Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Sandhya Mukhopadhyay: ‘এই ভয়টাই পেয়েছিলাম, ঘেন্না করছে, ছিঃ!’, সন্ধ্যার অসুস্থতায় তোপ কবীর সুমনের

দিন দুয়েক আগেই সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় নিজেই কথা বলেছিলেন টিভিনাইন বাংলার সঙ্গে। গলায় অসুস্থতার ছাপ ছিল স্পষ্ট। বলেছিলেন, “আমি ওঁদের জানিয়ে দিয়েছি, পদ্মশ্রী আমি অ্যাক্সেপ্ট করব না।"

Sandhya Mukhopadhyay: 'এই ভয়টাই পেয়েছিলাম, ঘেন্না করছে, ছিঃ!', সন্ধ্যার অসুস্থতায় তোপ কবীর সুমনের
সন্ধ্যার অসুস্থতায় তোপ কবীর সুমনের
Follow Us:
| Updated on: Jan 27, 2022 | 8:05 PM

গুরতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের দিন দুয়েকের মধ্যেই ঘটল অঘটন। গীতশ্রীর ঘনিষ্ঠ মহলের একাংশ দাবি করছেন, গত কয়েকদিনে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনা শিল্পীর মনেও চাপ সৃষ্টি করেছিল। এবার টিভিনাইন বাংলাকেও প্রায় একই কথা বললেন শিল্পী কবীর সুমন। তিনি ক্ষুব্ধ, হতাশ, চিন্তিত। তাঁর কথায়, “হ্যাঁ এই ভয়টায় পাচ্ছিলাম। ৯০ বছর বয়স তো মানুষটার। এত বড় ধাক্কা! আমার ঘেন্না করছে। দেশ ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছে করছে…”।

প্রজাতন্ত্র দিবসে আগের দিন কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয় পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হবে এই কিংবদন্তী শিল্পীকে। যদিও এরই পাশাপাশি পদ্মভূষণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয় রসিদ খানকে। সোনু নিগমকেও পদ্মশ্রী পুরস্কার দেওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়। জীবনের শেষ প্রান্তে, সারা জীবন হাজারও গান উপহার দেওয়ার পরেও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রদান মেনে নিতে পারেননি বাংলার সঙ্গীত মহলও। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ও সেই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনেই কবির সুমনের উক্তি, “আমি নিজে মনে করি ওঁকে অপমান করা হয়েছে, ইচ্ছে করে জেনে শুনে। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় এমন একটা নাম যা উইকিপিডিয়াতে গেলেই পাবেন আপনি। উনি আর সোনু নিগম দুজনেই পদ্মশ্রী পাবেন আর লতা মঙ্গেশকর ভারতরত্ন পাবেন এটা যারা ভাবেন তাঁদের আমি কী বলব! ”

তাঁর দাবি কেন্দ্রের তরফে ইচ্ছাকৃত ভাবেই এই কাজ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “প্রভা আত্রে, খেয়ালশিল্পী তিনি পদ্মবিভূষণ পাচ্ছেন, আর সেখানে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় যিনি তাঁর চেয়ে অনেক বেশি এক্সপিরিয়েন্সড, অনেক বহুমুখী প্রতিভা তিনি পাচ্ছেন পদ্মশ্রী আর রসিদ খান পাচ্ছেন পদ্মভূষণ আমার না ঘেন্না করছে। গা ঘিনঘিন করছে, ইচ্ছে করছে দেশ ছেড়ে চলে যাই।” সুমন চিন্তিত, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়ার পরেই তাঁর মনে কাজ করছে কোন এক অজানা ভয়। অশীতিপর মানুষটির উপর দিয়ে গিয়েছে মানসিক চাপ, সম্মুখীন হতে হয়েছে নানা প্রশ্নের। কবীর সুমনের কথায়, “কাল থেকে ভয়ে ভয়ে আছি দিদি মনে হয় এত বড় ধাক্কাটা নিতে পারবেন না। ৯০ বছরের মানুষ তো বাবা, আমার মা উনি। পুরস্কার দেওয়া হত না তাও ঠিক আছে কিন্তু এভাবে অপমান মেনে নেবেন কী করে? তাঁর মতো শিল্পী পৃথিবীতে খুব কম। আমার আর কিছুই বলার নেই।”

দিন দুয়েক আগেই সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় নিজেই কথা বলেছিলেন টিভিনাইন বাংলার সঙ্গে। গলায় অসুস্থতার ছাপ ছিল স্পষ্ট। বলেছিলেন, “আমি ওঁদের জানিয়ে দিয়েছি, পদ্মশ্রী আমি অ্যাক্সেপ্ট করব না। সোজাসুজি বলেছি, মেরা দিল নেহি চাহতা হ্যায় (আমার মন চাইছে না)। ম্যায় নেহি লুঙ্গি (আমি গ্রহণ করব না)। আমাকে ওঁরা কারণ জিজ্ঞেস করেছিল। বলেছি, ওই একটাই কারণ, মেরা দিল নেহি চাহতা হ্যায়। আমার তো এতটা বয়স হয়েছে। ব্যাস, এই টুকুই জানিয়েছি। বাড়াবাড়ি আর কোনও কথাই বলিনি।”

এর পরেই বৃহস্পতিবার সকালেই গ্রিন করিডর করে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএমে। উডবার্ন ওয়ার্ডের ১০৩ নম্বর রুমে রাখা হয়েছে তাঁকে। চিকিৎসক সোমনাথ কুণ্ডুর তত্ত্বাবধানে গীতশ্রী চিকিৎসাধীন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত থেকে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে শিল্পীর। বুধবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ফোন করে শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ একাই বাথরুমে যান শিল্পী। তখন তিনি বাথরুমে পড়ে যান। তাঁর পায়ে চোট লাগে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে আরও। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। তখনই ফ্য়ামিলি ফিজিশিয়ান এসে তাঁকে দেখেন। সকালে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। এর পরেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরুন, আপাতত এই কামনাই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা তাঁর ভক্তদের।