Azadi Ka Amrit Mahotsav: কৃষি থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাতে স্বাধীন ভারতের সাফল্যের যাত্রা!

TV9 Bangla Digital | Edited By: megha

Oct 29, 2021 | 6:43 PM

আজ আমরা বিশ্বের মধ্যে জেনেরিক ওষুধ এবং ভ্যাকসিনের বৃহত্তম প্রস্তুতকারক। বিশ্বের জেনেরিক ওষুধের পাঁচটি বৃহত্তম প্রস্তুতকারকের মধ্যে দুটি হল ভারতের এবং এর মাধ্যমেই ভারত হয়ে উঠেছে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশ।

Azadi Ka Amrit Mahotsav: কৃষি থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাতে স্বাধীন ভারতের সাফল্যের যাত্রা!
আজাদি কা অমৃত মহোৎসব

Follow Us

স্বাধীনতার পর থেকে ভারত অর্থনীতিতে দারুণ সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু তার মধ্যেও ছিল কিছু ভুল। তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হল ১৯৯১ সালে যে অর্থনৈতিক উদারীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তাতে আগামী ৩০ বছরের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভিত্তি স্থাপিত ছিল। সেই সময় ওই অর্থনৈতিক সংস্কারসাধন গুলি তৎকালীন সরকারের সংস্কারবাদী আদর্শের প্রতীক ছিল না, যার ফলে বিদেশী ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য চন্দ্রশেখরের সরকারকে দেশের সোনা বন্ধক রাখতে হয়েছিল।

তবে এর আগে ভারতের অন্যান্য বড় সাফল্যের কথা আলোচনা করতে হবে। প্রথম হল সবুজ বিপ্লব এবং দ্বিতীয়টি শ্বেত বিপ্লব। ১৯৬০ সালে সবুজ বিপ্লব শুরু হলেও, শ্বেত বিপ্লব শুরু হয় ১৯৭০ সালে। দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দান করা খাদ্যের উপর নির্ভর করার পর, সবুজ বিপ্লবের মাধমে হাইব্রিড বীজ এবং সার সহ আমরা আধুনিক কৃষি কৌশলের ব্যবহার শিখি।

সবুজ বিপ্লবের সূচনা

১৯৬০ সালে সবুজ বিপ্লব শুরু হয়। এর ফলে হরিয়ানা ও পাঞ্জাবে সবুজ বিপ্লব ঘটে এবং এখান থেকেই ভারত খাদ্যশস্যে আত্মনির্ভর হয়। দুগ্ধ উৎপাদনেও এই পরিবর্তন ঘটেছিল। এই কারণেই স্বল্প দুধ উৎপাদনের দেশ থেকে আমরা সেরার তালিকায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। সমবায় দুগ্ধ উৎপাদন প্রচারের দ্বারা প্রায় সমস্ত রাজ্যই আমুল মডেল গ্রহণ করেছে এবং আজ ভারত বিশ্বের ২২ শতাংশ দুধ উৎপাদন করে।

১০০ বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি!

কিন্তু ১৯৯১ সালে গৃহীত নীতির ফলে খালি হয়ে যায় দেশের কোষাগার। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি ফলে, ভারতকে শুধুমাত্র লাইসেন্স পারমিট ব্যবস্থাই বাতিল করতে হয়নি, বরং সেই নীতিগুলিও বাস্তবায়িত করতে হয়েছে যা ১০ বছরের জন্য সফ্টওয়্যার এবং ফার্মাসিউটিক্যালের মতো রপ্তানিমুখী শিল্পগুলিতে করের ছাড় পেয়েছে। এই নীতিগুলি টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস, ইনফোসিস এবং উইপ্রোকে বিশ্বের বৃহত্তম কোম্পানিতে পরিণত করেছে। এর মধ্যে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (TCS) এবং ইনফোসিস (Infosys) এর মূল্য আজ ১০০ বিলিয়ন ডলার।

জেনেরিক ওষুধ এবং ভ্যাকসিনের বিশ্বের বৃহত্তম নির্মাতা

আজ আমরা বিশ্বের মধ্যে জেনেরিক ওষুধ এবং ভ্যাকসিনের বৃহত্তম প্রস্তুতকারক। বিশ্বের জেনেরিক ওষুধের পাঁচটি বৃহত্তম প্রস্তুতকারকের মধ্যে দুটি হল ভারতের এবং এর মাধ্যমেই ভারত হয়ে উঠেছে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশ। আজ আমরা কোভিড-১৯ এর ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে পেরেছে শুধুমাত্র এই কারণেই। ১৯৯১ সালের পর চালু হয়েছে দেশের প্রথম বড় প্রাইভেট ব্যাঙ্কও এবং এর মধ্যে অনেকগুলিই আজ বিশ্বের অন্যতম মূল্যবান ব্যাঙ্কের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। আগামী দশকে প্রায় সব ব্যাঙ্কই সম্পূর্ণরূপে ডিজিটালে পরিণত হবে। তারই সঙ্গে পেটিএম (Paytm), এয়ারটেল (Airtel) সহ বিভিন্ন ডিজিটাল ব্যাঙ্কগুলিও আরও উন্নতি পথে এগিয়ে যাবে।

