কখনও তিনি দাদিসা আবার কখনও বা শুধুই দাদি। এনএসডি থেকে মুম্বই, থিয়েটারের মঞ্চ থেকে ফ্ল্যাশলাইটের ঝলকানি… দীর্ঘ ৭৫ বছরের জীবনে অভিনেতা সুরেখা সিক্রির ঝোলাভর্তি অভিজ্ঞতা। অথচ বালিকা বধুর অনস্ক্রিন কঠিন হৃদয় ‘দাদিসা’ নাকি ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন বছর ১৫-র এক আহ্লাদী তরুণী, যে তাঁর অপরিসীম প্রাণশক্তি দিয়ে মাতিয়ে রেখেছিলেন ‘বাধাই হো’র গোটা সেট… ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সেই সব স্মৃতিই ঝুলি থেকে এক্সক্লুসিভলি উজাড় করলেন ওই ছবিতে অভিনেত্রীর অনস্ক্রিন ছেলে গজরাজ রাও। সেই অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকল টিভিনাইন বাংলা।
২০১৮তে মুক্তি পেয়েছিল বাধাই হো। মুখ্য ভূমিকায় গজরাজ রাও এবং নীনা গুপ্তা। ছিলেন সুরেখা-আয়ুষ্মানও। এক মধ্যবয়সী দম্পতির হঠাৎই বেকায়দায় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যাওয়ার গল্প এবং পরবর্তী নানা ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ছবি। সুরেখা হয়েছিলেন গজরাজের মা। অভিনেতার কথায়, “কিশোরীর মতো প্রাণশক্তি ছিল ওঁর। নিজের কাজ নিয়ে, নিজের পেশা নিয়ে ওই বয়সেও এত মনোযোগী একজন অভিনেতা চোখে পড়ে না। সেটে প্রতিদিন হোমওয়ার্ক করে আসতেন সুরেখা জি।”
সিনেমায় একটি দৃশ্য ছিল যেখানে শাশুড়ি (সুরেখা) জানতে পারছেন নীনা (বৌমা) অন্তঃসত্ত্বা। মজার দৃশ্য। বাধাই হো দেখে থাকলে এই দৃশ্যতে সুরেখার অভিনয় আপনার মনে থাকবে। কিন্তু যত সহজে সেই দৃশ্য পৌঁছে গিয়েছে দর্শকের দরবারের, ব্যাক স্টোরি ততটা সহজ ছিল না। গজরাজ রাওয়ের কথায়, “বিরাট লম্বা একতি দৃশ্য ছিল। প্রায় তিন চার-পাতার। সমস্ত ডায়লগ মনে রেখেছেন উনি। একবারের জন্যও কিন্তু ভুলে যাননি। পরিচালক বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে টেক নিচ্ছিলেন। অথচ একবারের জন্য বিরক্ত হতে দেখিনি। বরং কীভাবে এক্সপেরিমেন্ট করা যেতে পারে, আরও কীভাবে চরিত্রটিকে উন্নত করা যেতে পারে তাই নিয়েই জিজ্ঞাসা করে যাচ্ছিলেন পরিচালককে। ভাবা যায়! এরকমটাই ছিলেন তিনি।”
সুরেখা সিক্রি নেই। রয়েছে তাঁর গুণমুগ্ধ ভক্ত। থাকবে তাঁর অভিনয় তাঁর সৃষ্টি। এনএসডি’র কৃতি ছাত্রী, নাসিরুদ্দিনের আত্মীয়া, সুঅভিনেত্রী, তিন বার জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছিলেন এই ‘তরুণী’। কী শিখলেন গজরাজ তাঁর অনস্ক্রিন মায়ের কাছ থেকে? এক মুহূর্ত না ভেবেই অভিনেতার উত্তর, “অত বড় একজন অভিনেতা। কিন্তু এখনও প্রতিটি দৃশ্যের জন্য রীতিমতো হোমওয়ার্ক করতেন তিনি। এটাই তো সবচেয়ে বড় শিক্ষা…”।
আরও পড়ুন-Surekha Sikri: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা, শোকস্তব্ধ শিল্পীমহল