SSR Case: কী কী ঘটল এক বছরে, কোথায় দাঁড়িয়ে মামলা, সুশান্তের মৃত্যুবার্ষিকীতে ফিরে দেখা ঘটনাপ্রবাহ

Sushant Singh Rajput Death Anniversary: .সুশান্তের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর আগে দেখে নেওয়া যাক এক বছরে তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা...

SSR Case: কী কী ঘটল এক বছরে, কোথায় দাঁড়িয়ে মামলা, সুশান্তের মৃত্যুবার্ষিকীতে ফিরে দেখা ঘটনাপ্রবাহ
গ্রাফিক- অভীক দেবনাথ।
Follow Us:
| Updated on: Jun 13, 2021 | 1:32 PM

১৪ জুন, ২০২০। ক্যালেন্ডার জানান দিয়েছিল দিনটি ছিল রবিবার। সকাল গড়িয়ে দুপুর নামতেই স্তব্ধ হয়েছিল তামাম বিশ্ব। সুশান্ত সিং রাজপুত আর নেই। বান্দ্রার ফ্ল্যাটে পাওয়া গিয়েছিল তাঁর ঝুলন্ত দেহ। খুন না আত্মহত্যা, তা নিয়ে বছর খানেক পরেও বিতর্ক জারি। জারি স্বজনপোষণ বিতর্কও। এই এক বছরে জল গড়িয়েছে অনেক দূর। সামনে এসেছে নানা অজানা তথ্য…সুশান্তের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর আগে দেখে নেওয়া যাক এক বছরে তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা…

জুন ১৪, ২০২০- বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ। বাড়ির পরিচারক প্রথম পুলিশে খবর দেন। মুম্বই পুলিশের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় তদন্ত। স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা দেশ।

জুন ১৫, ২০২০- পবন হংস শ্মশান ঘাটে অভিনেতার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। হাজির ছিলেন বলিউডের হাতে গোণা কয়েকজন, ওই দিনই অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত এক ভিডিয়ো প্রকাশ করেন। সুশান্তের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলতে সম্মত হন না তিনি। ওই একই দিনে সুশান্তের এক আত্মীয় প্রথম ‘ফাউল প্লে’র আশঙ্কা প্রকাশ্যে বলেন।

জুন ১৬, ২০২০- বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে দাবি করেন সুশান্তের মৃত্যু আদপে আত্মহত্যা নয়। এর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র।

জুন ১৮, ২০২০- সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী বয়ান রেকর্ড করে বান্দ্রা পুলিশ। এর আগে রিয়া যদিও অভিনেতার সঙ্গে সব পোস্ট মুছে দিয়েছিলেন কেবল একটি পোস্ট ছাড়া। ওই একটি পোস্টে রিয়া সুশান্তকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন।

জুন ১৯, ২০২০- স্বজনপোষণ বিতর্কে উত্তাল হয়ে ওঠে জনসাধারণ। একের পর এক স্টারকিডদের উপর ক্ষোভ উগরে দিতে থাকেন নেটিজেনদের একটা বড় অংশ। বেশিরভাগ স্টারকিড বাধ্য হন কমেন্ট সেকশন বন্ধ রাখার জন্য। নেপোটিজম ঝড়ের আঁচ সবচেয়ে বেশি লাগে পরিচালক করণ জোহর, মহেশ ভাট, আলিয়া ভাটসহ বেশকয়েক জন স্টার কিডের উপর।

জুন ২২, ২০২০- লোক জনশক্তি পার্টির সভাপতি চিরাগ পাশওয়ান মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে ঘটনার সুবিচার হওয়ার আবেদন করে একটি চিঠি লেখেন।

জুন ২৪, ২০২০- সুশান্তের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসে। সেখানে পরিষ্কার বলা হয়, “মৃত্যুর সময় দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন বা বাধা দেওয়ার চিহ্ন নেই।”

জুন ২৫, ২০২০- বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেন।

জুলাই ৪, ২০২০- সুশান্তের বাবা কেকে সিংও ছেলের মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত দাবি করেন।

জুলাই ৬, ২০২০- পরিচালক সঞ্জয় লীনা ভন্সালীকে ডেকে পাঠায় মুম্বই পুলিশ। তাঁর রেকর্ড বয়ান করা হয়।

জুলাই ১৪, ২০২০- দেখতে দেখতে এক মাস কাটল। এক মাসের নীরবতা ভেঙে প্রথম বার সুশান্তকে নিজের বয়ফ্রেন্ড পরিচয় দিয়ে ইনস্টাগ্রামে এক আবেগঘন পোস্ট করেন রিয়া। ওই একই দিনে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন সুশান্তকে নিয়ে পোস্ট করেন অভিনেতার প্রাক্তন অঙ্কিতা লোখন্ডেও।

