
মা’কে হারিয়েছেন ছোটবেলায়। বাবা শঙ্কর চক্রবর্তী ইমন চক্রবর্তীর জীবনের অনেকটা জুড়ে। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার মফঃস্বলের মেয়ে ইমনের বেড়ে ওঠা কিন্তু মোটেও ‘সোনার চামচ মুখে নিয়ে’ নয়। পরিবারের প্রতিকূলতা, লড়াইয়ে সামিল হতে হয়েছে তাঁকেও। কিন্তু এই গোটা সময়ে যে মানুষটি তাঁর পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। গায়ে আঁচড় পড়তে দেননি, বুঝতে দেননি সংসারের কষ্ট… তিনি জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত গায়িকার বাবা। আজ মেয়ে সফল, খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। সেই কষ্টের অধ্যায়ই শোনা গেল ইমনের বাবার মুখে। মেয়ে গান শিখছে, পড়াশোনা করছে, পাল্লা দিয়ে মেয়ের পাশে থেকেছেন বাবাও।
তাঁর কথায়, “ইমনের জন্য খাবার দাবার সব নিয়ে যেতাম, সকালবেলা বেরিয়েছি রাত্রি ১২টা ১টায় ফিরেছি। ওকে খাইয়েছি কিন্তু নিজে পেটে কিছু দিইনি। জল খেয়ে খেয়ে কাটিয়েছি, যাতে এ কষ্ট না পায়। কারণ ও কষ্ট পেলে গানটা তো আসবে না। ওকে তো আমার ঠিক রাখতেই হবে।” শঙ্করবাবু আরও জানান, এমনও দিন গিয়েছে যে বাড়ি ভাড়াটা পর্যন্ত দিতে পারেননি। না, ইমন এ সবের কোনও কিচ্ছুই জানতে পারেননি কোনওদিন। বলা ভাল তাঁকে জানতে দেওয়া হয়নি। তাই বাবার মুখে এই সব শুনে তিনিও আবেগঘন। ‘বাবা হওয়া কি কম ঝক্কির’?
তবে ওই যে কবি বলেছেন, ‘চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়’। আজ সাফল্যের চূড়ায় বসা মেয়েটি কিন্তু ভোলেননি লড়াইয়ের কথা। বাবা তাঁর প্রিয় বন্ধু। মা নেই। কিন্তু বাবার যত্নের যাতে ত্রুটি না হয় সে ব্যাপারে সদা সচেষ্ট ইমন। একবার এক রিয়ালিটি শো’য়ে হাজির হয়ে বলেছিলেন, বাবাকে আবারও বিয়ে দিতে চান তিনি। শেষ বয়সে মনের কষ্ট শেয়ার করার জন্য যাতে এক সঙ্গী পান বাবা, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত তিনি নিতে চান।যদিও তা এখনও হয়নি। ইমন ব্যস্ত তাঁর কাজ ও কেরিয়ার নিয়ে। বিদেশেও ট্যুর করছেন। সঙ্গে রয়েছে প্লেব্যাক। তবে বাবাকে অবহেলা নয়, আজও তাঁর আবদারের সঙ্গী সেই বাবাই।