চিত্র পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়া, যাঁর ছবি বারবার দর্শক মনে জায়গা করে নিয়েছে। প্রশংসিত হয়েছে বিভিন্ন মহলে। কিন্তু জানেন কি, একবার এই পরিচালকই মাত্র চার হাজার টাকার জন্য এক রাজনীতিবিদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে গিয়েছিলেন? শুধু তাই নয়, সে বচসার মাঝে ঢুকে পড়েছিলেন দেশের রাষ্ট্রপতিও। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পরিচালক জানালেন ঠিকই ঘটেছিল সেবার? যে সময় এই ঘটনাটি ঘটে তখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন নীলাম সঞ্জীব রেড্ডি আর তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী ছিলেন এল কে আডবাণী। বিধু বিনোদ চোপড়া তখন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মঞ্চে। তাঁর জীবনে প্রথম জাতীয় পুরস্কার। মঞ্চে উঠে তিনি রাষ্ট্রপতীর হাত থেকে পুরস্কার নেন। কথা ছিল বিজয়ীদের ৪০০০ টাকা নগদ পুরস্কার দেওয়া হবে।
যে খামটা ছিল আডবাণীর হাতে। আডবাণীর হাত থেকে খামটা নিয়ে পরিচালক বুঝতে পারেন সেটা একটু বেশি হালকা। তিনি ওখানে দাঁড়িয়েই তা খুলে ফেলেন। দেখেন সেখানে একটি মানি অর্ডার রয়েছে যা সাত বছর পর তিনি নগদ হিসেবে পাবেন। এরপরই আপত্তি প্রকাশ করেন পরিচালক, আডবাণীকে প্রশ্ন করে জানতে চান কথা ছিল তাঁকে নগদ চার হাজার টাকা দেওয়া হবে তাহলে এটা কেন? আডবাণী তাঁকে বুঝিয়ে বলেন, ‘সাত বছর পর তুমি দ্বিগুণ টাকা পাবে’। তা মেনে নিতে পারিনি পরিচালক। তিনি সেখানে দাঁড়িয়েই আডবাণীকে জানান তাঁর নগদ অর্থ চাই, এটা যেন তিনি ফিরিয়ে নেন। মঞ্চের উপর অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখে এগিয়ে আসেন রাষ্ট্রপতি। তিনি পরিচালককে থেকে জানতে চান কি হয়েছে? বিধু বিনোদ চোপড়া জানান তাঁকে নগদ অর্থের বদলে অন্য কিছু দেওয়া হচ্ছে।
তিনি তা নিতে মোটেও রাজি ছিলেন না। নাছোড়বান্দা বিধু বিনোদকে দেখে আডবাণী বলেন পরের দিন তিনি যেন অফিসে এসে দেখা করে টাকাটি নিয়ে যান। তাতেও মানতে রাজি ছিলেন না বিধু বিনোদ। তিনি রাষ্ট্রপতীর উদ্দেশ্যে বলেন ‘কাল সকালে যদি আমাকে টাকাটা দেওয়া না হয়? আমি আপনাকে জানাবো’, উত্তরে রাষ্ট্রপতি জানিয়েছিলেন আদবাণী ভাল মানুষ উনি এমন করবেন না। পরের দিন সকাল হতেই তড়িঘড়ি পরিচালক পৌঁছে গিয়েছিলেন যথাস্থানে। সেখানে গিয়ে শোনেন আডবাণী আসেননি।
এরপরই তিনি কথা বলতে তৎপর হলে পরিচালককে আডবাণী জানান তিনি তাণর বাবার সঙ্গে কথা বলতে চান। এক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মঞ্চে একজন বিজেতার এ কেমন ব্যবহার? উত্তরের পরিচালক জানিয়েছিলেন ‘আপনি ব্রেকফাস্ট করেছেন আমি করিনি। আমি এক বন্ধু থেকে বারোশো টাকা ধার নিয়ে এখানে এসেছি। জামা কিনেছি, এসি কোচে এসেছি, আমি ফিরে কী তাঁকে? আমি ভেবেছিলাম এই নগদ টাকা থেকে তার ঋণ শোধ করে দেব।’ সবটা শুনে তাঁকে ডেকে জল খাবার খাওয়ান ও নগদ অর্থ দিয়ে দেন আডবাণী।