
সন্তানের পিতা-মাতা হতে পারেননি ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা দম্পতি দিলীপ কুমার এবং সায়রাবানু। নিঃসন্তান জীবনের অপূর্ণতাকে ঢেকেছেন একে-অপরকে সম্বল করে। বারবার চেষ্টার পরও কেন সন্তানের মুখ দেখতে পেলেন না দিলীপ-সায়রা? সেই নির্মম দুঃখের কাহিনি চোখে জল এনে দিতে পারে।
৯৮ বছর বয়সে প্রয়াত হন দিলীপ কুমার। মৃত্যুর শেষদিন পর্যন্ত ‘বাবা’ ডাক শুনতে না পাওয়ার হতাশা প্রকাশ করে গিয়েছিলেন তিনি। তবে স্ত্রী সায়রাবানুর সেবা-যত্ন তাঁকে ভুলিয়ে রেখেছিল সব। সেই কথাও বারবারই নিজ মুখে স্বীকার করেছিলেন দিলীপ। তবে তাঁর জীবনে একবার ‘বাবা’ ডাক শোনার সুযোগ এসেছিল।
সেদিন আনন্দের অন্ত ছিল না পরিবারে। সায়রা দিলীপের কানে-কানে সুখবর দিয়ে বলেছিলেন যে, তিনি অন্তঃসত্ত্বা। আনন্দ সংবাদ শুনেই সকলকে মিষ্টি মুখ করিয়েছিলেন দিলীপ। সেই সময় দিলীপের বয়সও অনেকটাই হয়েছে। খুব আদরে রেখেছিলেন হবু মাকে। নিয়মিত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, খাওয়াদাওয়া, বাড়িতে আয়া, সায়রার মন ভাল রাখা–সবের দিকে খেয়াল রেখেছিলেন দিলীপ।
তারপর মাসের পর-মাস কেটে যায়। প্রথম তিনমাস কোনও কিছু বোঝেননি সায়রা-দিলীপ। বাড়ি থেকে বের হতেন না সায়রা। পরের তিন মাসও তাই। একটু-একটু করে গর্বে বেড়ে উঠছে তাঁদের সন্তান। ৮ মাস পেরিয়ে যায় দেখতে-দেখতে। একমাস গেলেই সায়রার কোল আলো করে আসবে সন্তান। কিন্তু ঈশ্বরের ইচ্ছে ছিল অন্য। ৮ মাস যাওয়ার পর সন্তান গর্ভেই মারা যায় সায়রা-দিলীপের। দিনটা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ভোলেননি দিলীপ।
জানা যায়, গর্ভাবস্থার শেষ মুহূর্তে সায়রা শরীরে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। রক্তচাপ মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গিয়েছিল তাঁর। যার ফলে মৃত্যু হয় গর্ভের সন্তানের। তাঁদের মা-বাবা হওয়ার সমস্ত আশাও শেষ হয়ে যায় সেই সঙ্গে। চিকিৎসক নির্মম সত্য়ের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন দিলীপ-সায়রাকে। বলেছিলেন যে, আর কোনওদিনও মা হতে পারবেন না সায়রা।
শাহরুখ খান এবং দিলীপ কুমার।
তবে বলিউড ‘বাদশাহ’ শাহরুখ খানকে সন্তানসম ভালবাসা দিয়েছিলেন দিলীপ-সায়রা। ‘অনাথ’ শাহরুখও দিলীপ কুমার এবং সায়রাবানুর মধ্যে নিজের ‘বাবা-মা’কে খুঁজেছিলেন। নিয়মিত দেখা করতেন তাঁদের সঙ্গে। এখনও স্বামী হারা সায়রার দেখভাল করেন শাহরুখ।