
হাসপাতালে লড়াই চালাচ্ছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর (Chanchal Chowdhury) বাবা। সেরিব্র্যাল অ্যাটাক হয়েছে তাঁর। অবস্থা ভাল নয়। এরই মধ্যে চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে তাঁর বয়স। অভিনেতার বাবা রাধা গোবিন্দ চৌধুরীর বয়স ৯০ ছুঁইছুঁই। লড়াই চালাচ্ছেন তিনি। চঞ্চলের কাছে বাবাই অনুপ্রেরণার উৎস। তাই বাবাকে নিয়ে আবেগঘন অভিনেতা। এই কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁর মনে পড়ছে ছেলেবেলার কথা। বাড়ির উঠোনেই স্কুল ছিল তাঁদের। বাবা ছিলেন সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ছাত্র হিসেবে বরাবরই ভাল ছিলেন অভিনেতা। কিন্তু দুষ্টুমিতেও ছিলেন সেরা। চঞ্চলের কথায়, “বাবা স্কুলের প্রধান শিক্ষক। স্কুলের মাঠ, গাছপালা, স্কুল, ঘর, বই পত্র, সব কিছুকেই পৈতৃক সিম্পত্তি ভাবতাম। একজন সৎ এবং স্বনামধন্য শিক্ষক হিসেবে আমার বাবাকে এলাকার সবাই একনামে চিনত,এখনও চেনে।” চঞ্চল বড় হলেন। তৈরি হল আলাদা পরিচিতি। যদিও তিনি জানিয়েছেন, যে কোনও জায়গায় গেলে দুলাল মাস্টারের সন্তান হিসেবেই পরিচিতি বেশি পেতেন তিনি। একদিন বাবাকে জিজ্ঞাসা করেন, “ছোটবেলা থেকে তোমার পরিচয়ে পরিচিত হয়ে এসেছি,এখন যখন তোমাকে কেউ চঞ্চল চৌধুরীর বাবা বলে চেনে,তোমার কেমন লাগে?”
অভিনেতার বাবা উত্তর দেননি সেদিন। শুধু চোখ ভিজে গিয়েছিল আবেগে। ছেলের জন্য গর্ব যেন সেদিন ঝরে পড়ছিল তাঁর বাবার চোখ দিয়ে। আবেগে বিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন তিনি। আর চঞ্চলও বুঝেছিলেন তাঁর কাজে সবচেয়ে বেশি গর্ব অনুভব করেন যে মানুষটা তিনি আর কেউ নন, তাঁর বাবা। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল তাঁরও। চঞ্চল যোগ করেন, “সন্তানের সকল সফলতায় বাবা মায়ের যে কী শান্তি, কী আনন্দ…তা আমি দেখেছি।” সেই বাবাই আজ হাসপাতালের শয্যায় অচেতন। ভাল নেই চঞ্চল। তাঁর সহজ স্বীকারোক্তি, “বাবাকে হাসপাতালের বিছানায় রেখে কোনও সন্তানই ভাল থাকতে পারে না। আমিও ভাল নেই।”
চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত ছবি ‘হাওয়া’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার। সেই উপলক্ষে বুধবার শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এক সাংবাদিক সম্মেলন। ছবির পরিচালক ও অন্যান্য অভিনেতা হাজির থাকলেও আসতে পারেননি চঞ্চল। জানা যায়, বাবার অসুস্থতার কারণেই এ হেন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। আপাতত সুস্থ হয়ে উঠুক তাঁর বাবা। এমনটাই প্রার্থনা তাঁর অনুরাগীদের।