গিয়েছিলেন হলিউড অভিনেতা জনি ডেপের হয়ে মামলা লড়তে। কিন্তু আইন আদালতের চৌহদ্দি পেরিয়ে জনির অন্তরেও কি স্থায়ী বসবাস অভিনেতার সুন্দরী আইনজীবীর? এতদিনের গুঞ্জনকে স্তব্ধ করে অবশেষে মুখ খুললেন জনির কৌঁসুলি ক্যামিলি ভ্যাসকুয়েজ। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এ সব যাবতীয় গুঞ্জন একেবারেই নস্যাৎ করেছেন তিনি। শুধু যে নস্যাৎ করেছেন তাই নয় যা বলেছেন তা একেবারেই চমকে দেওয়ার মতো।
যে ধরনের মানুষ এই সব কথা রটাচ্ছেন তাঁদের সরাসরি ‘সেক্সিস্ট’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি। এখানেই কিন্তু শেষ নয়। তিনি আরও বলেছেন তাঁর প্রেমিক রয়েছেন আর নিজের জীবনে তিনি বেজায় খুশি। পিপল ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর আরও বক্তব্য, “জনি আমার বন্ধু। গত চার বছর ধরে পেশাগত লড়াই লড়েছি ওর পাশে থেকে। কখনওই মনে হয়নি ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক অপেশাদার। আমার প্রেমিককে নিয়ে আমি ভীষণ খুশি।” জনির পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর আরও বক্তব্য, “মানুষটা জীবনের জন্য লড়ছিলেন। ওর সম্পর্কে যা যা রটেছিল তা সহ্য করে ওঁকে ভেঙে যেতে দেখেছি। যদি আমি তাঁকে একটুও স্বস্তি দেওয়ার সামর্থ্য অর্জন করে থাকি তাহলে সেটাই আমি করব। যদি সেটা হাত ধরা হয় তাহলে তাই হোক। এইটুকুই বার্তা দেওয়া আমরা ওর পাশে আছি। কারণ, এই পাশে থাকার বার্তাটা ওর প্রাপ্য।”
দীর্ঘ টানাপোড়েন, কাদা ছোড়াছুড়ির অবসান হয়েছে দিন কয়েক আগেই। প্রাক্তন স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ডের বিরুদ্ধে আনা মানহানি মামলায় জয়ী হয়েছেন জনি। ‘পাইরেটস অব ক্যারিবিয়ান’ খ্যাত অভিনেতা জনি ডেপের সঙ্গে ২০১৫ সালে বিয়ে হয় অভিনেত্রী অ্যাম্বার হার্ডের। ২০১৭ সাল অবধি সেই বিয়ে টিকে থাকলেও, ২০১৬ সালেই জনি ডেপের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনে ‘নিষেধাজ্ঞা’ বা রিস্ট্রেইনিং অর্ডার জারি করেন অ্যাম্বার। এরপরে ২০১৮ সালে ফের একবার গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ আনেন অ্যাম্বার হার্ড। একটি ম্যাগাজিনের সাক্ষাৎকারে জনির বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগও আনেন তিনি। ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে তিনবারের অস্কার মনোনীত অভিনেতাকে “বউ পেটানো স্বামী” বলেই উল্লেখ করা হয়। এরপরই ওই ম্য়াগাজিনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন জনি ডেপ, তবে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে সেই মামলায় হেরে যান জনি।
তবে বিগত ছয় সপ্তাহ ধরে অ্যাম্বার ও জনি ডেপের দেহরক্ষী থেকে শুরু করে হলিউড এক্সেকিউটিভ, এজেন্ট, চিকিৎসক, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের জেরা করা হয়। একইসঙ্গে অ্যাম্বার ও জনি ডেপের একাধিক ভিডিয়ো ও অডিয়ো ফাইলও শোনা হয়,যেখানে ওই প্রাক্তন দম্পতির মধ্যে চূড়ান্ত ঝগড়াঝাঁটি, এমনকি আঘাতের ছবিও দেখা যায়। তবে দুই পক্ষেরই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মাঝেই প্রমাণিত হয় যে জনি ডেপের তুলনায় অ্যাম্বার হার্ডই বেশি হিংস্র হয়ে উঠতেন এবং জনির উপরে নির্যাতন করতেন।
এর পরেই ভার্জিনিয়ার সাত সদস্য়ের জুরি দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা ধরে আলোচনার পর ৫৮ বছর বয়সী অভিনেতার বিরুদ্ধে আনা গার্হস্থ্য হিংসা ও যৌন হেনস্থার অভিযোগ মানহানিকর বলে উল্লেখ করে এবং ১.৫ কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় অ্যাম্বার হার্ডকে। জির হয় জনির। ক্ষোভ প্রকাশ করেন অ্যাম্বার।