সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শব্দ তার অর্থ পরিবর্তন করে। একটা সময়ে ‘মন্দির’ বলতে বোঝানো হতো সুরা পান করার গৃহ। সময়ের সাথে সাথে মন্দির শব্দটির অর্থ উৎকর্ষতায় হয়েছে দেব গৃহ। এরকম ভাবেই ‘পুরোহিত’ শব্দটির অর্থ পুরের হিত করেন যিনি। অর্থাৎ নগরের হিতার্থে কাজ করেন যিনি। সেই পুরোহিত শব্দটিও মানুষের মনে এখন অন্য ধারণা নিয়ে আসে। অনেক মানুষের ধারণা পুরোহিতরা শুধু মাত্র নিজেদের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বোঝে না। পুজোর নামে যজমানের রক্ত চোষাই তাদের একমাত্র কাজ। এই ধারণাকে ভ্রান্ত প্রমাণ করতে এবং সমাজের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এক অভিনব পন্থা নিল উত্তর কলকাতা ব্রাহ্মণ সমাজ। শিক্ষক দিবসের সকালে রবীন্দ্র সরনীর জয়মিত্র পার্কে উত্তর কলিকাতা ব্রাহ্মণ সমাজের পরিচালনায় হয়ে গেল একটি রক্তদান শিবির।
আয়োজকদের মতে পূরোহিরা সমাজের মানুষজনকে ধর্মীয় রীতি নীতি, সনাতনী পরম্পরা রক্ষা করার শিক্ষা দান করেন। তাই শিক্ষক দিবসকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সমাজের কাছে বার্তা দেওয়ার জন্য।
এই রক্তদান উৎসবকে ব্রাহ্মণ সমাজ থেকে নাম দেওয়া হয়েছে রক্তার্পণ উৎসব। নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী শ্রীমতী শশী পাঁজার বিবাহের সময়েও পুরোহিত গিয়েছিলেন এই ব্রাহ্মণ সমাজ থেকেই।
সেই কারণে আজকের এই অনুষ্ঠানে এসে আবেগপ্রবণ মন্ত্রী জানালেন এই ধরণের অভিনব প্রয়াস তাঁকেও সমৃদ্ধ করল । আর উত্তর কলকাতা ব্রাহ্মণ সমাজের সম্পাদক প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্য্য বলছেন রক্ত সংকটের সংকটমোচন এর দায়িত্ব তারা এই প্রথমবার তুলে নিলেন নিজেদের কাঁধে এর আগে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থেকেছে তাদের সংগঠন তাছাড়াও পুরোহিতদের প্রশিক্ষণ এবং বিভিন্ন পুজোর আগে পুরোহিতদের নিয়ে সেমিনার আয়োজন করে থাকে এই সংস্থা।
মন্ত্রী শশী পাঁজা উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে। তিনি বলেছেন শিক্ষক দিবসের দিনে আজকে এই ভিন্নধর্মী রক্তদান উৎসব মানুষকে একটা প্রেরনা দেবে। প্রসঙ্গত শশী পাঁজা নিজের বিয়ের সময়ে পুরোহিত যায় এই উত্তর কলকাতা ব্রাহ্মণ সমাজ থেকে।