EXCLUSIVE BOLLYWOOD : মেদিনীপুর থেকে মালাড, বলিউডে নজর কাড়ছেন বাংলার শাহিদুর
শাহিদুর রহমান। 'ভাগ মিলখা ভাগ', 'কাবিল', 'বাটলা হাউস'- জনপ্রিয় বলিউড ফিল্মে নজরকাড়া অভিনয়। সম্প্রতি ওয়েবসিরিজ 'গ্রহণ'-এ নজর কেড়েছেন শাহিদুর। বাংলা ছবি অবশ্য ঝুলিতে এখনও একটা। দেবের সঙ্গে 'কিডন্যাপ'।
রক্তিম ঘোষ
কলকাতাঃ যোগাযোগটা ব্যাটে বলে ঠিক হচ্ছিল না। কখনও স্ক্রিপ্ট নিয়ে মিটিংয়ের দরুণ তাঁর ব্যস্ততা। কখনও ফোন নট রিচেবেল। হোয়াটসঅ্যাপে অবশ্য সে কথা জানালে, লাজুক অভিনেতা দুঃখিত বলছিলেন। অবশেষে লক্ষ্মীবার দুপুরে ধরা গেল শাহিদুর রহমানকে(Md. Sahidur Rahaman)। ‘ সময় কি সংক্ষেপ?’ বলতেই শাহিদুর রহমানের ফোনের ওপ্রান্ত থেকে উত্তর, ‘শুরু তো হোক !’ ইন্টারভিউ থামল ঠিক আড়াই ঘন্টা পর।
আর এই আড়াই ঘন্টায় শাহিদুরের সঙ্গে সফর করলাম মেদিনীপুরের কচুরি গ্রাম থেকে মুম্বইয়ে মালাডের ফ্ল্যাট পর্যন্ত। ভায়া শাসন, কাজিপাড়া স্কুল, সল্টলেক , রবীন্দ্রভারতী ও দিল্লি। সে এক লম্বা সফর বটে! আক্ষেপ, আনন্দ,যন্ত্রণা- সফরের এক একটা এমার্জেন্সি চেন। যেখানে সফর মাঝেমধ্যে থামছিল বিস্তারিতভাবে স্মৃতি হাতড়ানোয়।
শাহিদুর রহমান। ‘ভাগ মিলখা ভাগ'(bhag milkha bhag), ‘কাবিল'(kabil), ‘বাটলা হাউস'(batla house)– জনপ্রিয় বলিউড (bollywood)ফিল্মে নজরকাড়া অভিনয়। সম্প্রতি ওয়েবসিরিজ ‘গ্রহণ’-এ নজর কেড়েছেন শাহিদুর। বাংলা ছবি অবশ্য ঝুলিতে এখনও একটা। দেবের সঙ্গে ‘কিডন্যাপ’।
প্রথম স্টেশনঃ মেদিনীপুর জংশন-
শুরুটা কাঁথি ও খড়গপুরের মাঝে একটি ছোট্ট গ্রাম কচুরিতে। বাবা ছিলেন ডাকবিভাগের কর্মী। পরিবারে আরও দুই সদস্য মা ও দাদা।কাঁথিতে মামারবাড়ি। মামারবাড়িতে ৩ মামা আবার ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। দাদু ও তাঁর বাবাও ছিলেন আর্মিতে। তাই ছোট থেকেই মনে দেশাত্মবোধ জাগ্রত ছিল।স্বপ্ন ছিল সেনাবাহিনীতে চাকরি করার। ছোটবেলায় কাশ্মীর সমস্যা দেখে ছোট্ট শাহিদুর ভাবতেন, সেনাবাহিনীতে যোগ দিলে কাশ্মীর সমস্যা তিনিই মেটাতে পারবেন একা হাতে।
খুব ছোট বেলাতেই কচুরি ছেড়ে এবার শাসনের উদ্দেশ্যে রহমান পরিবার।
দ্বিতীয় স্টেশনঃ বারাসত ও মোহনবাগান প্রেম-
ছেলেদের ভালভাবে মানুষ করতে উত্তর ২৪ পরগণার শাসনে চলে আসেন শাহিদুরের বাবা। সেখানে ১ বছর কাটিয়ে বারাসতের বনমালিপুরে আসা। সেখানে কয়েকবছর কাটিয়ে বারাসতেই কাজিপাড়া অঞ্চলে বাড়ি কিনে চলে আসে শাহিদুরের পরিবার। কাজিপাড়া স্কুলে ভর্তি হন শাহিদুর। এবার এক অন্য লড়াই শুরু। কাজিপাড়া স্কুলে দুই ভাইয়ের ভর্তি হওয়া। সেই স্কুল থেকেই মাধ্যমিক। ছোট থেকে অভিনয়ের শখ ছিল। তবে কাজিপাড়া অঞ্চলে তেমন সুযোগ কই? ক্রিকেট, ফুটবল ছাড়া তো আর কিছুই হয়না পড়াশুনোর বাইরে!
