজটা হবে। খুব শিগ্গিরই হবে। সঞ্জয় স্যর আমাকে একটা কথা বলেছিলেন, ‘রজত ম্যায় তুঝে ব্রেক নেহি দুঙ্গা, পয়সা দুঙ্গা’, কথাটা এখনও মনে আছে। আরেকটা কাজও হয়ে রয়েছে, সিনেমা কবে রিলিজ করবে জানি না। ছবির নাম ‘ওম মঙ্গলম, মঙ্গলম’। রকুল প্রীত সিং অভিনয় করছে।’’
মুম্বইয়ের মালাডে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন রজত। আর তাঁর মা এখনও রয়েছেন বসিরহাটে। তবে যাতায়াত রয়েছে।
এতগুলো ভাল খবরের মাঝে কোথাও কলকাতায় কাজ না পাওয়ার আক্ষেপ আছে?
“আক্ষেপ ছিল, ভীষণভাবে ছিল। তবে এখন বেশ কিছু অফার আসছে। জিতদা (Jeet) (অভিনেতা), পরমদার (Parambrata Bandyopadhyay) (অভিনেতা) সঙ্গে কাজের কথা চলছে। তবে এখনও কিছু ফাইনাল হয়নি,” বললেন রজত।
দাদা (বিশ্বনাথ বসু) কী বলছেন?
“দাদা ভীষণ খুশি। এই তো মুম্বইয়ে এসে থেকে গেল কিছুদিন। আমি তো দাদার সঙ্গেও কাজ করেছি। বিশ্বনাথদার একটা ইউটিউব চ্যানেল আছে, সেখানে একটা শো হয়, ‘মাসিমা মালপো খামু’—চ্যানেলের টাইটেল ট্র্যাক আমার করা।”
আর দাদা মানে বিশ্বনাথ বসু কী বলছেন, ভাইয়ের সাফল্যে?
“বসিরহাটের ছেলের জন্য মুম্বইতে পাড়ি দেওয়াই বিশাল পদক্ষেপ। এবং ও যে স্ট্রাগল করে আজ এরকম জায়গায় উঠে এসেছে, তার জন্য রজতকে সাধুবাদ জানাই। আমি ভীষণ গর্বিত।”
রজতের প্রিয়তম অভিনেতা কিন্তু দাদা। দাদার সঙ্গে কাজ করছেন, তবে তাঁর দ্বিতীয় পছন্দের অভিনেতা নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি। রজত বললেন, “একবার যদি মানুষটার সঙ্গে কাজ করতে পারি! উফ!”
অভিনেতা Biswanath Basu-র আপন মাসির ছেলে। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল বাংলা ছবিতে মিউজিক দেওয়ার। তবলা নিয়ে নাড়াঘাটার সূত্রে পরিচয় সুরের সঙ্গে। তবে মা-বাবার আপত্তি থাকায় নতুন কেনা গিটার বাড়িতে রাখতে পারেননি। রাখতে হয়েছিল বেস্ট ফ্রেন্ডের বাড়িতে। মা-বাবা জানতেন, চারজন প্রাইভেট টিউটরের কাছে পড়তে যায় ছেলে। কিন্তু না, চতুর্থ প্রাইভেট টিউটর ছিল না কখনওই। যিনি ছিলেন, তিনি গানের মাস্টারমশাই। মাস্টারমশাইয়ের সেই ছাত্র তথা অভিনেতা বিশ্বনাথ বসুর আপন মাসির ছেলের নাম রজত ঘোষ।
চতুর্থ প্রাইভেট টিউটরের সঙ্গে-সঙ্গে আরও একজন ছিলেন রজতের গুরু – এ আর রহমান (A.R. Rahman)। সুর-তাল-লয় তাঁর মিউজিক ভিডিও দেখে শিখেছিলেন। আর পছন্দের ‘গানওয়ালা’ ছিলেন হরিহরণ ‘স্যর’ (Hariharan)।
এ সবের মাঝেই মাত্র উনিশ বছর বয়সে পিতৃবিয়োগ ঘটল রজতের। মাকে নিয়ে পথে কার্যত পথে বসার জোগাড়। ২০১৫-র শুরুর দিকে, তীব্র অর্থাভাবের সময়ে কোনও মতে জোটে সামান্য এক চাকরি। কলকাতার কল-সেন্টারের চাকরি। মাইনে সাড়ে ছ’হাজার। কিছুতেই মন টিকছিল না সেই চাকরিতে। সারাদিন অফিস করে তখনও বাড়ি ফিরে তখনও চলেছে সঙ্গীতচর্চা। পরামর্শ দিতে এগিয়ে আসেন আপন মাসতুতো দাদা অভিনেতা বিশ্বনাথ বসু। সুরকার হতে চাওয়া ভাইয়ের মনের কথা বুঝে তিনিই প্রথম বলেছিলেন, “মন যা চায়, তাই-ই কর।”
