পর্ন ভিডিয়ো তৈরি এবং একটি নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে তা দেখানোর অভিযোগে গত ১৯ জুলাই গ্রেফতার হয়েছিলেন বলি অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টির স্বামী তথা ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রা। রাজ মামলায় সদ্য একটি সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিট ফাইল করল মুম্বই পুলিশ। সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ বুধবার মুম্বই ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে রাজের বিরুদ্ধে ১৫০০ পাতার ওই চার্জশিট পেশ করা হয়েছে।
এই মামলায় গত এপ্রিলে প্রথম চার্জশিট গঠন করে পুলিশ। সে সময় পর্ন ভিডিয়ো তৈরি এবং অ্যাপের মাধ্যমে তা দেখানোর অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন নয় ব্যক্তি। পরে তদন্তে উঠে আসে আরও দুই অভিযুক্তের নাম। তার মধ্যে একজন রাজ। দুজনকেই গ্রেফতার করা হয় বলে খবর। চলতি বছরের শুরুতে মুম্বইয়ের মালাড পুলিশ মাড আইল্যান্ডের একটি বাংলোতে হঠাৎই তল্লাশি চালায়। ওই বাংলোতে পর্ন ফিল্মের শুটিং হচ্ছিল বলে খবর। সে সময় পরিচালক, অভিনেতা এবং টেকনিক্যাল কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ তদন্তে জানতে পারে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির কিছু শিল্পী এই ব্যবসায় জড়িত।
মাস খানেক আগেই মুম্বই পুলিশ জানিয়েছিল, জামিনে রাজ মুক্ত হলে সমাজের কাছে ভুল বার্তা যাবে। দিন কয়েক আগে আদালতে সেই বক্তব্য পুলিশের তরফে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে বলে খবর। শুধু তাই নয়, জামিনে মুক্ত হলে রাজ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পুলিশ। জামিনে মুক্ত হলে রাজ আবার একই ধরনের ভিডিয়ো তৈরির চেষ্টা করতে পারেন বলেও আশঙ্কা পুলিশের। যে ধরনের ভিডিয়ো তৈরি ভারতের আইন অনুযায়ী অপরাঝ বলে গণ্য করা হয়। ফলে সমাজের প্রতি অত্যন্ত ভুল বার্তা যেতে পারে। পাশাপাশি জামিনে মুক্ত হলে রাজের প্রদীপ বক্সি নামের যে আত্মীয় দেশের বাইরে থাকেন, তাঁর সঙ্গে মিলিত হয়ে প্রমাণ লোপাটেরও চেষ্টা করতে পারেন বলে মনে করেছে পুলিশ।
রাজের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব রয়েছে। তা প্রমাণ হিসেবে দেখিয়েই রাজের আইনজীবিরা তাঁর জামিনের আবেদন করেন। সেই আবেদনে বলা হয়, শুধুমাত্র অনুমানের উপর ভিত্তি করে রাজকে আটকে রাখা ঠিক নয়। প্রাথমিক ভাবে তা নাকচ করে দেয় আদালত। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এই ঘটনার শিকার যে সব মহিলারা তাঁরা আর্থিক দিক থেকে স্বচ্ছল নন। ফলে এখন রাজ ছাড়া পেয়ে গেলে হয়তো তাঁদের উপর চাপ দিয়েও প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হতে পারেন। পাশাপাশি রাজ জেলের বাইরে থাকলে হয়তো প্রমাণ নিয়ে পুলিশের কাছে আসতে ওই মহিলারা ভয় পেতে পারেন। পুলিশের এই বক্তব্য বিবেচনা করে রাজ মামলার শুনানি পিছিয়ে দিয়েছিল আদালত। রাজকে জামিনে মুক্তি না দেওয়ার কারণ হিসেবে মোট ১৯টি কারণ আদালতে জমা করেছিল অপরাধদমন শাখা।
পর্নকাণ্ডে গত ১৩ অগস্ট আরও এক ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছেন। অভিযুক্তের নাম অভিজিৎ বোম্বলে। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী, রাজের কোম্পানির একটি ফার্মের পরিচালক ছিলেন এই ব্যক্তি। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান রাজের কোম্পানির এই অবৈধ ব্যবসা সম্পর্কে অবগত ছিলেন অভিজিৎ, যুক্ত ছিলেন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গেও।