Film Announcement: ‘আশা করিনি বাংলা থেকে কেউ এগিয়ে আসবেন’, টলিউডের প্রযোজক সম্পর্কে এ কী কথা বাঙালি পরিচালকের?
The Zebras: TV9 বাংলাকে অনীক জানিয়েছেন, তাঁর স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবের জমিতে পা রেখেছে। তিনি তৈরি করছেন তাঁর প্রথম হিন্দি ছবি। ছবির নাম 'দ্য জ়েব্রাস'।
বাংলা থেকে নয়, মুম্বই থেকেও নয়। বাঙালি পরিচালক অনীক চৌধুরীর প্রথম হিন্দি ছবির প্রযোজকরা দক্ষিণ ভারতীয়। বিগত কয়েক বছরে ভারতীয় ছবির মানচিত্রে বিরাট জায়গা করে নিয়েছে দক্ষিণ। বড় বাজেটের ছবি তৈরি করে বিপুল ব্যবসা করে চলেছে দক্ষিণ। বিগ বাজেট ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ থেকে শুরু করে ভিন্ন স্বাদের সমান্তরাল ছবি বা আর্ট হাউজ় ফিল্ম, দক্ষিণে এমন প্রযোজকও রয়েছেন, যাঁরা যে কোনও ছবির সঙ্গেই একাত্ম হয়ে যেতে পারেন। যে কোনও ধরনের এক্সপেরিমেন্টাল ছবি তৈরিতে অর্থ লগ্নি করার ক্ষেত্রে পিছপা হনন দক্ষিণী প্রযোজকেরা। সেই কারণেই ছবি তৈরির স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য গত বছর কেরল গিয়েছিলেন অনীক। TV9 বাংলাকে অনীক জানিয়েছেন, তাঁর সেই স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবের জমিতে পা রেখেছে। তিনি তৈরি করছেন তাঁর প্রথম হিন্দি ছবি। ছবির নাম ‘দ্য জ়েব্রাস’। অভিনয়ে বাংলার দুই অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকার ও উষা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং হিন্দির শারিব হাশমি (‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’, ‘ফিল্মিস্তান’, ‘বিক্রম বেদা’, ‘আফওয়া’, ‘তরলা’খ্যাত)।
কিছুদিন আগের একটি ঘটনা চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে। ওড়িশায় চালু হয়েছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-নির্ভর টিভি সঞ্চালকের কাজ। পরপর খবর আসে, কেবল ওড়িশা নয়, দেশের অন্য প্রান্তেও নিউজ় চ্যানেলগুলিতে খবর পড়ছে এআই সঞ্চালক। এআই এখন সর্বত্র। এবং এই এআই-ই অনীকের এই ছবির প্রধান উপজীব্য। একে ঘিরেই গল্প। ছবিটির প্রযোজক কেরলের অখিল মুরালি এবং আশিক মুরালি। কেরলের ইউলিন প্রযোজনা সংস্থা তৈরি করছে এই ছবি। কিন্তু হিন্দি ছবির প্রযোজক কেরলের কেন? বাংলা থেকেই বা কোনও প্রযোজক এগিয়ে এলেন না কেন, যখন টলিউডে প্রায়শই শোনা যায় ‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান’? জানতে চাওয়া হলে TV9 বাংলাকে অনীক বলেছেন, “আমি মুম্বইয়ের কাউকে অ্যাপ্রোচই করিনি। আর আশাও করিনি বাংলা থেকে কেউ এগিয়ে আসবেন। দক্ষিণ ভারতে গিয়েছিলাম প্রযোজক খুঁজতে। বেশ কিছুদিন সেখানে ছিলামও। অনেক মিটিং করেছি। তারপর এই ছবিটা করার জন্য প্রযোজক পাই।” কেমন দক্ষিণের সিনেমা নির্মাণের পরিবেশ? অনীকের উত্তর, “ওখানকার মানুষজন অনেকবেশি ওয়েলকামিং। ওরা অনেক বেশি পেশাদার এবং সিরিয়াস। অন্য কোথাও সেটা দেখিনি। প্রযোজকরা ছবিতে টিমমেটের মতো কাজ করেন। টাকাপয়সার হিসেবের চেয়েও ছবির গল্পকে প্রাধান্য দেন। সেটাই আমি চেয়েছিলাম।”
এর আগে কানের মতো আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়েছে অনীকের ছবি। তাঁর স্বল্প দৈর্ঘের ছবি ‘ঝারোক’ অস্কারের লাইব্রেরিতে স্থান পেয়েছে। ‘দ্য জ়েব্রাস’-এ প্রিয়াঙ্কা সরকারকে নেওয়ার কারণ হিসেবে অনীক বলেছেন, “এক অতি সাধারণ গ্রামের মেয়ে এবং অসাধারণ গ্ল্যামারাস নারীর চরিত্র—এই দুই ধরনের বৈপরীত্যেই সমানভাবে অভিনয় করতে পারেন প্রিয়াঙ্কা। ওর অনেক ধরনের কাজেই সেই প্রমাণ পেয়েছি। তাই-ই ওকে নেওয়া।” অন্যদিকে, শারিব হাশমির সঙ্গে অনেকদিন ধরেই কাজ করার পরিকল্পনা করছিলেন অনীক। এবার বাস্তবায়িত হয়েছে সাই স্বপ্ন। তাঁর সম্পর্কে অনীক বলেছেন, “খুব সার্পোটিভ অভিনেতা। আমার দরকার ছিল এমন কাউকে, যিনি নিজ জীবনেও প্রকৃতির কাছাকাছি।” এর আগে তাঁর অন্যান্য স্বল্প দৈর্ঘের ছবিগুলিতে অভিনয় করেছেন উষা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ছবিতেও তিনি রয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায়। অনীক বলেছেন, “ও শুরু থেকেই এই কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল। ওকে ছাড়া হত না।” সামনেই শুটিং। ছবি তৈরি করার জন্য অভিনব সেট তৈরি হবে দক্ষিণ ভারতে। সেখানে আর্ট ডিরেকশনের বড় ভূমিকা থাকবে, জানিয়েছেন পরিচালক।