কিছুদিন আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘটনা চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছিল। বাংলা বিভাগের স্নাতক স্তরে সদ্য ভর্তি হওয়া স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর ব়্যাগিংয়ে মৃ্ত্যু ঘটে পুরুষ হস্টেলে। শোনা যায়, কার্নিশে হাঁটতে গিয়ে নীচে পড়ে গিয়েছিলেন। নগ্ন অবস্থায় উদ্ধার হয় স্বপ্নদীপের নিথর দেহ। ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। এই ঘটনার পর অনেকেই নিজের ব়্যাগিংয়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছিলেন। সম্প্রতি তাঁর কলেজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন বলিউড অভিনেতা শক্তি কাপুর।
এফটিআইআই, অর্থাৎ ‘ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া’তে পড়তেন শক্তি কাপুর। তখন মিঠুন চক্রবর্তী ছিলেন তাঁর সিনিয়র। এদিন মিঠুন তাঁকে ঘণ্টার পর-ঘণ্টা ব়্যাগ করেছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে। ভয়াবহ ছিল সেই অভিজ্ঞতা। শক্তির চুল কেটে রাতের বেলায় তাঁকে একটি ঘরে বন্ধ করে রেখেছিলেন মিঠুন। শক্তিকে দয়া-ভিক্ষা করতে বাধ্য করেছিলেন মিঠুন।
এক পডকাস্ট অনুষ্ঠানে ছাত্র জীবনের এই অভিজ্ঞতার কথা শক্তি ভাগ করে নিয়েছিলেন অকপটে। সে সময় রাকেশ রোশনও ছিলেন এফটিআইআইয়ের ছাত্র। তাঁর সঙ্গেই হস্টেলে গিয়েছিলেন শক্তি। ঢুকেই দেখেন এক ব্যক্তি এক্সারসাইজ় করছেন। তিনি মিঠুন নাম বলে পরিচয় দিয়েছিলেন রাকেশকে। তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করেছিলেন। মিঠুনকে বিয়ার খাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন শক্তি। উত্তর এসেছিল, তিনি মদ্যপান করেন না।
রাকেশ চলে যাওয়ার পর শক্তির চুলের মুঠি ধরে মিঠুন বলেছিলেন, তিনি তাঁর সিনিয়র। তারপরই তাঁকে একটি ঘরে নিয়ে যান মিঠুন এবং কোণায় বসিয়ে রাখেন। সঙ্গে-সঙ্গে দু’জন বন্ধুকেও ডাকেন। ঘরের আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। কেবল শক্তির মুখের উপর ছিল আলো। জিজ্ঞেস করেন, “তুমি কি বিয়ার খাবে?”
শক্তি বলেন, “সেদিন ওরা বলে আমার চুল খুব ভাল। আমি নাকি কলেজে ঢুকেছি হিরোদের মতো। আমার চুল কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কাঁচি নিয়ে এসে আমার চুল কেটে দিয়েছিল ওরা। আমাকে বাদরের মতো দেখতে লাগছিল। আমি কাঁদতে শুরু করেছিলাম। ওদের পা ধরেছিলাম। তারপর আমাকে ওরা নিয়ে গিয়েছিল সুইমিং পুলে। ৪০টি ল্যাপ করতে বলেছিল। আমি তখনও কাঁদছিলাম। তারপর ওরা আমাকে ছেড়ে দেয়।”
সেদিন শক্তি ঘরে ঢোকার পর মিঠুন ফের ঘরে এসে তাঁর দরজায় টোকা দেন। বলেন, বাইরে থেকে আটকে দিচ্ছেন, যাতে পরবর্তী ব়্যাগিং রুখে দেওয়া যায়। না হলে তা চলতেই থাকবে।
কলেজ জীবনে মিথুনের সঙ্গে শক্তির এই তিক্ত অভিজ্ঞতা তাঁদের ভবিষ্যৎ পেশাদার জীবনে কোনও প্রভাব ফেলেনি। একসঙ্গে বহু ছবিতে কাজ করেছেন তাঁরা। ‘বাদল’, ‘পেয়ার কা কর্জ়’, ‘দালাল’, ‘গুন্ডা’ এবং ‘ক্রান্তিক্ষেত্র’।