সন্তানস্নেহে তাকে আগলে রাখতেন সুশান্ত সিং রাজপুত। তাঁর প্রতিটি ছবিতে ছিল ওর নিত্য উপস্থিতি। সুশান্ত চলে যাওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর চলে গেল তার চারপেয়ে সন্তান ‘ফাজ’ও। এ খবর মঙ্গলবার সকালে নিজেই জানিয়েছেন সুশান্তের দিদি প্রিয়াঙ্কা। প্রিয়াঙ্কা লেখেন, “অবশেষে তোমার বন্ধুর স্বর্গের সীমানায় মিলিত হচ্ছ ফাজ। তোমাকে শীঘ্রই আমরাও অনুসরণ করব। ততক্ষণ, এই কষ্ট নিয়েই বেঁচে থাকা। সুশান্ত ভক্তদের মন ভার। ফাজের মধ্যে তাঁরা খুঁজে পেতেন সুশান্তকে, খুঁজে পেতেন তাঁর সরলতা। সেই ফাজও আর রইল না। ভাবলেই যেন চোখে জল তাঁদের। সুশান্ত প্রয়াত হন ২০২০ সালের ১৪ জুন। আত্মহত্যা নাকি খুন, তা নিয়ে ধন্দ জারি। কিন্তু সুশান্তের প্রয়াণের যে ক’টি প্রাণ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছিল, তার মধ্যে ফাজ ছিল একজন। পরিবার জানিয়েছিল, সুশান্তকে নাকি ক্রমাগত খুঁজে বেড়াত সে। যে ফ্ল্যাটে সুশান্ত থাকতেন তা সিল করে দেওয়া হয় পুলিশের তরফে। কথা না বলতে পারলেও অস্ফুটে ফাজ বলে যেত অনেক কিছুই। অভিনেতার পর ফাজের মালিকানা কার হবে তা নিয়েও তৈরি হয়েছিল নানা বিভ্রান্তি। তবে সুশান্তের দিদিরাই পরবর্তীতে তাকে দত্তক নেন। ওপারে কি সত্যিই দেখা হল তার প্রিয় মানুষের সঙ্গে? সে উত্তর রহস্যে ঘেরা হলেও, তাই মেনে নিয়েই মন হালকা করার মরিয়া চেষ্টায় সুশান্ত-ভক্তরা।
So long Fudge! You joined your friend’s Heavenly territory… will follow soon! Till then… so heart broken ? pic.twitter.com/gtwqLoELYV
— Priyanka Singh (@withoutthemind) January 16, 2023
প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে রহস্য আরও একবার ঘনিয়ে ওঠে। যে হাসপাতালে সুশান্তের দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছিল, দিন কয়েক আগে সেই হাসপাতালে মর্গের কর্মী রূপকুমার শাহ টিভিনাইন মরাঠির কাছে দাবি করেছিলেন, সুশান্তের মৃত্যু আত্মহত্যা নয়, তিনি খুন হয়েছেন। ওই ব্যক্তি বলেন, “সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর দিন আমাদের কাছে ময়নাতদন্তের জন্য পাঁচটি দেহ এসেছিল। জায়গাটি ছিল কুপার হাসপাতাল। ওই পাঁচটি দেহের মধ্যে আমরা জানতে পারি, একটি ভিআইপি। ময়নাতদন্তের সময় দেখি তা সুশান্তের দেহ। ওর গায়ের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। এমনকি ঘাড়েও আঘাতের চিহ্ন দেখতে পারি আমরা।” তাঁর আরও দাবি, “যদিও ওই ময়নাতদন্তের ভিডিয়ো করতেও আমাদের বারণ করা হয়, উপর মহল থেকে শুধুমাত্র ছবি তুলে রাখতে। তাঁদের নির্দেশে তেমনটাই করি আমরা।” ওই ব্যক্তি যোগ করেন, বারংবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তাঁকে ‘নিয়ম মেনে কাজ’ করতে বলা হয়। তাঁর কথায়, “যখন প্রথম বার ওঁর নিথর দেহ দেখি তখন আমার সিনিয়রদের জানিয়েছিলাম আত্মহত্যা নয়, খুন বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই আমার কথা শোনা হয়নি। তাঁরা যত দ্রুত সম্ভব আমাকে কাজ শেষ করে অভিনেতার দেহ পুলিশকে হস্তান্তর করতে বলে।” সুশান্ত কীভাবে মারা গিয়েছেন, সে কারণ নিয়ে আজও ধোঁয়াশা রয়েছে। মৃত্যুর কারণ নিয়েও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বক্তব্য সামনে এসেছে। কখনও বয়ান বদলে গিয়েছে, আবার কখনও উঠেছে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগও। তবে যা বদলায়নি তা হল ফাজ ও সুশান্তের সম্পর্কে। বাঁধন ছিন্ন করে চলে গিয়েছিলেন সুশান্ত, জোড়া লাগাতে অভিনেতার কাছেই পৌঁছে গেল ফাজ।