বাড়িতে টিভি নেই। পাড়ার অন্য কোনও বাড়িতে বসে রামায়ণ, মহাভারত দেখা। এপিসোড দেখার পর লক্ষ্ণণ ও মেঘনাদকে মনে ধরেছিল শাহিদুরের। নিজেকে লক্ষ্ণণ, মেঘনাদ, কখনও হনুমানও সাজিয়েছেন নিজেকে। তবে পুরোটাই মনে মনে। রাম কেন সাজেননি? বাড়ির ছোটভাই তো, তাই মনে মনে লক্ষ্ণণই যেন হয়ে গিয়েছিলাম।
ক্লাস নাইনে প্রথমবার রাত জেগে ভিসিআরে সিনেমা দেখা। ফিল্ম ছিল বাজিগর। আর সেই বাজিগর দেখেই শাহরুখকে দেখে চিনতে পারেন শাহিদুর। আরে এতো সার্কাস সিনেমার সেই ছেলেটা। এইভাবেই শাহরুখকে কানেক্ট করেন শাহিদুর। ফিল্মে শাহরুখের মৃত্যু দেখে মুষড়ে পড়েন ছোট্ট শাহিদুর। সিনেমাটিক রিয়েলিজম তখন যেন আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে। পরের ৫দিন চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলেন শাহিদুর। ১৬ বছরেই শাহিদুরের স্বপ্ন দেখা শুরু, অভিনয় করবেন।
তখন দাদা ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে বুঁদ হয়েছিলেন। প্রস্তুতিও শুরু হয়েছিল। একসময় কলকাতার এরিয়ান ক্লাবের অনুশীলন করেছিলেন দাদা। দাদার পাশাপাশি খেলা নিয়েও প্রেম বাড়তে থাকে শাহিদুরের। পাড়ায় মুর্শিদ আলি নামে এক জাতীয় ফুটবলারকে দেখে শাহিদুরের ভাল লাগে। অন্যদিকে বাবার অফিসে সহকর্মী ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার সত্যজিৎ চ্যাটার্জির বাবা। সেই গল্প শুনে মনে মনে মোহনবাগানের ফ্যান হয়ে গিয়েছিলেন শাহিদুর।
তৃতীয় স্টেশনঃ সল্টলেক –
এরপর একটু বড় হওয়ার পর কাজিপাড়ার সংসার গুটিয়ে সল্টলেকে কোয়ার্টারে ওঠে রহমান পরিবার। শাহিদুর ভর্তি হন জয়পুরিয়া সান্ধ্য কলেজে। অভিনয় শখ তখন জাঁকিয়ে বসেছে শাহিদুরের জীবনে। জয়পুরিয়া কলেজের ইউনিয়নে শাহিদুর সিনিয়র দাদাদের কাছে আবদার করেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাঁকে যেন অভিনয়ের সুযোগ করে দেওয়া হয়। সেবছর জয়পুরিয়া কলেজের ৫০ বছর। জাঁকজমক অনুষ্ঠান হলেও কোনও নাটক হয়নি।
এরপর মাঝপথে কলেজ বদল করে গুরুদাস কলেজে ভর্তি হওয়া। অভিনয় শখের পাশাপাশি এবার ক্রিকেটে ভর্তি হন শাহিদুর বেলেঘাটা ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টসে ভর্তি হওয়া ক্রিকেটের পাঠ নিতে। ব্যাটিং সঙ্গে স্পিন বোলিং- চলছিল শাহিদুরের ক্রিকেটজীবনও। তবে সে জীবন বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। অভিনয়ই যে তাঁর স্বপ্ন ছিল! কলেজজীবনে তাঁর দুটি প্রেম ছিল। এক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। দুই, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
চতুর্থ স্টেশনঃ রবীন্দ্রভারতী আর নাটক চর্চা-
