তিনি পেশাদার শিল্পী—বিতর্ক যাঁকে তাড়া করে ফেরে বারবার। এহেন পেশাদার শিল্পীকেই দর্শক-শ্রোতাবৃন্দের মনোরঞ্জনের জন্য মঞ্চে ওঠার আগে ‘গলা ভিজিয়ে’ নিতে হয়। এবং সে কথা অকপটে স্বীকার করতেও পিছপা হন না সেই গায়ক। তবে শুধু স্বীকার করে নেওয়াই নয়, সেজন্য ভক্তদের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ক্ষমা চাইতেও নির্দ্বিধ এমন গায়ক। বিতর্ক যাঁর সঙ্গে জুড়ে যেতে একপ্রকার ভালবাসে যখন-তখন, সেই বিতর্কিত সঙ্গীতশিল্পী নোবেল আবারও শিরোনামে একবার—সৌজন্যে স্টেজে উঠে গান গাওয়ার আগে মদ্যপান। শিল্পীর যদিও দাবি, ‘অতিরিক্ত নয়’ মোটেই। ঠিক কী ঘটেছে নোবেলের সঙ্গে? আর কী-ই বা সাফাই দিতে হয়েছে ঘটনার পর ‘হাতজোড় করে’?
দিন কয়েক আগের ঘটনা। বাংলাদেশের এক কলেজের অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার আমন্ত্রণ পান সঙ্গীতশিল্পী নোবেল। কিন্তু গান গাইতে উঠেই অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় দেখা যায় তাঁকে। মঞ্চে উঠে শুরু করেন তুমুল অশান্তি। মাইক ভেঙে দেন, স্টেজে বসে পড়েন– সে এক তুলকালাম কাণ্ড। এবার সেই ঘটনা নিয়েই সাফাই দিলেন তিনি। যা বললেন শুনলে রীতিমতো চমকে যাবেন। প্রথমে চুপ থাকলেও সম্প্রতি এই নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘কালের কণ্ঠ’-এর এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে স্থানীয় এক সংবাদপত্রে নোবেল মদ্যপানের কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “স্টেজে ওঠার আগে হালকা একটু রিলাক্সেশনের জন্য, হালকা একটু ফিলিংসের ভেতরে যাওয়ার জন্য একটু মদ পান করার দরকার পড়ে। অতিরিক্ত মদ পান করার ধারেকাছে যাইনি। স্টেজে ওঠার আগে সামান্য মদ পান করেছিলাম।” তিনি আরও যোগ করেন,” এ ঘটনায় আমি অত্যন্ত অনুতপ্ত এবং দুঃখিত। হাঁটু গেড়ে হাতজোড় করে সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। এ রকম ঘটনা আর ঘটবে না।” তিনি অনুতপ্ত হলেও দর্শক কিন্তু ছেড়ে কথা বলেনি সেদিন। নোবেলকে ওই অবস্থায় দেখে মঞ্চেই উড়ে আসে জলের বোতল, চটি। কোনওরকমে তাঁকে স্টেজ থেকে বের করে নিয়ে আসেন আয়োজকরা।
একের পর এক বিতর্ক। জীবন জুড়ে শুধুই সমালোচনা। স্ত্রীর সঙ্গেও সম্পর্ক তাঁর তলানিতে। অথচ ভালবেসেই বিয়ে করেছিলেন দু’জনে। কিছু দিন আগে তাঁর এক পোস্ট নিয়ে শুরু হয়েছিল হইচই। তাঁর ফেসবুক পোস্টে নোবেল লেখেন, “সব অঘটন আমার সঙ্গেই ঘটেচ্ছে। হৃদয় ভেঙে গিয়েছে, মাদক আর মদ। মাথায় ৭০টা সেলাই পড়েছে। আমার প্রাক্তন স্ত্রী সেই কারণে খুশি হয়েছে।” এখানেই থামেননি তিনি। আরও লেখেন, “কেরিয়ার ধ্বংস হয়ে গিয়েছে আমার, শুধুমাত্র মৃত্যুই এখন বাকি আছে। তোমাকেও স্বাগত প্রিয়। তোমাকেও গ্রহণ করে নেব।”
নোবেলের ওই পোস্টের পরেই শুরু হয়ে নানা জল্পনা। তবে কি বড় কোনও পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন তিনি? ফ্যানেরা আর্জি জানান, হতাশা থেকে বেরিয়ে তিনি যেন আবারও নতুন ভাবে সবটা শুরু করেন। কেউ আবার তাঁর এই অবস্থার জন্য তাঁকেই দায়ী করেন। আশার আলো দেখিয়ে একজন লেখেন, “ভাইয়া নিজের দোষে আজকে সবকিছু হারিয়েছেন মানুষ আপনার ট্যালেন্ট কে ভালোবাসতো ঠিকই কিন্তু আপনি নিজে নিজের ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছেন তবে এখনও নিজেকে শুধরে নিন দেখবেন সব ভালো হবে । ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রেখে নিজে ভালো পথে চলুন সব ভালো হবে”। কিন্তু নোবেল যে শুধরে যাননি এই ঘটনাই যেন তা আরও একবার প্রমাণ করছে। চলছে নিন্দা-সমালোচনা। এর শেষ কোথায়?