Mrs Chatterjee vs Norway: ১২ বছর আগে নরওয়ে কেড়ে নেয় দুধের সন্তানকে, আসল ‘মিসেস চ্যাটার্জী’কে চেনেন?
Mrs Chatterjee vs Norway:জানেন কি, এই সিনেমা নেহাতই ফিকশন নয়, একেবারেই সত্য ঘটনা অবলম্বনে। ফিরে যেতে হবে ১২ বছর আগে। ঢুঁ দিতে হবে ভট্টাচার্য পরিবারের অন্দরে।
রানি মুখোপাধ্যায় ও অনির্বাণ ভট্টাচার্যের ছবি ‘মিসেস চ্যাটার্জী ভার্সেস নরওয়ে’র ট্রেলার ইতিমধ্যেই নিশ্চয়ই আপনি দেখে ফেলেছেন। সন্তানকে কাছে পাওয়ার জন্য একটা গোটা দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে জেহাদ ঘোষণা এক মায়ের। রানির তুখোড় অভিনয়শৈলী, ব্রেস্টমিল্ক পাম্প করে রাখার মতো করুণ ও অর্থবহ দৃশ্যে নিশ্চয়ই দ্রব হয়েছে আপনার চোখও? তবে জানেন কি, এই সিনেমা নেহাতই ফিকশন নয়, একেবারেই সত্য ঘটনা অবলম্বনে। ফিরে যেতে হবে ১২ বছর আগে। ঢুঁ দিতে হবে ভট্টাচার্য পরিবারের অন্দরে। ২০১১-তে এক বাঙালি দম্পতি ও তাঁদের দুধের দুই শিশুর সঙ্গে পরদেশে যা ঘটেছিল তারই তো ফিকশনাল রূপ এই ছবি। কী ঘটেছিল সে দিন? কী ঘটে অনুরূপ আর সাগরিকার সঙ্গে?
কেন কেড়ে নেয়?
২০১১, স্বামী ও দুই ছেলে মেয়ের সঙ্গে নরওয়েতে গিয়ে সংসার বেঁধেছিলেন সাগরিকা ভট্টাচার্য। কিন্তু নরওইয়ের শিশুসুরক্ষা কমিশন যাকে বার্নেভার্নেও বলা হয়ে থাকে হঠাৎই একদিন ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাঁদের কোলের দুই শিশুকে। তখন তাঁদের ছেলে অভিজ্ঞানের বয়স মাত্র ৩। আর মেয়ে ঐশ্বর্যা তখন এক বছরের, দুধ খাওয়াও ছাড়েনি সে। কী অভিযোগ ছিল কর্তৃপক্ষের? ছবির ট্রেলারে যা দেখানো হয়েছে ঠিক তাই। বাচ্চাকে হাত দিয়ে খাইয়ে দিতেন মা সাগরিকা… ওদিকে নরওয়ে কর্তৃপক্ষের মনে হয়েছিল, সন্তানকে হাত দিয়ে খাওয়ানো মানে তাকে জোর করে খাওয়ানো, একজন সুস্থ বাবা-মা নাকি এমনটা করতেই পারেন না। এখানেই শেষ নয়, তিন বছরের পুত্র সন্তান কেন তার বাবার সঙ্গে শোবে? কেন নেই তার আলাদা বিছানা– এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা। অভিযোগ ছিল, বাচ্চাদের জন্য নাকি ঘরে খেলার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এমনকি মা-বাবা খেলার জন্য তাদের যে খেলনা কিনে দিয়েছে তাও নাকি ঠিক নয়। সাগরিকার থেকে সন্তান কেড়ে নিয়ে রাখা হয়েছিল সরকারি হেফাজতে। বিদেশ মুলুকে একা লড়াই করেছিলেন তিনি। অনেক টানাপড়েনের পর ঘটনায় হস্তক্ষেপ করে ভারত সরকারও। তাও মন গলেনি নরওয়ে সরকারের। বাচ্চার বাবার ভাইয়ের অর্থাৎ কাকার কাছে দায়িত্ব ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। যদিও সেখানেও দেখা দেয় সমস্যা।
একে সন্তান হারানোর যন্ত্রণা, অন্যদিকে স্বামী-স্ত্রীর নিত্য ঝগড়ায় ততদিনে অনুরূপ ও সাগরিকাও আলাদা হয়ে গিয়েছেন। নিজের সন্তানদের দায়িত্ব ফিরে পেতে মা’কে আইনি পদক্ষেপ করতে হয়। এরপর আদালত, আদালতের চৌহদ্দি, চোখের জল আর দীর্ঘ লড়াই শেষে অবশেষে জিৎ হয় সাগরিকার। ২০১৩ সালে প্রায় দুই বছর লড়াইয়ের পর কলকাতা হাইকোর্ট মা’কে তাঁর দুই সন্তানের দায়িত্ব দেন। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন সাগরিকা। রাষ্ট্রের কাছে জয়ী হয় মায়ের মমতা, জয়ী হয় ভালবাসা, ভরসা, বিশ্বাস।