অভিনয়ের প্রথম পাঠ তরঙ্গে। দায়িত্বে ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কন্যা পৌলমী। পাশাপাশি ভাষায় চোস্ত হতে গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনে ভর্তি। মনোহর আইচের আখড়ায় চলছিল শরীর চর্চা। এরপর নাটকের অভিনয় জীবন। লোককৃষ্টি দলে অভিনয়ের সুযোগ। এরপর শেখর সমাদ্দারের হাত ধরে অন্য নাটকের দল। ভর্তি হলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার ডিপার্টমেন্টে। তখন থেকেই এনএসডির স্বপ্ন দেখা শুরু। একবার স্বপ্নে তো এনএসডিও ঘুরে এসেছিলেন শাহিদুর। ভোরের স্বপ্নে। কলকাতার এক নাটক দলের হয়ে এনএসডিতে শো করতে যান। এরপর কলকাতায় ফেরার ২ বছর পর এনএসডি পরীক্ষা বসলেন। ২ বার বিফল হন শাহিদুর।
প্রথমবার পরীক্ষায় বসার আগে রবীন্দ্রভারতীতে অভিনেতা মনোজ মিত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ। অভয় দিলেন, এনএসডিতে তুমি ভর্তি হবেই। ‘তোমার হয়ে যাবে’-এটাই যেন আত্মবিশ্বাস কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল শাহিদুরের।
পঞ্চম স্টেশনঃ এনএসডি ভায়া হিমাচল প্রদেশ-
১৯৯৭ সালে মিঠুন চক্রবর্তী ‘সিনেমায় নামতে হলে’ বই একরাতে শেষ করেছিলেন শাহিদুর। রুপোলি পর্দা মুখ দেখানোর রাস্তাটা যে রুক্ষ, তা বুঝতে শুরু করেছিলেন শাহিদুর। ২ বার এনএসডির পরীক্ষা বিফলে যাওয়ার পর হিন্দি ভাষা আরও রপ্ত করতে পাড়ি দিলেন হিমাচল প্রদেশের একটি প্রতিষ্ঠানে। ১ বছরের কোর্স।
হিন্দি ভাষা রপ্ত করার সঙ্গে সঙ্গে চলছে এনএসডির প্রস্তুতি। আবার। অবশেষে সফল হওয়া। শাহিদুরের ভাঙা মনকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল পল কোয়েলহোর ‘অ্যালকেমিস্ট’ বইটি।
ষষ্ঠ স্টেশনঃ এনএসডি থেকে ভাগ মিলখা ভাগ-
এনএসডিতে অভিনয়ের কোর্সের মাঝেই দক্ষিণ ভারতীয় ফিল্মে অভিনয়ের সুযোগ। ইউটিউবে নিজের স্টিল ছবির কোলাজ পোস্ট করেন।সেখান থেকেই দক্ষিণ ভারতীয় ফিল্মে ডাক।যেই ফিল্মের হিরো ছিলেন নাগার্জুন পুত্র। পড়তে পড়তে অভিনয় করা এনএসডির নিয়ম বহির্ভূত। তাই সেই ইচ্ছাকে দমন করলেন শাহিদুর। রাজ বব্বরের পর এনএসডি থেকে পাশ করে তিনিই হবেন বলিউডের পরবর্তী হিরো-এমন স্বপ্ন দেখতেন । তবে কোর্সের ২ বছরের মাথায় সেই স্টারডম প্রেম চলে যায় শাহিদুরের।
পাশ করে দিল্লিতে থেকে গেলেন শাহিদুর। রাজধানীতে রেপোর্টারি থিয়েটারে অভিনয় শুরু করেন শাহিদুর। নজরে পড়েন ‘লাইফ অফ পাই’-য়ের কাস্টিং ডিরেক্টর দিলীপ শঙ্করের।
