মিষ্টি মুখ, গালে টোল পড়ে– নেপালি-কন্যা মণীশা কৈরালা যখন প্রথম বলিউডে আসেন রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছিল। একের পর এর হিট, নানা ধরনের ছবি, নিষ্পাপ চোখমুখ নিয়ে রীতিমতো রাজত্ব কররেন তিনি। কিন্তু ২০০২-এর পর থেকেই যেন উল্টে যায় সব হিসেবনিকেশ। প্রায় ২১ বছর পর এই নিয়ে মুখ খুললেন মণীশা। আর দক্ষিণের কেরিয়ার শেষ হওয়ার পিছনে দায়ী করলেন সুপারস্টার রজনীকান্তের ‘বাবা’কে।’বাবা’ একটি ছবির নাম। ছবির মুখ্য চরিত্রে দেখা গিয়েছিল রজনীকান্ত ও মণীশাকে। ছবির প্রযোজকও ছিলেন রজনীকান্ত। বড় বাজেট, অনেক আশা নিয়ে মুক্তি পেয়েছিল ছবিটি। সালটা ছিল ২০০২। ছবির বিষয়বস্তু ছিল অতিপ্রাকৃতিক। কিন্তু মুক্তি পাওয়ার পরেই দেখা গেল, ছবির বক্সঅফিসে ভরাডুবি। মণীশার কথায়, “সম্ভবত বাবাই আমার শেষ তামিল ছবি। ভীষণ বাজে ভাবে ফ্লপ করে গেল ছবিটা। মারাত্মক ভাবে ব্যর্থ হল। আমি ধরেই নিয়েছিলাম দক্ষিণে আমার কেরিয়ার শেষ হয়ে যাবে। আর হলও তাই।”
মণীশা আরও যোগ করেন, বাবাতে অভিনয়ের আগে দক্ষিণে অনেক অফার পাচ্ছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন বলিউডে সাম্র্যাজ্য বিস্তারের পর সেখানেও রাজত্ব করবেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে হল ঠিক তার উল্টোটা। ঘুরে দাঁড়াতে পারলেন না তিনি।গত বছর ওই ছবি আবারও মুক্তি পায়। রজনীকান্তের জন্মদিন উপলক্ষে মুক্তি পায় ওই ছবি। তবে অদ্ভুত ব্যাপার হল, সে সময় হিট না হলেও এত বছর পর ওই ছবি মুক্তি পেতেই হয়ে যায় হিট। আর তাতেই যেন অবাক মণীশা। তাঁর কথায়, “আবার মুক্তি পেতেই হিট হল। আসলে রজনী স্যর কখনও যে ফ্লপ দিতেই পারেন না।” ছবিতে রজনীকান্তের চরিত্রটি ছিল একজন নাস্তিকের। যিনি পরে আবিষ্কার করেন হিমালয়ের এক সাধুরই পুনর্জন্মের রূপ তিনি।
শুধু কি দক্ষিণে? সে সময় বলিউডেও দেখা গিয়েছিল একই অবস্থা। ২০০৩ থেকে সেখানেও কেরিয়ার পড়তে শুরু করে মণীশা। রামগোপাল ভার্মা ‘কোম্পানি’র পর থেকেই হিটের সংখ্যা কমতে থাকে। এরপর ২০০৪ সালে আচমকাই তিনি বলিউড ছেড়ে চলে যান নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেই ছবি পরিচালনার একটি ডিপ্লোমা কোর্স করেন। শুরু করেন ছবি প্রযোজনা। তারপরেও বেশ কিছু ছবি করেছেন মণীশা। দেখা গিয়েছেন নায়িকার চরিত্রেই। কিন্তু সেই ছবিগুলি সেভাবে মনে রাখেনি সিনেপ্রেমীরা। ২০০৭ সালে তাঁর একটিই মাত্র ছবি বের হয়। তা হল ‘আনওয়ার’। যদিও ওই ছবিতে নায়িকা নয়, তাঁকে দেখা গিয়েছিল পার্শ্ব চরিত্রে। এরপর যদিও ঋতুপর্ণ ঘোষ থেকে দীপ্তি নাভালের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। সমালোচকদের সে সব ছবি পছন্দ হলেও তা বক্স অফিস হিট দিতে পারেনি। তবে কাজ করা থামাননি তিনি। তাঁকে শেষ দেখা গিয়েছিল কার্তিক আরিয়ানের ছবি ‘শেহজাদা’তে।