টেলিকমিউনিকেশনের প্রসার

১৯৯১ সালে গৃহীত অর্থনৈতিক নীতির ফলে দেশে জন্ম নিয়েছিল টেলিকম বিপ্লবও। যদিও, সেই সময় এই পরিষেবা গ্রাহকদের জন্য বেশ ব্যয়বহুল ছিল এবং এর ফলে টেলিকম কোম্পানিগুলিরও বৃদ্ধির হার কমে গিয়েছিল। কিন্তু অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে সমাধান হয় সমস্যাটিও এবং এরপরেই দেশে টেলিফোন বিপ্লব ঘটে। আজ আমাদের দেশে ১১৮ কোটি মোবাইল কানেকশন (mobile connections) রয়েছে এবং শহরগুলিতে জনপ্রতি ১.৩ মোবাইল কানেকশন (mobile connections) রয়েছে। তবে আজ গ্রামীণ এলাকায় এই বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি, যেখানে টেলি-ঘনত্ব এখনও একের চেয়ে কম।

কিন্তু চিনের পর ভারত যেখানে বিশাল উন্নতি করেছে, তা হল ডিজিটালাইজেশন। আজ ভারত বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে, যেখানে গুরুত্ব পেয়েছে ডিজিটাল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। গত বছর, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার নাগরিকদের কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি পূরণের জন্য চেক পাঠাচ্ছিল, সেখানে ভারত মাত্র একটি ক্লিকের মাধ্যমেই লক্ষাধিক মহিলাকে তাঁদের জনধন অ্যাকাউন্টে ৫০০ টাকা করে পাঠাচ্ছিল।

শক্তিশালী পরিকাঠামো

উপরিক্ত গুলি ছাড়াও ভারতের আরও তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কৃতিত্ব অর্জন করেছে – যার মধ্যে দুটি বাজপেয়ী এর আমলে এবং একটি মনমোহন সিং আমলে ঘটেছিল। এগুলি শুরু হয়েছিল বাজপেয়ী এর আমলেই। তৃতীয়টি শুরু হয়েছিল ইউপিএ শাসনকালে। শক্তিশালী পরিকাঠামো ছাড়া ইউপিএ সরকারের অধীনে সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা সম্ভব হত না। ইউপিএ শাসনের ১০ বছরে মধ্যে ভারতের ইতিহাসে প্রথমবার কমে ছিল দারিদ্র।

এছাড়া সরকারি খাতেও কিছু বড় কৃতিত্ব অর্জন হয়েছে, যেগুলোর কথা আজ পর্যন্ত খুব একটা আলোচনা কর হয়নি। ইন্দিরা গান্ধীর দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার সঙ্গে শুরু হয়েছিল লৌহ আকরিক প্রকল্পও। যেখানে ভারত শিখেছে কীভাবে একটি নির্দিষ্ট খরচ এবং সময়ের মধ্যে বড় প্রকল্পগুলি সম্পূর্ণ করতে হয়। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হল কঙ্কন রেলওয়ে এবং দিল্লির মেট্রো।

১৯৯১ সালের পর আরও তিনটি বড় পরিবর্তন ঘটে!

শেয়ারের অর্থনৈতিক উদারীকরণ, ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা এবং শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি প্রতিষ্ঠা। এটি ভারতকে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল স্টক মার্কেটে পরিণত করেছে। দেশে করোনার প্রকোপ এবং ডিজিটাইজেশন এই অবস্থারও পরিবর্তন ঘটিয়েছে। ভারতে স্টার্ট-আপ সংস্থাগুলির জন্য এর চেয়ে ভাল পরিবেশ আর হতে পারে না, কারণ বাড়ি থেকে কাজ করা এবং অ্যাপ-ভিত্তিক পরিষেবাগুলি এখন জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

সামগ্রিকভাবে, ভারত কৃষি খাত থেকে শুরু করে পরিষেবা খাতে অনেক উন্নতি করেছে। মোদি সরকারের প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেনটিভ (Production Linked Incentives) স্কিম, যা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রচার করে, এটি কত বছরের মধ্যে কতটা প্রভাব ফেলতে পারবে এখন সেটাই দেখার বিষয়। অর্থনীতি এবং শিল্পায়নের দিক থেকে ভারতের গল্পটি অনন্য, কারণ এটি অতীতের ঘটনা এবং ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে উন্নতির দিকে এগিয়ে চলেছে।

আরও পড়ুন: সকালেই টুইট করেছিলেন, আচমকা হৃদরোগ, ৪৬-এ প্রয়াত ‘পাওয়ারস্টার’ পুনীত রাজকুমার

Next Article