আরও পড়ুন বাজারে বং গাই-এর নতুন মার্চেন্ডাইজ
‘তাই-ই’ করেছিলেন বসিরহাটের দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা রজত ঘোষ। এরপর মাসের পর মাস কলকাতায় একাধিক প্রোডাকশন সংস্থার দরজায় কড়া নাড়তে থাকেন রজত। কিন্তু সাড়া মেলেনি কিছুতেই। ২০১৫ সালে সব ছেড়েছুড়ে মুম্বই পাড়ি। মুম্বইয়ে পরিচিত বলতে এক ‘ফেসবুক ফ্রেন্ড’। মুম্বই পৌঁছে শুরু হল তাঁর বাড়িতে থাকা। কিছুদিন যেতে না-যেতেই রজত বুঝতে পারেন, বন্ধুর বাড়িতে তিনি বাড়তি বোঝা। আবার শুরু হল কাজের সন্ধান। ফের কল-সেন্টারের চাকরি। মাইনে ১২,০০০ টাকা। ‘ফেসবুকের ফ্রেন্ড’-এর বাড়ি ছাড়লেন রজত। সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে পাঁচটার শিফট শেষ করে, মুম্বইয়ের এক সস্তার হোটেলে রাতে ঘুমোতে যেতেন রজত। ছুটির দিনে, স্টুডিওগুলোয় খোঁজখবর। ডাক এল শেষমেশ ২০১৮-য়। তবে মুম্বই বা কলকাতা থেকে নয়, পদ্মাপার থেকে।
গায়ক রাজ বর্মন রজতের বন্ধু। রাজের সঙ্গে বেশ কিছু কাজ করেছিলেন রজত। মূলত ইনডিপেনডেন্ট মিউজিক। ওপার বাংলায় বেশি জনপ্রিয় হয় সে সব গান। রাজ বর্মনের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ বাংলাদেশের কিছু প্রোডাকশন সংস্থার। তাঁর সূত্রেই অনুরোধ আসে বাংলাদেশ থেকে রাজের গানের সুরকারকে চাই তাদের এক নতুন ছবি ‘ভেলকিবাজ’-এ। ছবির জন্য বেশ কিছু গান রেকর্ড করে পাঠান রজত। তবে সে ছবি পিছিয়ে যায়। পাইপলাইনে এগিয়ে আসে আর এক ছবি ‘সোলমেট’। তারপর ‘রান রকি’ এবং অবশেষে ‘ভেলকিবাজ’।
‘সোলমেট’ ছবিতে মিউজিক দিয়েছেন বসিরহাটের রজত“চতুর্থ ছবি নিয়েও কথাবার্তা চলছে। তবে নাম এখনও ঠিক হয়নি,” লাজুক হাসিতে বললেন রজত। রাজ বর্মন (Raj Barman) ছাড়াও ‘সা রে গা মা পা’-খ্যাত স্নিগ্ধজিৎ ভৌমিক (Snigdhajit Bhowmik) গান গেয়েছেন রজতের সুরে। এমনকি এ সময়ের ট্রেন্ডিং গায়িকা নেহা কক্করকে (Neha Kakkar) নিয়েও কাজ করতে চলেছেন রজত।
আরও পড়ুন কেন ‘জাল্লিকাট্টু’ নিয়ে উচ্ছ্বসিত বাঙালি পরিচালকরা
কথায়-কথায় মুম্বইবাসী রজত বললেন, “অরিজিৎ সিংয়ের (Arijit Singh) শো শুনব বলে জলের বোতল বেচেছি, কারণ টিকিট কেনার পয়সা ছিল না,” কথাগুলো বলতে-বলতে গলা ভারি হয়ে আসছিল রজতের।
“ফেসবুক বন্ধুর বাড়িতে থাকার সময়, টাকাকড়ি কিচ্ছু ছিল না। মাসিক লোন শোধ করার সামর্থ্য ছিল না। হঠাৎ খবর পেলাম ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে হবে অরিজিতের লাইভ কনসার্ট। টিকিটের দাম, ৩০০০, ১৫,০০০এবং ২০,০০০ টাকা। আমার পকেটে তিনশোও নেই। বসিরহাটের এক ছেলের সঙ্গে আলাপ হল, মুম্বইতে মিস্ত্রির কাজ করে সে। ও বলল, ‘পাটিল স্টেডিয়ামে জল বিক্রি করতে পারবে?’ আমি বললাম, পারব। তারপর গলায় জলের ট্রে ঝুলিয়ে বলে বেড়িয়েছি, পানি লেনা হ্যাঁয়? বিশ রুপিয়া। সে দিন খুব কান্না পেয়েছিল। ভাবিনি এরকমও দিন আসবে,” চুপ করে যায় রজত।
অরিজিতের সঙ্গে দেখা হয়েছে? বলেছেন এ ঘটনার কথা?