জুলাই ১৬, ২০২০- ততদিনে নেটিজেনদের একাংশ অভিযোগের আঙুল তুলেছে রিয়ার দিকে। মহেশ ভাটের সঙ্গে তাঁর পুরনো ছবিও ভাইরাল। রিয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে সুশান্তের মৃত্যু তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।

জুলাই ১৮, ২০২০- অভিযোগ আসে প্রযোজক আদিত্য চোপড়া নাকি সুশান্তের সঙ্গে চুক্তি ভেঙে তাঁকে দিয়ে পরিচালক শেখর কাপুরের একটি ছবিতে অভিনয় করাননি। সেই মর্মেই আদিত্যকে ডেকে পাঠায় মুম্বই পুলিশ। সেখানে তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হয়।

জুলাই ২৪, ২০২০- হটস্টার প্লাস ডিজনি প্লাসে মুক্তি পায় সুশান্তের শেষ ছবি ‘দিল বেচারা’। সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বার দেখা ছবি হিসেবে রেকর্ড সৃষ্টি করে ওই ছবি। ছবিতে সুশান্ত মারা যায়। রিল আর রিয়েলের মিশেলে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি ভক্তরা।

জুলাই ২৯, ২০২০- রিয়াসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে পাটনার রাজীব নগর পুলিশ স্টেশনে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেন সুশান্তের বাবা কেকে সিং।

জুলাই ২৯,২০২০- সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন রিয়া। ঘটনা যেহেতু মুম্বইয়ে ঘটেছে তাই তদন্ত প্রক্রিয়া মুম্বইয়ে সরিয়ে নিয়ে আসার আর্জি জানান তিনি।

জুলাই ২৯, ২০২০- মুম্বইয়ে আগমন হয় বিহার পুলিশের। তদন্তভারকে কেন্দ্র কর মুম্বই পুলিশ এবং বিহার পুলিশের মধ্যে শুরু হয় ঠান্ডা লড়াই।

জুলাই ৩১, ২০২০- তদন্তে প্রবেশ হয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট ওরফে ইডির। সুশান্তকাণ্ডে আর্থিক তছরূপের দিকট খতিয়ে দেখতে শুরু করেন তাঁরা।

অগস্ট ৪, ২০২০- মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণ রানে দাবি করেন সুশান্ত এবং তাঁর প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ান খুন হয়েছেন। রিয়ার সঙ্গে মহারাষ্ট্রের ক্যাবিনেট মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরের সম্পর্ক নিয়েও শুরু হয় জল্পনা।

অগস্ট ৪, ২০২০- মুখ খোলেন আদিত্য। তিনি জানান, রিয়াকে তিনি চেনেন না। ‘কর্দমাক্ত রাজনীতি’র শিকার হচ্ছেন তিনি। ইচ্ছাকৃত ভাবে এই ঘটনায় তাঁর নাম জড়ানো হচ্ছে।

অগস্ট ৪, ২০২০- বিহার পুলিশ ঘটনার তদন্তে সিবিআইয়ের হস্তক্ষেপের সুপারিশ করে।

অগসট ৫, ২০২০- কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেও তাঁদের সেই সুপারিশে সিলমোহর দেওয়া হয়।

অগস্ট ৬, ২০২০- সিবিআইয়ের তরফে রিয়া চক্রবর্তী, তাঁর বাবা ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী, ভাই শৌভিক চক্রবর্তী, মা সন্ধ্যা চক্রবর্তী, সুশান্তের হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা, শ্রুতি মোদীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। ভারতীয় সংবিধানের বিভিন্ন ধারা যেমন আত্মহত্যার প্ররোচনা, বিশ্বাসভঙ্গ, আর্থিক তছরূপের অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

অগস্ট ১০, ২০২০- শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন রিয়া। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার আগেই যেভাবে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’-এর শিকার হচ্ছেন তিনি সে বিষয় অভিযোগ জানান তিনি আদালতে।

অগস্ট ১৯, ২০২০- সুপ্রিম কোর্ট তদন্তভার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের উপর ন্যস্ত করে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পাটনা পুলিশে দায়ের করা এফআইআরের দায়িত্ব নেয় সিবিআই। মুম্বই পুলিশের থেকেও তদন্তভার চলে যায় সিবিআইয়ের উপর। সুশান্ত কাণ্ডে অফিসিয়ালি প্রবেশ হয় সিবিআইয়ের।

অগস্ট ২০, ২০২০- সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল মুম্বই পৌঁছয়। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন তাঁরা। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেন। মুম্বই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করেন।

