শৈশবের স্মৃতি নিয়ে সরব জাভেদ আখতার। বাবার দ্বিতীয় বিয়ে, ভালবাসা থেকে বঞ্চিত, সৎ মায়ের সঙ্গে অসুস্থ সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। জাভেদের বাবা জান নিসার আখতার ছিলেন জনপ্রিয় কবি। খুব ছোট বয়সেই মা সফিয়া সিরাজ উল হককে হারান জাভেদ। বাবা আবার বিয়ে করেন। কিন্তু সেই বিয়ে জাভেদের জীবনে সুখ নিয়ে আসেনি। সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই অতীত নিয়েই অকপট জাভেদ। জাভেদের অকপট যুক্তি, তাঁর বাবা ভাল কবি হতে পারেন, কিন্তু বাবা হিসেবে তিনি ব্যর্থ। বাবার সঙ্গে অসুস্থ সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, “কখনও কখনও সন্তানদের বাবার উপর অভিযোগ থাকে। এক মানুষের মধ্যে তো আর সব পাওয়া যায় না। তিনি একজন ভাল কবি ছিলেন কিন্তু জীবনে অনেকাংশে দায়িত্ব পালনে তিনি ব্যর্থ।” বেশিদিন বাবার বাড়িতে থাকা হয়নি তাঁর। চলে আসেন মামাবাড়ি। বাবা বিয়ে করেন। সৎ মা’কে নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “আমার মায়ের মৃত্যুর কিছু দিন পর বাবা আবার বিয়ে করেন। বাবার বয়স অল্প ছিল। একা থাকতে ভাল লাগত না।” তিনি যোগ করেন, “আমার সঙ্গে আমার সৎ মায়ের মোটেও ভাল সম্পর্ক ছিল না। আর ভাল ছিল না বলেই একসঙ্গে থাকা হয়নি আমাদের। যখন মুম্বইও চলে আসি, তখনও বাবার সঙ্গে থাকা হয়নি আমার। আমি যেতাম, দেখা করতাম, ঠিক যেন অতিথির মতো।”
জাভেদ নিজেও বাবা। তাঁর দুই সন্তান ফারহান আখতার ও জোয়া আখতার বলিউডে বেশ পরিচিত। বাবা হিসেবে তিনি কেমন? এক সাক্ষাৎকারে জাভেদ একবার বলেছিলেন, ফারহান ও জোয়ার বাবা হিসেবে নিজেকে তিনি মনে করতে চান না। প্রচলিত অর্থে বাবার যে সংজ্ঞা হওয়া উচিত তার সঙ্গে তাঁর কোনও মিল নেই। নেপথ্যে অবশ্য ছিল জাভেদের নিজস্ব ব্যাখ্যাও। কী বলেছিলেন তিনি? জাভেদ বলেছিলেন, “গতানুগতিক ভাবে বাবার যা সংজ্ঞা হওয়া উচিৎ তা আমি কোনও কালেই ছিলাম না। এমনিতে বাবা ও ছেলের সম্পর্কে কথোপকথন খুবই কম হয়। কিন্তু আমার ছেলেমেয়েদের সঙ্গে আমার বেশ গণতান্ত্রিক সম্পর্ক ছিল। অর্থাৎ জীবনে হেন কিছু নেই যা তাঁরা আমার সঙ্গে আলোচনা করতে পারত না। মাঝেমধ্যে তর্কও লাগত আমাদের। আসলে গণতন্ত্র মানেই তো সেখানে তর্কাতর্কী হবেই। তিনি যোগ করেছিলেন, “আমার প্রাক্তন স্ত্রী হানির সঙ্গে আমার সর্বদা এক সম্মানজনক সম্পর্ক ছিল। যত দিন গিয়েছে আমাদের বন্ধুত্বও আরও মজবুত হয়েছে। আর এখন ও আমার খুবই কাছের বন্ধু।”
এমন একটা সময়ে জাভেদ আখতার বলিউডে পদার্পণ করেন যখন চিত্রনাট্যকারের ধারণা বলিউডে খুব একটা স্পষ্ট ছিল না। সেলিম খান প্রথম ‘হাথি মেরে সাথি’ ছবিতে জাভেদকে কাজের সুযোগ দেন। এর পর বহু ছবির একসঙ্গে চিত্রনাট্য লিখেছেন তাঁরা। যদিও পরবর্তীতে আলাদা হয়ে যান। তবে কাজ থেমে থাকেনি। তাঁর লেখনির মাধ্যমে সমৃদ্ধ হয়েছে বলিউড ইন্ডাস্ট্রি।