আবার মুখ পাল্টে যায় রজতের। এবার আবার হাসিখুশি রজত।
‘‘না দেখা হয়নি। তবে মেসেজে জন্মদিনের উইশ করেছিলাম, রিভার্টে লেখেন থ্যাঙ্ক ইউ। আমি এতেই খুশি। কাজ তো করবই কখনও না কখনও, সে দিন বলব, অরিজিতদা তোমার কনসার্টে জল বেচে ২২৫ টাকা পেয়েছি।’’
‘জলবিক্রেতা’ রজত এখন বাংলাদেশের একাধিক ছবির সুরকার। “আকৃতি কক্কর (Akriti Kakkar), মিকা সিং (Mika Singh), এমনকি দালের মেহেন্দির (Daler Mehndi) সঙ্গে কাজ শুরু করছি। দালেরজি আমায় বলেছেন, ‘ধুন অওর গানা অচ্ছা হোগা তো পয়সে নেহি লেঙ্গে!’ এটা আমার কাছে বিরাট প্রাপ্তি!”
মুম্বইয়ে পাঁচ বছর হয়ে গেল। বলিউডি অভিষেক কবে হচ্ছে?
“সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে কথা হয়েছিল। কাজটা হয়েও যেত। কিন্তু এই কোভিড-এর জন্য হল না। তবে আমি জানি, নিশ্চয়ই কাজটা হবে। খুব শিগ্গিরই হবে। সঞ্জয় স্যর আমাকে একটা কথা বলেছিলেন, ‘রজত ম্যায় তুঝে ব্রেক নেহি দুঙ্গা, পয়সা দুঙ্গা’, কথাটা এখনও মনে আছে। আরেকটা কাজও হয়ে রয়েছে, সিনেমা কবে রিলিজ করবে জানি না। ছবির নাম ‘ওম মঙ্গলম, মঙ্গলম’। রকুল প্রীত সিং অভিনয় করছে।’’
মুম্বইয়ের মালাডে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন রজত। আর তাঁর মা এখনও রয়েছেন বসিরহাটে। তবে যাতায়াত রয়েছে।
এতগুলো ভাল খবরের মাঝে কোথাও কলকাতায় কাজ না পাওয়ার আক্ষেপ আছে?
“আক্ষেপ ছিল, ভীষণভাবে ছিল। তবে এখন বেশ কিছু অফার আসছে। জিতদা (Jeet) (অভিনেতা), পরমদার (Parambrata Bandyopadhyay) (অভিনেতা) সঙ্গে কাজের কথা চলছে। তবে এখনও কিছু ফাইনাল হয়নি,” বললেন রজত।
দাদা (বিশ্বনাথ বসু) কী বলছেন?
“দাদা ভীষণ খুশি। এই তো মুম্বইয়ে এসে থেকে গেল কিছুদিন। আমি তো দাদার সঙ্গেও কাজ করেছি। বিশ্বনাথদার একটা ইউটিউব চ্যানেল আছে, সেখানে একটা শো হয়, ‘মাসিমা মালপো খামু’—চ্যানেলের টাইটেল ট্র্যাক আমার করা।”
আর দাদা মানে বিশ্বনাথ বসু কী বলছেন, ভাইয়ের সাফল্যে?
“বসিরহাটের ছেলের জন্য মুম্বইতে পাড়ি দেওয়াই বিশাল পদক্ষেপ। এবং ও যে স্ট্রাগল করে আজ এরকম জায়গায় উঠে এসেছে, তার জন্য রজতকে সাধুবাদ জানাই। আমি ভীষণ গর্বিত।”
রজতের প্রিয়তম অভিনেতা কিন্তু দাদা। দাদার সঙ্গে কাজ করছেন, তবে তাঁর দ্বিতীয় পছন্দের অভিনেতা নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি। রজত বললেন, “একবার যদি মানুষটার সঙ্গে কাজ করতে পারি! উফ!”