KK Tu Jo Mila: মুম্বইয়ে প্রীতম, সুদূর অস্ট্রেলিয়ায় ‘তু জো মিলা’ রেকর্ড কেকে-র, ‘বজরঙ্গী ভাইজান’-এর গান তৈরির নেপথ্য কাহিনি

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়

Jun 06, 2022 | 4:09 PM

KK And Pritam Tu Jo Mila Song Recording: 'তু জো মিলা' গানটা প্রয়াত গায়ক কেকে-র জীবনের অন্যতম জনপ্রিয় একটা গান। কিন্তু সেই গানটা কীভাবে রেকর্ড হয়েছিল, আপনি শুনলে অবাক হয়ে যাবেন।

Follow Us

“চোখ বন্ধ করলেই গানটা আমার কানে বাজছে…।”
গানটার নাম ‘তু জো মিলা’ (Tu Jo Mila)। গায়ক কেকে (KK) ওরফে কৃষ্ণকুমার কুন্নথ। আর বক্তা সলমন খান। ‘বজরঙ্গী ভাইজান’ (Bajrangi Bhaijaan) ছবির এই একটা গানে এমনই আচ্ছন্ন হয়েছিলেন বলিউডের ‘ভাইজান’। সে ঘোর এতটাই গুরুতর ছিল যে, ছোট্ট সাউন্ডট্র্যাকটাকে শেষমেশ একটা বড় গানের রূপ দিতে হয়।

মঙ্গলবার শহর কলকাতায় প্রয়াত হয়েছেন গায়ক কেকে। কিন্তু এই শহর, এই দেশের কাছে কেকে-র মৃত্যুর খবরটা যেন এখনও দুঃস্বপ্নের মতো। সঙ্গীতপ্রেমীরা এখনও শক-এ। কেকে নামটা যে নাইন্টিজ় কিডদের শিরায়-শিরায়, প্রতিটা পদে, প্রত্যেকটা মুহূর্তে। বন্ধুত্বে ‘পল’, প্রেমের প্রস্তাবে ‘জ়রা সি দিল মেঁ’, আর বিচ্ছেদে ‘তড়প-তড়প’… আবেগে-আনন্দে-বিষণ্ণতায় কেকে এভাবেই জড়িয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্মের সঙ্গে। সেই গলাটাই যখন সুরের আকাশে পাড়ি দেয়, হা-হুতাশ করা ছাড়া আর কী-ই বা উপায় থাকে।

কেকে-র মৃত্যুর পর তার পুরনো বিভিন্ন ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন করে ভাইরাল হচ্ছে। কেকে-র নাম পর্যন্ত শোনেননি যাঁরা, তাঁদের চোখের কোণও ভিজে যাচ্ছে সেই ভিডিয়োগুলো দেখে। আর ‘বজরঙ্গী ভাইজান’ ছবির সেই ‘তু জো মিলা’ গান তৈরির আসল ঘটনাটাও উঠে এল সেই পুরনো একটা ভিডিয়ো থেকেই।

‘তু জো মিলা’ গানটা কীভাবে তৈরি হয়েছিল, তা জানতে টাইমমেশিনে ফিরে যেতে হবে পাঁচ বছর আগে। ২০১৭ সালের এই জুন মাসেই রেডিয়ো সিটি ইন্ডিয়া-র আরজে সালিলকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ‘তু জো মিলা’ গানটার রেকর্ডিংয়ের গল্পটা বলেছিলেন কেকে। সে সময় এক মাসের জন্য সপরিবারে অস্ট্রেলিয়া বেড়াতে গিয়ছিলেন গায়ক।

কেকে নয়। প্রিয়বন্ধুকে ‘কিকস’ বলে ডাকতেন সুরকার প্রীতম। কেকে-র জীবনের বহু মূল্যবান গানের সুর দিয়েছিলেন তিনি। ‘অলবিদা’ থেকে শুরু করে ‘জ়ারা সি’… সে লম্বা তালিকা। কেকে তখন অস্ট্রেলিয়ার ব্লুমাউন্টেন থেকে সিডনির দিকে যাচ্ছিলেন। গভীর রাত তখন। ঠিক সেই সময়ই কেকে-র কাছে প্রীতমের ফোন আসে। প্রীতম ফোনে জিজ্ঞেস করেন, “কিকস তুই কোথায়?” ফোনের ওপার থেকে কেকে উত্তর দেন, “আমি এক মাসের জন্য অস্ট্রেলিয়ায়। কী হয়েছে? এত রাতে তুই ফোন করেছিস, কোনও সমস্যা?”

