সালটা ১৯৮৮। রাজ কাপুর (Raj Kapoor) দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। ২ মে, রাজ কাপুর দিল্লি পৌঁছেছিলেন। হঠাৎই প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু, অনুষ্ঠানে যাওয়ার জেদ দ্রুতি দিয়েছে তাঁর মনোবলে। নিঃশ্বাসের এতটাই সমস্যা হল যে শেষ পর্যন্ত অক্সিজেন মাস্ক নিয়েই, ধবধবে সাদা স্যুট পরে দর্শকের আসনে গিয়ে বসলেন। সাথে তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা রাজ।
যদিও, নিজের পুরস্কার নেওয়ার সময় তিনি স্টেজে উঠতে পারলেন না। তখনই ঘটল সেই স্মরণীয় ঘটনা। ভারতের অষ্টম রাষ্ট্রপতি রামাস্বামী ভেঙ্কটরামাণ (Ramaswamy Venkataraman) নিজে এলেন রাজ কাপুরের সামনে। ভারতের রাষ্ট্রপতি মাটিতে হাঁটু ঠেকিয়ে রাজ কাপুরকে তাঁর প্রাপ্য সম্মানে ভূষিত করেন। এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে থেকেছিল ভারতীয় চলচ্চিত্র।
পরবর্তীকালে রাজ কাপুরের মেয়ে রিমা জৈন (Rima Jain) ফিল্মফেয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঘটনার বিবরণে বলেন, ‘ আমার মনে হয় বাবা নিজের মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছিলেন। সেবার যখন তিনি দিল্লি পৌঁছেছিলেন, দিল্লিতে ধূলিঝড় হয়েছিল। ২ তারিখ যখন প্লেনের দরজা খোলে তখন বেশ কিছুটা ধুলো বাবার শরীরে যায়। অ্যাসথামার রোগী হওয়ার কারণে আরও ভয়াবহ কিছু হতে পারত। ওই ধুলো খুব বাজে ভাবে বাবার ফুসফুসকে আক্রান্ত করেছিল। পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই প্রচণ্ড অস্বস্তি বোধ করছিলেন তিনি।’
কাপুর বংশ তিনটে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পেয়েছে। প্রথমে পৃথ্বীরাজ কাপুর (Prithviraj Kapoor), তারপর তাঁর ছেলে রাজ কাপুর (Raj Kapoor)। তারও পরে তাঁর নাতি শশি কাপুর (Shashi Kapoor)-কে এই মঞ্চে নিদারুণ কীর্তির জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
এর ঠিক পরপরই ২ রা জুন, ১৯৮৮ তে মারা যান রাজ কাপুর। ওই ঘটনার পর থেকেই বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। রিমা জৈন বলেন, ‘কোন একদিক দিয়ে সেই রাতের ঘটনার মধ্যে দিয়েই বাবা আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছিলেন…আর বেশিদিন না!’