২০১১ সালে হলিউডের পরিচালক টড ফিল্ড, ‘হোয়াইট টাইগার’ উপন্যাস অবলম্বনে ভারত ও হলিউডের যৌথ উদ্যোগে একটি ফিল্ম বানানোর পরিকল্পনা নেন। ‘স্লামডগ মিলেনিয়ার’-এর পর। সেখানে ডাক পান শাহিদুর। সেই সময়েই কলকাতা থেকে একটি টেলিসিরিয়ালেও ডাক পান তিনি। বেছে নেন টড ফিল্ডের সিনেমাই।৩ দিন শ্যুটিংয়ের পরই বন্ধ হয়ে যায় সেই সিনেমা তৈরির কাজ। আবার অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ান শাহিদুর।
তারপরেই ‘ভাগ মিলখা ভাগ’-য়ের জন্য ডাক পান। মিলখা সিংহের নামভূমিকার জন্য তাঁকে অডিশনে ডাকা হয়। লুক টেস্টও হয পরিচালক রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা জানান, তৈরি থাকো। তবে কয়েকদিন পর ইন্টারনেটে দেখে দাদা শাহিদুরকে জানান, মিলখা হচ্ছেন ফারহান আখতার। ঠিক তারপরেই রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার অফিস থেকে ফোন। মিলখার চরিত্র না হলেও তিনি ফিল্মে থাকবেন। প্রথমে শাহিদুরের পছন্দ ছিল আব্দুল খালিকের চরিত্র। পরিচালক বলেন, শের সিংহ রানার চরিত্র করতে হবে শাহিদুরকে। সেই শুরু হল বলিউডে পা দেওয়া। চেহারায় আনতে হল বদল। বাড়ালেন ওজন।
শেষদিন শ্যুটিংয়ের পর মু্ম্বইয়ের বিমানবন্দরে বসেছিলেন শাহিদুর। ফোন এল ‘ভাগ মিলখা ভাগ’য়ের সিনেমাটোগ্রাফার বিনোদ প্রধানের। পরিচালক তনুজা চন্দ্রের ফিল্মের জন্য অফার দিলেন। অবশেষে সেই ফিল্ম আর হয়নি।
সপ্তম স্টেশনঃ কাবিলে সুযোগ-
ভাগ মিলখা ভাগের পর কাস্টিং ডিরেক্টর মুকেশ ছাবরার সঙ্গে যোগাযোগ। যিনি সুশান্ত সিং রাজপুতের শেষ ফিল্ম ‘দিল বেচারা’-র পরিচালকও বটে। কাজের আলোচনার মাঝেই চলছিল অডিশন। ‘রইস’-য়ের জন্যও অডিশন হয়। তবে তা চূড়ান্ত হয়নি।
এর মাঝেই মুকেশ ছাবরার অফিস থেকে ফোন। তখন মুম্বইতেই ছিলেন শাহিদুর। অফিসে যাওয়ার পরেই পরিচালক সঞ্জয় গুপ্তার কাছে নিয়ে যান মুকেশ ছাবরার অ্যাসিসটেন্ট গৌরব। চূড়ান্ত হয়ে গেল ‘কাবিল’-এ শাহিদুরের কাজ। ওয়াসিমের চরিত্রে চূড়ান্ত হলেন শাহিদুর।
দার্জিলিংয়ে শ্যুটিংয়ের মাঝেই কাবিলের জন্য ডাক পান শাহিদুর। হৃত্বিক রোশনের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার। হৃত্বিককে দেখে শাহিদুরের মন্তব্য, ‘তোমার সঙ্গে কাজ করা স্বপ্নের মত।’
অষ্টম স্টেশনঃ দেবের সঙ্গে ‘কিডন্যাপ’-
কাবিলের শ্যুটিংয়ের মাঝেই কলকাতা থেকে ডাক। তার আগে একটা বাংলা ওয়েব সিরিজে কাজ করেছিলাম। সেই দেখেই কলকাতা থেকে ফের ডাক।‘কিডন্যাপ’ ফিল্মের ডাক। মূল ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। নাম ভাস্কর। শ্যুটিংয়ের মাঝে দেবের সঙ্গে আড্ডা। বাংলা ফিল্ম থেকে বলিউড-আলোচনায় উঠে আসত সব কিছু।
নবম স্টেশনঃ দিল্লি থিয়েটার থেকে বাটলা হাউস –