প্রীতমের সোজা উত্তর, “একটা গান রেকর্ড করতে হবে।” কেকে বলেন, “আমি তো এখনও অনেক দিন অস্ট্রেলিয়ায় থাকব।” প্রীতম পরিষ্কার বলেন, “আমি জানি এক মাস না হলে তোর ছুটি শেষ হয় না। কিন্তু গানটা এখনই রেকর্ড করা জরুরি। তুই অপেক্ষা কর, আমি দু’মিনিটের মধ্যে আবার ফোন করছি।” যথারীতি দু’মিনিট পর ফের প্রীতমের ফোন আসে। এবার সুরকার খানিক তাড়াহুড়ো মুডে গিয়ে বলেন, “গানটা তুই ওখানেই রেকর্ড করতে পারবি?”

কেকে-র মাথায় তখন বাজ পড়ার উপক্রম! ওই ফোন কলেই প্রীতমকে তিনি বলেন, “আমি এখানে কীভাবে গান রেকর্ড করব? কখন লাগবে?” উত্তরে প্রীতম জানান যে, সেই মুহূর্তেই তাঁর গানটা দরকার। কারণ, গানটা ছিল খুবই জরুরি। কেকে একপ্রকার বেঁকে বসেন। বলেন, “ব্লু মাউন্টেন থেকে সিডনি যেতেই আমার এখন আড়াই ঘণ্টা সময় লেগে যাবে। কীভাবে সম্ভব?” এ দিকে প্রীতমও নাছোড়বান্দা। তিনি যোগ করেন, “শোন, এটা খুব জরুরি একটা গান। আমি তোকে ইমেল করে গানের লিরিক্স, স্ক্র্যাচ ভার্সন – সবকিছুই পাঠিয়ে দিচ্ছি।”

কেকে-র মনে খানিক প্রশ্নের উদয় হয়। কী এমন জরুরি গান যে এখনই রেকর্ড করতে হবে? তিনি সরাসরি প্রীতমকে জিজ্ঞেস করেন, “কার সিনেমা, কী গান যা এখনই রেকর্ড করতে হবে?” উত্তরে প্রীতম জানান, এই গানটি কবীর খানের ছবির, সলমন খান রয়েছেন। কবীর খান, সলমন খান – এই নামগুলি যে কেবল জনপ্রিয়তার কারণে কেকে ফেরাতে পারবেন না, এমনটা নয়। পরিচালক কবীর খান ও কেকে একই কলেজে পড়াশোনা করেছেন, হরিহর আত্মা দু’জনে। তার থেকেও বড় কথা হল, ‘তু জো মিলা’ গানের সুর, কথা কেকে-র মাত্র একবার শোনার পরই ভাল লেগে গিয়েছিল।

অগত্যা কেকে রাজি হয়ে যান সুদূর অস্ট্রেলিয়াতে বসেই গানটা রেকর্ড করার জন্য। আর যেমন ভাবা তেমনই কাজ। কিন্তু সামনে সঙ্গীত পরিচালক নেই। তাঁর অনুপস্থিতিতে একটা এমন গুরুত্বপূর্ণ গান রেকর্ড করাটাও ছিল বেশ কঠিন কাজ। তাই কেকে গানের দু’টো করে লাইন গাইছিলেন, আর প্রীতমকে ফোন করে শোনাচ্ছিলেন। কিন্তু তাতে প্রীতম বড্ড বিরক্ত হচ্ছিলেন। সেই ভার্সনগুলো মোটেই তাঁর পছন্দ হচ্ছিল না। একপ্রকার ধমক দিয়েই কেকে-কে বলেন, “তুই যে ভাবে ‘জ়ারা সি’, ‘অলবিদা’ এই গানগুলো রেকর্ড করেছিস সে ভাবেই এই গানটাও রেকর্ড কর। আমি নেই তো কী হয়েছে। তুই অনুভব কর।”

ব্যস! ‘সাত সমুদ্র তেরো নদী’ পারেই রেকর্ড হল একটা হিন্দি ছবির গান। কোনও মিউজ়িশিয়ান নেই, লিরিসিস্ট নেই, নেই সঙ্গীত পরিচালকও। কেবল গায়ক ও তাঁর কণ্ঠ। অনেকেই হয়তো জানেন না যে, ‘তু জো মিলা’ গানটা প্রথমে এতটা বড় ছিল না। মাত্র একটা সাউন্ডট্র্যাক হিসেবেই গানটা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু কেকে-র কণ্ঠে যখন ওই ট্র্যাকটা কবীর খান এবং সলমন খান শোনেন, তখন তা যেন তাঁদের বুকে সপাটে ধাক্কা দেয়। সলমন পরিষ্কার বলেই দেন, এই গানটাই সব, এই গানটাই বারবার কানে বাজছে। আর সেই কারণেই কবীর খান সিদ্ধান্ত নেন, ‘তু জো মিলা’ গানটা আর কয়েক স্তবক বাড়ানো হবে। সেই মোতাবেক বাড়ানোও হয় গানটা। বাকি লাইনগুলো মুম্বই ফিরে রেকর্ড করেন কেকে।