অগস্ট ২২, ২০২০- এইমসের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। সুশান্তের মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল তা খতিয়ে দেখার জন্য চিকিৎসক সুধীর গুপ্তের নেতৃত্বে চিকিৎসকের একটি দল ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। ফ্ল্যাট থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করেন। প্রয়াত অভিনেতার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্ট আবারও খতিয়ে দেখার জন্য কুপার হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে চিকিৎসকের ওই দলটি।

অগস্ট ২৫, ২০২০- ফোন রেকর্ড এবং অন্যান্য নথি ঘেঁটে সুশান্ত কাণ্ডে মাদক যোগের আভাস পায় ইডি। রিয়া চক্রবর্তী এবং ট্যালেন্ট ম্যানেজার জয়া সাহার এক হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হাতে আসে ইডির। সেই চ্যাটে ‘হার্ড ড্রাগ’-এর ব্যাপারে আলোচনা চলছিল। ইডি অনুরোধ করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো ওরফে এনসিবিকে ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য।

অগস্ট ২৬, ২০২০- সুশান্ত কাণ্ডে মাদক যোগ খতিয়ে দেখতে প্রবেশ হয় এনসিবি’র। রিয়ায় চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মাদক মামলা দায়ের করা হয়।

অগস্ট ২৭, ২০২০- এতদিন পর্যন্ত ছেলের মৃত্যুর প্ররোচক বললেও আচমকাই রিয়াকে ছেলের খুনির তকমা দেন কেকেসিং।

অগস্ট ২৮, ২০২০- রিয়াকে ডেকে পাঠায় সিবিআই। সাত ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয় তাঁকে।

সেপ্টেম্বর ৪, ২০২০- মাদক মামলায় রিয়ার ভাই শৌভিক এবং সুশান্তের হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাকে গ্রেফতার করে এনসিবি। তাঁদের জেল হেফাজতে রাখা হয়।

সেপ্টেম্বর ৭, ২০২০- সুশান্তের দুই দিদি প্রিয়াঙ্কা এবং মিতুর বিরুদ্ধে মুম্বই পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেন রিয়া। তাঁর অভিযোগ ছিল ভুয়ো প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে সুশান্তের দুই দিদি তাঁর ভাইকে নিষিদ্ধ ওষুধ খাইয়েছেন।

সেপ্টেম্বর ৮,২০২০- মাদক মামলায় গ্রেফতার হন রিয়া। পর পর তিন দিন এনসিবি রিয়াকে জেরার পর অবশেষে গ্রেফতার করে তাঁকে। তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখা হয়।

সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০- মাদক মামলায় এনসিবির দফতরে ডাক পড়ে দীপিকা পাড়ুকোন, সারা আলি খান, রাকুল প্রীত, শ্রদ্ধা কাপুরসহ বলিউডের প্রথম সারির নায়িকাদের।

অক্টোবর ৫, ২০২০- এইমসের মেডিকেল বোর্ডের তরফে সুশান্তের পরিবারের আনা শ্বাসরোধ অথবা বিষক্রিয়া করে খুনের তত্ত্বকে খারিজ করে দেওয়া হয়। হত্যার অভিযোগকেও প্রকারান্তরে খারিজ করে দেওয়া এইমসের তরফে।

অক্টোবর ৮, ২০২০- এক মাস কারাবাসের পর অবশেষে জামিনে মুক্তি পান রিয়া।

নভেম্বর ৯, ২০২০- অর্জুন রামপালের বাড়িতেও হানা দেয় এনসিবি। রামপালের বান্ধবী এবং লিভ ইন পার্টনার গ্যাব্রিয়েলা ভাই অ্যাজিসিলাওস ডিমেট্রিয়াডেসের বাড়িতে অনুসন্ধান চালিয়ে হাসিস এবং অ্যালপ্রাজোলামের মতো নিষিদ্ধ ট্যাবলেট পায় নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো।

ফেব্রুয়ারি ২, ২০২১- এনসিবি তরফে জানান হয় সুশান্ত কাণ্ডে মাদক মামলায় এখনও পর্যন্ত চার্জশিট গঠন করেননি তাঁরা।

ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১- সুপ্রিম কোর্ট মিতু সিংয়ের বিরুদ্ধে আনা রিয়ার অভিযোগ খারিজ করে।

মার্চ ৫, ২০২১- মুম্বইয়ের বিশেষ আদালতে ১২ হাজার পাতার চার্জশিট জমা দেয় নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো

মে ২৮, ২০২১- মাদক মামলায় নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর হাতে গ্রেফতার হন সুশান্ত সিং রাজপুতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সিদ্ধার্থ পিঠানি।