‘এই সমস্ত রাজনৈতিক ফাঁদে পা দেওয়ার কোনও প্রয়োজন ছিল না’, শ্রাবন্তী-তনুশ্রী-পায়েলের উদ্দেশে বার্তা রূপাঞ্জনার
রবিবার বিজেপির তিন তারকাপ্রার্থী পায়েল সরকার, তনুশ্রী চক্রবর্তী এবং শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রমোদতরীতে রঙের উৎসবে মেতে ওঠেন তৃণমূল নেতা তথা আসন্ন নির্বাচনে কামারহাটির প্রার্থী মদন মিত্র। ‘মদনদা’র জনপ্রিয় গানের বোল ‘ওহ লাভলি’তে নাচতেও দেখা যায় তাঁদের। মদন মিত্রর ফেসবুক লাইভেও শেয়ার করা হয়েছিল সেই ভিডিয়ো। এর পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ফ্রেমে তিন নায়িকা এবং মদন মিত্রের ছবি ভাইরাল হতেই শুরু হয় বিতর্ক। পক্ষে-বিপক্ষে আসতে থাকে নানা মন্তব্য।
বিস্ফোরক রূপাঞ্জনা মিত্র। নিজের দলের তিন তারকা প্রার্থীর উপরেই ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। রূপাঞ্জনার প্রশ্ন, “রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যেখানে আমরা ১৪০ জন বিজেপি কর্মী হারিয়েছি সেখানে দাঁড়িয়ে ওই তিন অভিনেত্রীর কাজ কি দৃষ্টি নন্দন? ” ঠিক কী হয়েছে?
রবিবার বিজেপির তিন তারকাপ্রার্থী পায়েল সরকার, তনুশ্রী চক্রবর্তী এবং শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রমোদতরীতে রঙের উৎসবে মেতে ওঠেন তৃণমূল নেতা তথা আসন্ন নির্বাচনে কামারহাটির প্রার্থী মদন মিত্র। ‘মদনদা’র জনপ্রিয় গানের বোল ‘ওহ লাভলি’তে নাচতেও দেখা যায় তাঁদের। মদন মিত্রর ফেসবুক লাইভেও শেয়ার করা হয়েছিল সেই ভিডিয়ো। এর পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ফ্রেমে তিন নায়িকা এবং মদন মিত্রের ছবি ভাইরাল হতেই শুরু হয় বিতর্ক। পক্ষে-বিপক্ষে আসতে থাকে নানা মন্তব্য।
ফেসবুকে ওই ছবি শেয়ার করে একটি পোস্ট করেন রূপাঞ্জনাও। ওই সব ছবি শেয়ার করে তিনি লেখেন, “সত্যি ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। ছবিগুলো দেখে আমি বাকরুদ্ধ। স্লো ক্ল্যাপ।” Tv9 বাংলা যোগাযোগ করেছিল অভিনেত্রীর সঙ্গে। রাখঢাক না করেই রূপাঞ্জনার সোজাসাপ্টা উত্তর, “আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও রাজ্যের শীর্ষ স্থানীয় নেতা-নেত্রী-বিজেপি কর্মীরা যে হারে কষ্ট করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জীবনের বাজি রেখে দিন রাত এক করে সংকল্প বদ্ধ হয়ে সোনার বাংলা গড়ার জন্য পরিশ্রম করছে তাঁদের সৎ উদ্দেশ্য এত ঠুনকো নয়।” ওই তিন প্রার্থীর প্রতি তাঁর বক্তব্য, “এই সমস্ত রাজনৈতিক ফাঁদে পা দেওয়ার এই মুহূর্তে কোনও প্রয়োজনও ছিল না।”
পাল্টা মদন মিত্রের বক্তব্য, “আমাকে ডেকেছিল একটা এজেন্সি। দক্ষিণেশ্বরের ঘাটে অনুষ্ঠান করছে। আমি গিয়েছিলাম। দেবাংশু গিয়েছিল। ওখানে দোলের দিন গান তো হবেই। গান হল, নাচ হল, দোল খেলা হল। এটাই তো পশ্চিমবঙ্গের মানুষের হওয়া উচিৎ। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। দোল, দোলের জায়গায়।” যদিও রূপাঞ্জনার দাবি, তৃণমূল যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যর ‘খেলা হবে’ গানের ছন্দে ওই তিন নায়িকা পা মেলালেও ‘রঙ দে তু মোহে গেরুয়া’র সঙ্গে বিরোধী দলের প্রার্থীরা পা মেলাননি। তিনি বলেন, “সে সময় ওঁরা চুপ করে পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।” রূপাঞ্জনার সাফ বক্তব্য, “আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যেখানে আমরা ১৪০ জন বিজেপি কর্মী হারিয়েছি সেখানে দাঁড়িয়ে এই ফুটেজ একেবারেই দৃষ্টি নন্দন ছিল না।”
গোটা ঘটনায় তৃণমূল এবং বিজেপিকে আবার ‘বিজেমূল’ আখ্যা দিয়ে একহাত নিয়েছেন বাম ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রও। ফেসবুক পোস্টে ভাইরাল হওয়া ওই ছবি শেয়ার করে শ্রীলেখা লেখেন, “বিজেমূলের দোল চলছে বাংলার ক্রাশের সঙ্গে। ভালই… চালিয়ে যান আপনারা’। প্রসঙ্গত, এর আগে তৃণমূলের আসানসোল দক্ষিণের প্রার্থী সায়নী ঘোষ মদন মিত্রকে খোলা মঞ্চে ‘বাংলার ক্রাশ’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্র থেকে শ্রাবন্তী, বেহালা পূর্ব থেকে পায়েল এবং হাওড়ার শ্যামপুকুর কেন্দ্র থেকে বিজেপির হয়ে টিকিট পেয়েছেন অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তী। নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই দলের হয়ে জোরদার প্রচারে নেমেছেন রাজনীতির ময়দানে নতুন ওই তিন তারকা। অন্যদিকে রূপাঞ্জনা ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেন ২০১৯ সালে।
দোলের দিন মদন-শ্রাবন্তী-তনুশ্রী-পায়েলের এই ‘ফ্রেমবন্দী’ হওয়ার ঘটনায় কি জল গড়াবে বহুদূর? তা বলবে সময়।