বাকিটা ইতিহাস…।

“চোখ বন্ধ করলেই গানটা আমার কানে বাজছে…।”
গানটার নাম ‘তু জো মিলা’ (Tu Jo Mila)। গায়ক কেকে (KK) ওরফে কৃষ্ণকুমার কুন্নথ। আর বক্তা সলমন খান। ‘বজরঙ্গী ভাইজান’ (Bajrangi Bhaijaan) ছবির এই একটা গানে এমনই আচ্ছন্ন হয়েছিলেন বলিউডের ‘ভাইজান’। সে ঘোর এতটাই গুরুতর ছিল যে, ছোট্ট সাউন্ডট্র্যাকটাকে শেষমেশ একটা বড় গানের রূপ দিতে হয়।

মঙ্গলবার শহর কলকাতায় প্রয়াত হয়েছেন গায়ক কেকে। কিন্তু এই শহর, এই দেশের কাছে কেকে-র মৃত্যুর খবরটা যেন এখনও দুঃস্বপ্নের মতো। সঙ্গীতপ্রেমীরা এখনও শক-এ। কেকে নামটা যে নাইন্টিজ় কিডদের শিরায়-শিরায়, প্রতিটা পদে, প্রত্যেকটা মুহূর্তে। বন্ধুত্বে ‘পল’, প্রেমের প্রস্তাবে ‘জ়রা সি দিল মেঁ’, আর বিচ্ছেদে ‘তড়প-তড়প’… আবেগে-আনন্দে-বিষণ্ণতায় কেকে এভাবেই জড়িয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্মের সঙ্গে। সেই গলাটাই যখন সুরের আকাশে পাড়ি দেয়, হা-হুতাশ করা ছাড়া আর কী-ই বা উপায় থাকে।

কেকে-র মৃত্যুর পর তার পুরনো বিভিন্ন ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন করে ভাইরাল হচ্ছে। কেকে-র নাম পর্যন্ত শোনেননি যাঁরা, তাঁদের চোখের কোণও ভিজে যাচ্ছে সেই ভিডিয়োগুলো দেখে। আর ‘বজরঙ্গী ভাইজান’ ছবির সেই ‘তু জো মিলা’ গান তৈরির আসল ঘটনাটাও উঠে এল সেই পুরনো একটা ভিডিয়ো থেকেই।

‘তু জো মিলা’ গানটা কীভাবে তৈরি হয়েছিল, তা জানতে টাইমমেশিনে ফিরে যেতে হবে পাঁচ বছর আগে। ২০১৭ সালের এই জুন মাসেই রেডিয়ো সিটি ইন্ডিয়া-র আরজে সালিলকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ‘তু জো মিলা’ গানটার রেকর্ডিংয়ের গল্পটা বলেছিলেন কেকে। সে সময় এক মাসের জন্য সপরিবারে অস্ট্রেলিয়া বেড়াতে গিয়ছিলেন গায়ক।

কেকে নয়। প্রিয়বন্ধুকে ‘কিকস’ বলে ডাকতেন সুরকার প্রীতম। কেকে-র জীবনের বহু মূল্যবান গানের সুর দিয়েছিলেন তিনি। ‘অলবিদা’ থেকে শুরু করে ‘জ়ারা সি’… সে লম্বা তালিকা। কেকে তখন অস্ট্রেলিয়ার ব্লুমাউন্টেন থেকে সিডনির দিকে যাচ্ছিলেন। গভীর রাত তখন। ঠিক সেই সময়ই কেকে-র কাছে প্রীতমের ফোন আসে। প্রীতম ফোনে জিজ্ঞেস করেন, “কিকস তুই কোথায়?” ফোনের ওপার থেকে কেকে উত্তর দেন, “আমি এক মাসের জন্য অস্ট্রেলিয়ায়। কী হয়েছে? এত রাতে তুই ফোন করেছিস, কোনও সমস্যা?”

প্রীতমের সোজা উত্তর, “একটা গান রেকর্ড করতে হবে।” কেকে বলেন, “আমি তো এখনও অনেক দিন অস্ট্রেলিয়ায় থাকব।” প্রীতম পরিষ্কার বলেন, “আমি জানি এক মাস না হলে তোর ছুটি শেষ হয় না। কিন্তু গানটা এখনই রেকর্ড করা জরুরি। তুই অপেক্ষা কর, আমি দু’মিনিটের মধ্যে আবার ফোন করছি।” যথারীতি দু’মিনিট পর ফের প্রীতমের ফোন আসে। এবার সুরকার খানিক তাড়াহুড়ো মুডে গিয়ে বলেন, “গানটা তুই ওখানেই রেকর্ড করতে পারবি?”