রাজধানীতে এরপর চুটিয়ে থিয়েটার। এর মাঝেই ‘বাটলা হাউস’-এর পরিচালক নিখিল আডবাণীর ফোন। ‘কি করছিস দিল্লিতে, মুম্বইয়ে আয়!’- ফোনের ওপ্রান্ত থেকে বললেন নিখিল আডবাণী। ‘বাটলা হাউস’য়ের শ্যুটিং শুরু হল । চরিত্রের নাম দিলশাদ আহমেদ। নজর কাড়লেন শাহিদুর। নিখিল আডবাণীই অফার দিয়েছিলেন মুঘল সম্রাট বাবরকে নিয়ে পিরিয়ড ফিল্ম বানানোর। নামভূমিকায় ভাবা হয়েছিল শাহিদুরকে। শেষপর্যন্ত বাদ পড়েন শাহিদুর। যেই ফিল্মের ট্রেলার ইতিমধ্যেই লঞ্চ করেছে।
দশম স্টেশনঃ ওয়েব সিরিজ অভিযান-
এরপরেই যশরাজ ফিল্মের জন্য অক্ষয় কুমারের সঙ্গে পৃথ্বিরাজের শ্যুটিং। আরেকটা ব্রেক। যা রিলিজ করবে শীঘ্রই।কুতুবদ্দিন আইবকের চরিত্রে রয়েছেন শাহিদুর। আর সদ্য রিলিজ করা ‘তুফান’-য়েও সুযোগ। তবে ফারহানের সঙ্গে আরও একবার শ্যুটিংয়ের আগেই বিপত্তি। বক্সিং ট্রেনিংয়ের সময় চোট। ‘তুফান’-এর স্বপ্ন শেষ হল শাহিদুরের।
এর মাঝেই ডাক ‘গ্রহণ ‘ সিরিজে ডাক। সেবারও ডাক এল মুকেশ ছাবরার অফিস থেকেই। ডিএসপি বিকাশ মন্ডলের চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ। সেই অভিনয় প্রশংসিত হচ্ছে সবমহলে।চরিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য উত্তরপ্রদেশের পুলিশকর্তা অভিষেক যাদবকে দেখে নিজেকে তৈরি করেন শাহিদুর। ইউটিউবে আইপিএস অফিসারদের ট্রেনিং, তাঁদের অ্যাটাটিউড খুঁটিয়ে দেখা শুরু। সঙ্গে বিহারের ভাষাকে রপ্ত করতে বিহারী বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা। লালুপ্রসাদ যাদব, নীতিশ কুমারের মত নেতাদের ভিডিও দেখা। সেই ভাষা শেখার জন্য ভাষাকে রপ্ত করতে বাড়ির সঙ্গেই কথা বলা বন্ধ করে দেন। যাতে বাংলায় কথা বলতে না হয়।
টুকরো গল্পঃ ডায়েরির পাতার ঋত্বিক ও আক্ষেপ-
কলকাতায় তখন থিয়েটার করছেন। একজন স্ট্রাগলিং করা অভিনেতা। নাটক করতে করতেই অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তীর সঙ্গে আলাপ। গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। শাহিদুরের ডায়েরির পাতায় আজও জ্বলজ্বল করছে ঋত্বিকের নাম। সাক্ষাৎকারের মাঝে শাহিদুরের প্রশ্ন, ‘কেমন আছে ঋত্বিক?’ পুরনো বন্ধুর সঙ্গে কলকাতায় এলে দেখা করতে চান বলিউডে নজরকাড়া এই অভিনেতা।
আক্ষেপ একটাই, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। একসময় স্বপ্ন দেখছিলেন কাজী নজরুল ইসলামের জীবন নিয়ে নাটক করবেন। বিদ্রোহী কবি জীবনের শেষলগ্নে কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন। সেই কথা না বলা বিদ্রোহী কবির চরিত্রে অভিনয় করানোর স্বপ্ন দেখতেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শাহিদুরের সেই স্বপ্নের প্রজেক্ট আপাতত তোলা রয়েছে। আরও একটা স্বপ্ন মনে পুষে রেখেছেন শাহিদুর। বাংলায় একদিন সিরাজদৌল্লাকে নিয়ে নাটক হবে। যাঁর নাম ভূমিকায় অভিনয় করতে চান কাবিলের ওয়াসিম।