পরিচালক রাম গোপাল ভার্মার (Ram Gopal Verma) হাত ধরে বলিউডে (Bollywood) প্রবেশ। রাতারাতি তাঁকে স্টার বানিয়েছিলেন আরজিভি-ই। প্রথম ছবি ‘সত্য়া’য় সাফল্য় আসার পর কেমন ছিল একাধিক জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ীর (Manoj Bajpayee) জীবন? সম্প্রতি সুচিত্রা ত্যাগীকে দেওয়া এক ইউবটিউব সাক্ষাৎকারে এমনটা জানিয়েছেন তিনি নিজেই। তাঁর প্রথম ছবি ‘সত্য়া’ (Satya)-য় গ্যাংস্টার ভিকু মহাত্রের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মনে একটা জায়গা তৈরি করে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তারপর তাঁর জীবনে নেমে এসেছিল অন্ধকার। কাজ পাচ্ছিলেন না। কারণ একটাই, তাঁর খুঁতখুঁতে স্বভাব। সবরকম চরিত্রে অভিনয় করতে একেবারেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন না মনোজ। ফলে কাজও পেতেন না। খুব স্বাভাবিকভাবেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছিলেন। সদ্য় সাফল্যের স্বাদ পাওয়া অভিনেতার কাছে কাজ না থাকলে যেমনটা হয় আর কী। সম্প্রতি নিজের জীবনের সেই অন্ধকার অধ্য়ায় নিয়ে মুখ খুললেন ‘ফ্য়ামিলি ম্যান’। কী বলছেন তিনি?
প্রথম ছবি বক্সঅফিসে সাড়া ফেলার পরই বলিউডের বড়-বড় সব প্রোডিউসারদের থেকে বহুমূল্যের অফার পেতে শুরু করেন। তবে তাঁদের প্রস্তাবে রাজি হননি অভিনেতা। মনোজের কথায়, “নামজাদা প্রোডিউসারদের কেউ-কেউ স্যুটকেস-ভর্তি টাকা নিয়েও আসতেন। তবে মনের মতো রোল না-পাওয়ায় তাঁদের সবাইকে ফিরিয়ে দিচ্ছিলাম।” এই ‘ফেরানোর’ জন্য় বলিউডে অনেক শত্রু বানিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। পকেটে পয়সা নেই, হাতে কাজ নেই—এ দিকে হাতের সামনে টাকা-ভর্তি স্য়ুটকেস। এহেন প্রস্তাবে না-করার সিন্ধান্ত সেই সময়ে দাঁড়িয়ে সহজ ব্যাপার ছিল না মোটেই। তবে টাকার সামনে কখনওই নতিস্বীকার করেননি মনোজ। নিজের সিন্ধান্তে অনড় ছিলেন যে, কোনও ‘অন্য়রকম’ চরিত্রে অভিনয় করবেন না। সেই সময় ইরফান খান, কে.কে মেননরা ইন্ডাস্ট্রিতে পা দিচ্ছেন এক-এক করে। এই নতুনদের ভিড়ে হারিয়ে যাবেন ভেবেছিলেন। তবে তা হয়নি। একের পর এক অসাধারণ ছবির মাধ্য়মে দর্শকের হৃদয় জয় করেছিলেন তিনি। পদ্মশ্রী পুরস্কার, জাতীয় পুরস্কারের একাধিক সাফল্যে পরিপূর্ণ তাঁর ঝুলি।
তবে একটা সময়ের পর সংসারের হাল ধরতে হয় তাঁকে। ফলে ইচ্ছের বিরুদ্ধেই বেশ কিছু ‘অন্য়রকম’ ছবিতে অপছন্দের চরিত্রে অভিনয় করতে বাধ্য হয়েছিলেন ‘ফ্যামিলি ম্যান’। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি কোনওদিন। তবে তাঁর সব সাফল্য়ের কৃতিত্ব তিনি একজনকেই দেন। তিনি আর কেউ নন, পরিচালক রাম গোপাল ভার্মা। এখনও যোগাযোগ রয়েছে তাঁর সঙ্গে আরজিভি-র। মনোজ জানায়, আরজিভি তাঁকে মাঝেমধ্য়ে ফোন করে গালিগালাজও করেন তাঁর কাজ নিয়ে। ভাল বন্ধু তাঁরা। জীবনের প্রথম পরিচালককেই তাঁর জীবনের সবথেকে বড় সমালোচক বলে আজও মনে করেন মনোজ।