কেকে-র মাথায় তখন বাজ পড়ার উপক্রম! ওই ফোন কলেই প্রীতমকে তিনি বলেন, “আমি এখানে কীভাবে গান রেকর্ড করব? কখন লাগবে?” উত্তরে প্রীতম জানান যে, সেই মুহূর্তেই তাঁর গানটা দরকার। কারণ, গানটা ছিল খুবই জরুরি। কেকে একপ্রকার বেঁকে বসেন। বলেন, “ব্লু মাউন্টেন থেকে সিডনি যেতেই আমার এখন আড়াই ঘণ্টা সময় লেগে যাবে। কীভাবে সম্ভব?” এ দিকে প্রীতমও নাছোড়বান্দা। তিনি যোগ করেন, “শোন, এটা খুব জরুরি একটা গান। আমি তোকে ইমেল করে গানের লিরিক্স, স্ক্র্যাচ ভার্সন – সবকিছুই পাঠিয়ে দিচ্ছি।”

কেকে-র মনে খানিক প্রশ্নের উদয় হয়। কী এমন জরুরি গান যে এখনই রেকর্ড করতে হবে? তিনি সরাসরি প্রীতমকে জিজ্ঞেস করেন, “কার সিনেমা, কী গান যা এখনই রেকর্ড করতে হবে?” উত্তরে প্রীতম জানান, এই গানটি কবীর খানের ছবির, সলমন খান রয়েছেন। কবীর খান, সলমন খান – এই নামগুলি যে কেবল জনপ্রিয়তার কারণে কেকে ফেরাতে পারবেন না, এমনটা নয়। পরিচালক কবীর খান ও কেকে একই কলেজে পড়াশোনা করেছেন, হরিহর আত্মা দু’জনে। তার থেকেও বড় কথা হল, ‘তু জো মিলা’ গানের সুর, কথা কেকে-র মাত্র একবার শোনার পরই ভাল লেগে গিয়েছিল।

অগত্যা কেকে রাজি হয়ে যান সুদূর অস্ট্রেলিয়াতে বসেই গানটা রেকর্ড করার জন্য। আর যেমন ভাবা তেমনই কাজ। কিন্তু সামনে সঙ্গীত পরিচালক নেই। তাঁর অনুপস্থিতিতে একটা এমন গুরুত্বপূর্ণ গান রেকর্ড করাটাও ছিল বেশ কঠিন কাজ। তাই কেকে গানের দু’টো করে লাইন গাইছিলেন, আর প্রীতমকে ফোন করে শোনাচ্ছিলেন। কিন্তু তাতে প্রীতম বড্ড বিরক্ত হচ্ছিলেন। সেই ভার্সনগুলো মোটেই তাঁর পছন্দ হচ্ছিল না। একপ্রকার ধমক দিয়েই কেকে-কে বলেন, “তুই যে ভাবে ‘জ়ারা সি’, ‘অলবিদা’ এই গানগুলো রেকর্ড করেছিস সে ভাবেই এই গানটাও রেকর্ড কর। আমি নেই তো কী হয়েছে। তুই অনুভব কর।”

ব্যস! ‘সাত সমুদ্র তেরো নদী’ পারেই রেকর্ড হল একটা হিন্দি ছবির গান। কোনও মিউজ়িশিয়ান নেই, লিরিসিস্ট নেই, নেই সঙ্গীত পরিচালকও। কেবল গায়ক ও তাঁর কণ্ঠ। অনেকেই হয়তো জানেন না যে, ‘তু জো মিলা’ গানটা প্রথমে এতটা বড় ছিল না। মাত্র একটা সাউন্ডট্র্যাক হিসেবেই গানটা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু কেকে-র কণ্ঠে যখন ওই ট্র্যাকটা কবীর খান এবং সলমন খান শোনেন, তখন তা যেন তাঁদের বুকে সপাটে ধাক্কা দেয়। সলমন পরিষ্কার বলেই দেন, এই গানটাই সব, এই গানটাই বারবার কানে বাজছে। আর সেই কারণেই কবীর খান সিদ্ধান্ত নেন, ‘তু জো মিলা’ গানটা আর কয়েক স্তবক বাড়ানো হবে। সেই মোতাবেক বাড়ানোও হয় গানটা। বাকি লাইনগুলো মুম্বই ফিরে রেকর্ড করেন কেকে।

বাকিটা ইতিহাস…।

Next Article