মিটতে চলেছে কি তবে বিবাদ? অভিনেতা নওয়াজ়উদ্দিন সিদ্দিকি ও তাঁর স্ত্রী আলিয়ার বচসা বারে-বারে খবরের শিরোনামে জায়গা করে নেয়। তবে কি একে অন্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগার পালা ইতি? সমঝোতার পথেই হাঁটতে চান অভিনেতা? বিটাউন সূত্রে এবার তেমনই খবর চর্চায়। বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না অভিনেতা নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকীর। স্ত্রী আলিয়া তাঁর বিরুদ্ধে বিগত কয়েকমাস ধরেই আওয়াজ তুলেছেন। তালিকা থেকে বাদ পড়েননি আপন ভাই শামাস নবাব সিদ্দিকীও। দাদাকে নিয়ে চাঁচাছোলা ভাষায় বক্তব্য তাঁর। শামাসের দাবি, কাছের মানুষকে দূরে ঠেলে দেওয়াই নাকি স্বভাব নওয়াজের। একই সঙ্গে বৌদির পক্ষও নিয়েছেন তিনি।
শামাস জানান, নওয়াজের খুব ভাল বন্ধু ছিলেন আলিয়া। নওয়াজের স্ত্রী এতদিন ধরে সত্যিই অনেক কিছু সহ্য করেছেন। শামাস নিজেও পরিচালক। কিন্তু দাদাকে পরিচালনা করতে গিয়ে তাঁকে যে এমন অবস্থার মধ্যে পড়তে হবে তা তিনি নিজেও ভাবেননি। শামাসের কথায়, “আমি অনেক টিভি শো করেছি। নওয়াজ একদিন আমায় হঠাৎই বল ওর সঙ্গে কাজ করতে। আমি রাজি হইনি প্রথমে। কিন্তু ২০১৯ সালে আমি যখন আমার ছবি ‘বোলে চুড়িয়া’ পরিচালনা করতে যাব তখন প্রযোজক বলে আমার ছবিতে ওকে নিতে। আমি কিন্তু নিতে চাইনি। কিন্তু প্রযোজক বলায় আর না করতে পারিনি।”
কিন্তু ওই ছবি আর করা হয়নি শামাসের, এ কারণে তিনি অবশ্য দায়ী করেছেন তাঁর দাদাকে। শামাস বলেছিলেন, “যখন এডিটিয়ের সময় আসে তখন নওয়াজ হঠাৎই প্রযোজকদের বলে ও টাকা না পাওয়া পর্যন্ত আর কাজ করবে না। আমি অবাক হয়ে যাই, বারবার মনে হতে থাকে, কেন আমার সঙ্গে এরকম হল? কেন আমার নিজের রক্তের সম্পর্কই আমার পাশে নেই। ছবি বন্ধ হয়ে যায়। আমি ওই ছবির জন্য অনেক কিছু করেছিলাম। ওর জন্যই আমার ছবি আর হল না।” এরপরেই নওয়াজের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ কমতে শুরু করে বলে দাবি শামাসের। শামাসের দাবি, নওয়াজ নাকি দেখাতে চান তিনিই সর্বেসর্বা। এতো গেল ভাইয়ের মত, আর স্ত্রী আলিয়া বারে বারে অভিনেতার চরিত্র নিয়ে কথা বলেছেন।
प्रिये भाई #NawazuddinSiddiqui ये भी एलीगेशन नहीं इमोशंस हैं pic.twitter.com/89B9sWH5gy
— Shamas Nawab Siddiqui (@ShamasSiddiqui) March 26, 2023
তবে একতরফা কেবল শুনে যাওয়া নয়। এরপরই একাধিক মিথ্যা অভিযোগে না কি নষ্ট হয়েছে তাঁর ইমেজ়। তাই ভাই ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন নওয়াজ। এখানেই শেষ নয়, ক্ষতিপূরণ বাবদ চেয়েছিলেন ১০০ কোটি টাকা। তবে চুপ থাকেননি ভাই শামাস। লম্বা একটি অভিযোগের তালিকা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে আসেন তিনি ২৬ মার্চ। যেখানে লেখা থাকে, এর আগেও নাকি এক সংস্থার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন অভিনেতা। তাতেও তেমন কিছু সুবিধে হয়নি নওয়াজ়ের। শামাসের কেরিয়ার জীবনের দীর্ঘ ১১ বছর নাকি নষ্ট করেছেন নওয়াজ়। তা ছাড়াও বহুবিবাহ ও যৌন হেনস্থার অভিযোগও এদিন তোলা হয় নওয়াজ়ের বিরুদ্ধে। লকডাউনে লুকিয়ে নওয়াজ় বিয়েও করেছিলেন বলে ভাইয়ের দাবি। সন্তাসম্ভবা বৌদিকে লাথি মারার মতো গর্হিত কাজও নাকি করেছেন বলিউড অভিনেতা, স্পস্ট জানান শামাস।
এখানেই থেমে থাকা নয়। নওয়াজ়ের বিরুদ্ধে একাধিক ‘মিটু’ অভিযোগের কথাও উল্লেখ করেছেন তাঁর শামাস। এরপরই কি উল্টো সুর নওয়াজ়ের কণ্ঠে! ১০০ কোটির মামলা নাকি তুলে নিতে রাজি রয়েছেন নওয়াজ়উদ্দিন সিদ্দিকি। তবে এখবর নতুন নয়, নওয়াজ ২৩ মার্চই প্রথম দফার চিঠি পাঠিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন তিনি স্ত্রীর সঙ্গে সমঝোতার পথে যেতে রাজি। তবে শর্ত সাপেক্ষে নিজের একটি দাবি জানান নওয়াজ়। তাঁর সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে। শারীরিকভাবে সন্তানদের বহুদিন দেখেননি তিনি। তাই স্ত্রী আলিয়ার আইনজীবীকে চিঠিও পাঠান নওয়াজ়। একবার নয়, চিঠি গিয়েছে দুইবার। ঘটনা বিস্তারে সামনে এনেছেন আলিয়ার আইনজীবী। তবে তিনি জানান, তাঁর মক্কেল আলিয়ার সঙ্গে এখনও কথা হয়নি। ফলে আগামীতে কী সিদ্ধান্ত হতে চলেছে তা নিয়ে ধোঁয়াশায় অভিনেতা।