তাঁর মন কি কাঁদছে ‘একবার বল নেই তোর কেউ নেই’ বলে। নাকি তিনি নিজের লেখা গানই বারবার আওড়ে মনটাকে বোঝাতে চাইছেন ‘আমাকে আমার মতো থাকতে দাও, আমি নিজেকে নিজের মতো গুছিয়ে নিয়েছি’। সব পেলে যে নষ্ট জীবন, তা তো তিনি নিজেই বলেছেন। এবং সেই গান শুনে নিজেকে সান্ত্বনা দিয়েছে একটা আস্ত প্রজন্মের ব্যর্থ প্রেমিক হৃদয়। এবার যে পালা তাঁরই। বিবাহিত স্ত্রী পিয়া দু’বছর আগেই ঘর ছেড়েছেন তাঁর। তাতেও শান্তি ছিল, মনে-মনে প্রার্থনা ছিল, ‘তুমি অন্য কারও সঙ্গে বেঁধো ঘর’ বলায়। কিন্তু সত্যি-সত্যিই পিয়া ঘর বেঁধেছেন অন্য কারও সঙ্গে (ঘটনা চক্রে অনুপমের বন্ধু পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেই)। আর অনুপম? বুকের এই হাহাকার, ট্রোলারদের মিমের বাণ থেকে নিজেকে বাঁচাতে সমুদ্রের কাছে গিয়ে বলছেন, ‘আমার দুঃখগুলো কাছিমের মতো’।
২৭ নভেম্বরের ঘটনা। চমকে দেওয়ার মতো সুসংবাদ দিলেন অভিনেতা- পরিচালক-প্রযোজক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। টলিউড ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে ‘এলিজিবল ব্যাচেলর’ বিয়ে করলেন তাঁরই বন্ধুর প্রাক্তন স্ত্রীকে। পরমব্রতর সেই বন্ধু এবং তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী দু’জনেই তারকা। গায়ক-সঙ্গীত পরিচালক বন্ধু অনুপম রায়ের প্রাক্তন স্ত্রী সমাজসেবী পিয়া চক্রবর্তীকে ঘরোয়া অনুষ্ঠানে গলায় মালা দিলেন পরম। সই করলেন বিয়ের কাগজে। এই খবরটি পাওয়ার পরই গায়ক-সঙ্গীত পরিচালক অনুপম রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল TV9 বাংলা। তিনি একটি কথাও বলতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু এই চর্চিত ত্রিকোণ প্রেমকে নানাভাবে কাটাছেঁড়া করে নেটমাধ্যমের বাসিন্দারা।
একদা প্রিয়তমা পিয়ার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সেই পিয়া, যাঁকে অনুপম ২০১৫ সালে ঘটা করে বিয়ে করেছিলেন। সেই পিয়া, যাঁকে নিয়ে একাধিক গান বেঁধেছিলেন অনুপম। প্রেমের সম্পর্কে থাকার সময় বালিগঞ্জের কর্নফিল্ড রোডে হাত ধরে হাঁটতেন অনুপম। সেই কর্নফিল্ড রোডকে নিয়েও ‘হেঁটেছিলাম ভুট্টা পাড়ের মাঠ (কর্নফিল্ড রোডের বাংলা)’ গিয়েছিলেন অনুপম। সেই প্রিয়া এখন অন্য কারওর সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন। পিয়া এবং পরমের সুখী দাম্পত্য কামনা করেছেন অনেকে। যদিও পরকীয়া প্রেমের বিবাহে পরিণতি দেখে তাঁদের দু’জনকেই ট্রোল করেছে নিন্দুকেরা। ট্রোলড হয়েছেন অনুপম রায়ও।
এসব যখন পুরোদমে চলছে, তখন বাবা-মায়ের সঙ্গে ভাইজ়্যাকের সমুদ্র সৈকতে ছুটে গেলেন অনুপম। শান্তির খোঁজ করলেন সেখানেই। অনুপমের মতো আবেগপ্রবণের শিল্পীর চেয়ে বেশি কীই বা চাওয়ার হয়ে থাকতে পারে। তবে তিনি বেশ ভাল সময় কাটিয়েছেন বাবা-মায়ের সঙ্গে। এই সময় পরিবারের পাশে থাকা দরকার। তিনিও আঁকড়ে ধরেছেন তাঁর শিকড়কে, তাঁর বাবা-মাকে। নিজেকে নিজের মতো গুছিয়ে নিতে চেয়েছেন তিনি (তাঁরই লেখা বিখ্যাত গানের মতো)। ছবি পোস্ট করেছেন ভাইজ়্যাকের সমুদ্র সৈকত থেকে। ক্যাপশনে লিখেছেন, “সমুদ্রের সঙ্গে কিছু কথা…”।
বাবা-মায়ের সঙ্গে মুখে হাসি মাখানো ছবি দেখে আবেগে ভেসে গিয়েছেন তাঁর বিপুল অনুরাগীকুল। গায়ককে অনেক-অনেক ভাল থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মন খুলে। বলতে চেয়েছেন, “…সব পেলে নষ্ট জীবন!”